ছবি : ইন্টারনেট |
সেক্স এডুকেশন
ডাঃ সুখময় বারিক
সেক্স এডুকেশন মানে যৌন শিক্ষা। যৌন শিক্ষা নিয়ে কথা বলা এখনও নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হয়।অথচ সমাজের এই ছুত মার্গের বলি হচ্ছে বাড়ির ছোট ছোট মেয়েরা।
কিছু বছর হলো চেম্বার এ অবিবাহিত মেয়ের প্রেগন্যান্সি এর সংখ্যা টা বেড়ে গেছে। কিন্তু চিন্তার ব্যপার হলো আগে যে বয়সের অবিবাহিত মেয়েরা প্রেগন্যান্সি নিয়ে চেম্বার এ আসত তারা সাধারণত কলেজে পড়ত। এখন এই অবিবাহিত ম্প্রেগনেন্ট মেয়েদের ম্যাক্সিমাম সংখাটাই স্কুল এ পড়ে। এমনও দেখেছি যে মেয়ের প্রথম মাসিক শুরু হবার আগেই প্রেগন্যান্সি চলে এসেছে।
সমস্যা হলো বেশির ভাগ মায়েরা ভেবে থাকেন আমার মেয়ে ওসব করবে না। অথচ এখন কার সময়ে এই ধারণা টা একেবারে ভুল । মোবাইল ফোন, বন্ধু বান্ধব এর থেকে বাড়ির অপরিণত মেয়েটি রোজ ভুল ইনফরমেশন পাচ্ছে। তারপর নিজেরই অজান্তে না জেনে না বুঝে ফাঁদে পা বাড়িয়ে ফেলছে। বাড়ির বড়রা এর জন্য কত টা অংশে দায়ী তার দুটো ঘটনা বলি। এর থেকে আরও অনেক খারাপ কিছু ঘটনা দেখেছি। সে গুলো সোশ্যাল মিডিয়া তে বলা যাবে না। এসব দেখলে মনে হয় সত্যিই আমরা আদম আর ইভ এর বংশধর।
এক স্কুল শিক্ষিকা তার ১৭বছর এর মেয়ে কে নিয়ে হাজির পেটে ব্যথার জন্য। ইউএসজি করে জানা গেলো পেটে বাচ্চা আছে। শিক্ষিত মা জানাল মেয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল, সেখানে থেকেই খারাপ হাওয়া লেগে গেছে। মেয়ের কোন ভাবেই বাচ্চা আসতে পারে না। গ্রামে নাকি এমন হয়, গুনিন রা এসে ফুঁ দিয়ে ভালো করে দেই। যাই হোক আমি আর কথা না বাড়িয়ে OT তে ফুঁ দিয়ে দিয়েছিলাম, মানে abortion করেছিলাম। পরে মেয়ে টির কাছে জেনেছিলাম ওই খারাপ হাওয়া টি হলো গ্রামের নিজের কাকু। যে টুকু সময় পেয়েছিলাম মেয়ে টিকে বুঝিয়েছিলাম।
আর এক lawyer দম্পতি তার ১৪ বছর এর প্রেগন্যান্ট মেয়ে কে নিয়ে হাজির। মা এর ধারনা মেয়ে পুকুরে স্নান করতে গিয়ে প্রেগন্যান্ট হয়েছে। মা কে বোঝানোর চেষ্টা করলাম পুকুরের জলে এত স্পার্ম ঘোরে না যে মেয়ে প্রেগন্যান্ট হয়ে যাবে। বুঝলোনা দেখে আমি চেপে গেলাম, কোথাই না আবার আমার উপরেই মানহানির মামলা ঠুকে দেই। ১৬ বছর এর নিচে সেক্স কে রেপ বলে মানা হয় বলে , আমি উনা দের কে সরকারি হাসপাতাল এ রেফার করেছিলাম। এখানে কার স্পার্ম পুকুরের জলে মিশে ছিল সেটা অজানাই রয়ে গেল।
এই দুটো ঘটনা দেখিয়ে দিল নিজে শিক্ষিত মা হয়েও মেয়েকে ঠিক সময়ে শিক্ষা দিলে আজ এই অবস্থার সম্মুখীন হতে হতো না। আর শুধু তো প্রেগন্যান্সি নয়, Venereal disease ( HIV, Hepatitis, syphilis) এও মেয়েটি আক্রান্ত হতে পারে।
পুরনো ধ্যান ধারণা সরিয়ে রেখে মেয়েকে বাড়িতে অল্প অল্প করে শিক্ষা দিন। নয়তো কোনদিন খারাপ হাওয়া লেগে যাবে, তখন আবার ডাক্তার এর চেম্বার এ যেতে হবে ফুঁ নিতে।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment