1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Tuesday, October 24, 2023

পঞ্চম বর্ষ । প্রথম সংখ্যা । কার্তিক । ১৪৩০

   

সম্পাদকীয়
   
তরুণ চক্রবর্তী
সম্পাদক
             প্রতি বছরের মতো দ্বারে কড়া নাড়ছে বাঙালি জীবনের সবচেয়ে বড় উৎসব , দুর্গাপূজা । দেবীর মর্তে আগমন আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা ।প্রকৃতি সেজে উঠেছে আগমনীর সাজে। বাতাস বার্তা পাঠাচ্ছে , দেবীর পিতৃগৃহে আসার প্রতি মুহূর্তের সংবাদ । তার প্রতি পদক্ষেপে শোনা যাচ্ছে আগমনীর আগমন বার্তা । 
         "বইসই" তার পঞ্চম বর্ষের প্রথম সংখ্যাকে সাজিয়েছে শারদ সংখ্যা হিসেবে । ১৪৩০ । ঠিক পাঁচ বছর আগে , ১৪২৬ , শুরু হয়েছিলো বইসই-এর পদযাত্রা । দুজন মানুষের সাহিত্যকে ভালবাসা সম্বল করে । সেই দুজনই হয়তো এখনো প্রধান কাণ্ডারি ,কিন্তু সাহিত্যের এই তরণী আস্তে আস্তে পূর্ণ হয়ে উঠছে অসংখ্য যাত্রীতে । কেউ পাঠক , কেউ লেখক । তরণী এগিয়ে চলেছে আগামীর দিকে ।
         আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীর দুঃসময় আর কাটছে না । মহামারি শেষ হতে না হতেই চারিদিকে শুরু হয়েছে যুদ্ধ আর হত্যালীলা । দেবীর কাছে আমাদের একটাই প্রার্থনা , সারা বিশ্বে ফিরে আসুক শান্তি । 
      এবারের শারদ সংখ্যা সেজে উঠেছে সাহিত্যের সমস্ত শাখার বর্ণময় উপস্থিতি নিয়ে । আমাদের আশা এই শারদ অর্ঘ্য আপনাদের ভালো লাগবে । 
     সমস্ত লেখক ও পাঠককে ‘বইসই’ এর পক্ষ থেকে শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা । 
      নমস্কারান্তে 
    ধন্যবাদান্তে
     সম্পাদক
     'বইসই'
     

