![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
আলাপচারিতা
পারমিতা মন্ডল
দুপুরবেলা হঠাৎ দেখা দুজনের। গ্ৰীষ্মকাল। তবে অবশ্য আজকাল কখন কোন ঋতু বোঝা মুশকিল। সূর্য মধ্য গগনে যেন রাগে ফুঁসছে। চারিদিকে থমথমে ভাব। দূর দূরান্ত অব্দি গাছপালার দেখা নেই। যে কজন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে প্রায় সবাই এ সি গাড়ি করে। এই ভর দুপুরেও আকাশে যেন ধোঁয়াশার মতো কিছু একটা দেখা যায় ইদানিং। কে কেমন আছে জিজ্ঞেস করতে করতেই শুরু হলো আলাপচারিতা।
- চারিদিকে সবকিছু কেমন যেন পাল্টে গেছে। আগের মতো পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ নেই। রাস্তাঘাটে মানুষজনও কম মনে হয়। আবার আমাদের বাসস্থানের পরিধিও ক্রমশঃ ছোট হয়ে আসছে। এমন পরিবর্তন হচ্ছে যে কিছু ভাল লাগছে না।
- হ্যাঁ, তুমি ঠিকই বলেছ। পৃথিবীর উষ্ণায়ন বাড়ছে ক্রমশঃ। আগের দিনের মতো শীতল ছায়া নেই। গাছ গাছালি তো প্রায় শেষ। জলও কী উষ্ণ লক্ষ করেছ?
- আমার তো খুব কষ্ট হয়। নিশ্বাস প্রশ্বাস আটকে যাওয়ার জোগাড় হয় মাঝে মাঝে। জলস্তর এতো নেমে গেলে আর কী করার আছে বলো তো!
- আমরা আর কী করব! আমাদের তো আর কিছু করার নেই। আসলে আজকাল কেউ আমাদের কথা ভাবে না।
- হুঁ, ভাল বললে! আমাদের কথা তো দূর অস্ত নিজেদের কথাই বা কে কবে ভাবলো! সবচেয়ে উন্নত জাতি নাকি তারা। তার কোনো পরিচয় পেয়েছ? বোকাদের দল! যদি আগে থেকেই নিজেদের ভাল বুঝতো তাহলে আজ এইরকম পরিস্থিতি হতো গো?
- হক কথা বলেছ ভায়া। দেখা যাক এইভাবে কতদিন চলে। মনুষ্য জাতির, আমাদের তথা সমগ্র বিশ্বের কী সংকটকাল এসে পড়লো বলো দেখি। যাই, দেখি কোনো খাবার পাই কিনা। এভাবেই তো বেঁচে থাকার লড়াইটা জারি রাখতে হবে।
- হ্যাঁ গো, আমিও যাই। একদিন তো ছটফট্ করে মরা কপালে লেখাই আছে। তার আগে যে কদিন...
এই বলে লেজ নাড়াতে নাড়াতে যে যার রাস্তা ধরলো রুই কাতলা।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment