ছবি : ইন্টারনেট তুতুনের গল্পদাদু আবির চক্রবর্তী |
এক,
স্কুলটা আজ
তাড়াতাড়িই ছুটি হয়ে গেল তুতুনের।যাক বেশ ভালোই হলো।তাড়াতাড়িই বাড়ি ফেরা
যাবে।খেয়ে-দেয়ে আবার মাঠে খেলতে যাবে।আপন মনে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে হাঁটতে
লাগল সে।পাড়ার বড় মাঠটার কাছে আসতেই তুতুন দেখল,একজন মানুষ পরনে ছেঁড়া কাপড়,গাল ভরা দাড়ি।
রাস্তার ডাস্টবিন থেকে খুঁজে খুঁজে নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার গুলো বের করছে।দেখে
খুবই কষ্ট লাগলো তুতুনের।একটু খাবারের জন্য কত কষ্ট।
হঠাৎ তার মনে পড়ল
যে,আজকে বাড়ি থেকে
দেওয়া টিফিনটা তার ব্যাগেই রয়ে গেছে। সে খায়নি সেটা।সে দ্রুত তার ব্যাগ থেকে
টিফিন বক্সটা বের করে লোকটির দিকে এগিয়ে গেল। তারপর বক্সটা লোকটিকে দিয়ে বলল,"এই নাও দাদু,এই খাবারটা
খাও।ওগুলো ফেলে দাও।"লোকটা অবাক হয়ে অনেক্ষণ ধরে তুতুনকে দেখল।তারপর তার হাত
থেকে বক্সটা নিয়ে সেটা খুলল।দেখল তাতে রয়েছে কিছু খাবার।লোকটি হামলে পড়ল সেই
খাবারের উপর।কতদিন যে সে ভালো খাবার খায়না। খাওয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করল
তুতুন।
দুই,
খাওয়া শেষ করে লোকটি টিফিন বক্সটা তুতুনের দিকে এগিয়ে দিল।তুতুন বক্সটা নিয়ে ব্যাগে ঢুকিয়ে দিল।তারপর লোকটিকে জিজ্ঞেস করল,"তোমার পেট ভরেছে তো দাদু?" লোকটি বলল,"হ্যাঁ। বুঝলে দাদুভাই,খিদেটাকে গুলি করে উড়িয়ে দিলাম।যেমন করে আমাদের দেশের বীর সন্তানরা ইংরেজদের এ দেশ থেকে উড়িয়ে দিয়েছিল। তুমি জানো দাদুভাই,আমাদের দেশের কত মানুষ ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।" তুতুন বলল,"জানি তো দাদু।আমি বইয়ে পড়েছি।" লোকটা বলল,"বেশ, বেশ তুমি ওই কাছের বেন্ঞিটাতে বসো দাদুভাই।তোমায় একটা গল্প শোনাই।" তুতুন অবাক হয়ে বলল,"তুমি গল্প জানো দাদু?" লোকটি হেসে বলল,"জানি তো।অনেক গল্প জানি। তুমি শুনবে তো?" তুতুন খুশি হয়ে বলল,"শুনব।" তারপর কী একটা ভেবে লোকটিকে বলল," তাহলে,আজকে থেকে আমি তোমাকে গল্পদাদু বলে ডাকবো,ঠিক আছে?" লোকটি হেসে বললেন,"বেশ,তাই হবে দাদুভাই।" খুশি হয়ে গেল তুতুন। মনে মনে ভাবলো, আজ থেকে আর মাঠে খেলতে না গিয়ে,গল্পদাদুর কাছে গল্প শুনবে সে।টিফিনের খাবারটা ও রেখে দেবে সে দাদুর জন্য।।
No comments:
Post a Comment