বোধিসত্ত্ব কথা

    দুর্গা শব্দের অর্থ যিনি দুর্গতি বা সংকট থেকে রক্ষা করেন। অর্থাৎ সংকট বা দুর্গতি থেকে তিনি রক্ষা করবেন এবং করেন বলেই তিনি দুর্গা। সংকট মোচনের জন্য তার অধিষ্ঠান হয়েছে তা কিন্তু নয়। শাস্ত্র পাঠ করলেই জানা যায়, দেবী দুর্গার আগমনই হয়েছে সময়ের প্রয়োজনে। যখন দেবালয়ে আসুরিক প্রবৃত্তি বেড়ে গিয়েছিল। মহিষাসুর দেবতাদের শান্তি বিনষ্ট করে দিয়েছিল সেইসময় দেবী দুর্গার আগমন ঘটে। হিন্দুশাস্ত্রে দেবী দশভুজা। ‘দশপ্রহরণধারিণী’। দুর্গার দশ হাতে দশ অস্ত্র।পুরাণ মতে, বিষ্ণু, শিব এবং অন্যান্য দেবতাদের তেজ থেকে জন্ম নেন দেবী দুর্গা। তারপরে তাঁর হাতে অস্ত্র তুলে দেন বিভিন্ন দেবতা। সেই অস্ত্র নিয়ে, বাহন সিংহের পিঠে চেপে তিনি যুদ্ধ করে মহিষাসুরের সঙ্গে। বধ করেন মহিষাসুরকে। এতো সবারই জানা। কিন্তু দেবী দুর্গার হাতে যে অস্ত্রগুলি থাকে তার আলাদা ব্যাখ্যা এবং অর্থ আছে। আমাদের অনেকেরই সেটা জানা নেই।
দেবী দুর্গার হাতে মুলত যেগুলি দেখা যায় সেগুলি হল ত্রিশূল, শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম, বজ্র, তীরধনুক, অগ্নি, সাপ, খড়্গ বা তলোয়ার।এতো সবারই জানা। কিন্তু দেবী দুর্গার হাতে যে অস্ত্রগুলি থাকে তার আলাদা ব্যাখ্যা এবং অর্থ আছে। আমাদের অনেকেরই সেটা জানা নেই।এবার জেনে নিন এগুলি কী অর্থ বহন করে।
ত্রিশূল: মা দূর্গার হাতে প্রধান অস্ত্র হিসাবে দেখা যায়  ত্রিশূল। ত্রিকাল দণ্ড স্বরূপ এই অস্ত্র মহাদেব দেবী দূর্গাকে প্রদান করেছিলেন। শাস্ত্র মতে, ত্রিশূল হল ত্রিগুনের প্রতীক। এই ত্রিগুন হল সতঃ রজঃ তমঃ।সত্ত্ব: গুন হল দেবগুন। অর্থাৎ, এই গুন নিরহংকার, ত্যাগ ও উচ্চ অলৌকিকত্বের প্রকাশ।  রজঃ গুন হল মনুষ্যকুল বা জীব কুলের গুন। অর্থাৎ, মানুষ যেমন শোক, লোভ, মায়া, মোহ, কাম, দুঃখ দ্বারা সর্বদা জর্জরিত থাকে। এই গুন জীবকুলের মায়া স্বরূপ। জীবনের মোহে আচ্ছন্ন করে রাখে চরাচরকে।তম: গুন হল রাক্ষস বা ঋণাত্বক শক্তির প্রকাশ। সব ধ্বংসের মূল হল এই গুন, ক্রোধ, লোভ, মিথ্যা, বিলাসিতা, প্রতারণা, চুরী, হত্যা ইত্যাদি অপরাধ মুলক কার্য।
শঙ্খ: শঙ্খ  থাকে দেবী দুর্গার বাম হাতে ।  ‘বরুণ দিলেন শঙ্খ’। শঙ্খ বা  শাঁখ জাগরনের,  সৃষ্টির প্রতীক।  যুদ্ধের সময় এর শব্দ যেমন শত্রুকে সতর্ক করে তেমন জাগরনী শক্তি হিসাবে কাজ  করে। সমগ্র পৃথিবীর সৃষ্টির শুরুতে জলমগ্ন ছিল, এবং প্রথম প্রাণের স্পন্দন জলের মধ্যেই ছিল। শাঁখ এক শ্রেনীর সামুদ্রিক জলজ শামুক গোত্রীয় প্রাণীর দেহ কোশ থেকে নির্মিত। তাই শাঁখ হিন্দু ধর্মে জগৎ সৃষ্টির প্রথম প্রাণের স্পন্দন স্বরূপ। দেবী দুর্গাই সমগ্র পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। তাই প্রাণ শক্তির উৎস হিসাবে তার হাতে শঙ্খ থাকে।
চক্র: ‘বিষ্ণু দিলেন চক্র’। দেবীর ডান হাতে থাকে চক্র। “সু” অর্থাৎ সুন্দর আর “দর্শন” অর্থাৎ দৃশ্যমান। ব্রহ্মাণ্ডের চেয়ে উজ্বল ও অপরূপ সৌন্দর্য্য আর কোথাও ব্যাখ্যা নেই। সুদর্শন চক্র হল সেই ব্রহ্মাণ্ডের প্রতীক স্বরূপ। যার কেন্দ্রবিন্দু থেকে সমস্থ তেজ শক্তি সঞ্চারিত বিচ্ছুরিত হয়ে চলেছে। ব্রহ্মাণ্ড ঠিক চক্রের মতো আবর্তন করে চলেছে কোন কেন্দ্র বিন্দুকে নির্ভর করে।দেবী প্রকৃতি স্বরূপা আদ্যাশক্তি। তিনি ব্রহ্মাণ্ড প্রসবিনী, তাই কাল বা সময় যার শূন্য ধাত্রে অবস্থান করে আছে ব্রহ্মাণ্ড তার নিয়ন্ত্রনকত্রী। অর্থাৎ কাল বা সময় এবং কাল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ব্রহ্মাণ্ড যার ধাত্রে বিকশিত জীব জগৎ তার মধ্যবর্তী হলেন দেবী দুর্গা যিনি আদ্যাশক্তির প্রকাশ ।
খড়্গ বা তলোয়ার -  দেবীর ডানহস্তে থাকে খড়্গ  বা তলোয়ার। যা হল বলিপ্রদানের অস্ত্র। বলি হল, বিবেক বুদ্ধির মধ্যে নিহিত অশুভের নিধন যজ্ঞ। হিংসা, গ্লানি, ক্রোধ, অহং সহ ষড় রিপু থেকে নিজের আত্মশক্তিকে পরিশুদ্ধির প্রক্রিয়া। এটা মানুষের বুদ্ধির প্রতীক। যা জোরে মানুষ সব বৈষম্য এবং অন্ধকার মোচন করে।  এটি ‘মগজাস্ত্র’ বা তীক্ষ্ণ বুদ্ধির প্রতীক। যার ধার দিয়ে মানুষ সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে লাভ করে চরম মোক্ষ। 
কালদণ্ড: গদা বা কালদণ্ড মহামায়াকে প্রদান করেন স্বয়ং ধর্মরাজ যম। গদা বা কালদন্ড হল মহাপ্রীতি, ভক্তি,  ভালোবাসা ও আনুগত্যের প্রতীক। কাল বা সময়ের নিকট আমরা অনুগত। কালকে শ্রদ্ধা করা হয়, তাই যম কতৃক প্রদত্ত এই অস্ত্র দেবী দুর্গার প্রতি উদ্দেশ্যে মহাপ্রীতি ও আনুগত্য প্রকাশ করায়।
তীর ধনুক: তীর ও ধনুক থাকে দেবী দুর্গার বাম হস্তে। পবনদেব  দেবী দুর্গাকে ধনুর্বাণ প্রদান করেন। ধনুর্বাণ স্থির লক্ষ্য আর ঋণাত্বক শক্তির প্রতীক। তীর ধনুক ইতিবাচক শক্তির উৎস।  মানুষের ভিতরে যে অন্তর্নিহিত শক্তি আছে তাই বহিঃপ্রকাশ ঘটে ধনুকের টঙ্কারের মাধ্যমে।
নাগপাশ: দেবী দুর্গার বাম হস্তের নিচের দিকে নাগপাশ থাকে। নাগপাশ বিশুদ্ধ চেতনার প্রতীক। চেতনার নিম্নস্তর থেকে উচ্চ চেতনার যে  আত্মপ্রকাশ তারই প্রতীক এই নাগপাশ।
বজ্র: বজ্রাস্ত্র দেবী দুর্গাকে প্রদান করেন দেবরাজ ইন্দ্র। দেবীর বাম হস্তে থাকে বজ্র। যা কঠোর ও সংহতির প্রতীক। আমাদের চরিত্রের ও ব্যবহারীক জীবনে কঠোরতা প্রয়োজন। আর সংহতি পূর্ণ সমাজ জীবন সব মানুষের কাম্য।
পদ্ম: দেবী দুর্গাকে পদ্ম, অক্ষমালা, কমন্ডলু প্রদান করেন ব্রহ্মা। পদ্ম পাঁকে জন্মায় তবুও সে পবিত্র। সেরকম আলো থেকে অন্ধকারে উত্তরনের পথের প্রতীক হল পদ্ম। জীব জগৎ সৃষ্টির সঙ্গে প্রস্ফুটিত পদ্মের তুলনা করা হয়েছে। হিন্দুশাস্ত্রের সমস্থ দেবদেবীদের অধিষ্ঠান প্রস্ফুটিত পদ্মের উপর, সর্ব শক্তির আধার পদ্ম। এছাড়া দেবীর দক্ষিণ হস্তে থাকে অক্ষমালা ও কমন্ডলু যা পবিত্রতার প্রতীক।
ঘন্টা: দেবীর বাম হস্তে ঘন্টা থাকে। ঘন্টা অস্ত্রটি দেবী চন্ডিকে দেবরাজ ইন্দ্রের বাহন ঐরাবত প্রদান করেন। ঘন্টা ডঙ্কার ধ্বনি যুদ্ধের আহ্বান করে। ঘন্টা আসুরিক শক্তিকে দুর্বল করে।ঘন্টার ধ্বনি অস্তিত্ব প্রমান করে। এছাড়াও তাঁর হাতে থাকে অগ্নি বা তেজ। এটা মানুষের জ্ঞান এবং বিদ্যার প্রতীক।  (সংগৃহীত)



সূচিপত্র

লেখা পড়তে ক্লিক করুন
ধারাবাহিক (গল্প) 
ধারাবাহিক (সুস্বাস্থ) 


কবিতা

বড়গল্প
 গল্প 
ছোটগল্প


অণুগল্প


প্রবন্ধ
সুস্বাস্থ


কিশলয়
(ছড়া)
কিশলয়
(কবিতা)
কিশলয়
(গল্প)
কিশলয়
(ছোটগল্প)
ভ্রমণ 
পাঠ-প্রতিক্রিয়া


No comments:

Post a Comment