1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Saturday, October 21, 2023

আলাপি হানা

ছবি : ইন্টারনেট 

আলাপি হানা

সুতপা ব‍্যানার্জী(রায়)

নতুন চাকরির আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে শ্বেতার মনে ভয়ও কাজ করছে। প্রধান শিক্ষিকা লতিকা সাহার আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্কুলের চাকরিতে যোগ দিতে তো যাচ্ছে, কিন্তু স্কুলটা তো একটা গণ্ডগ্রামে। শহুরে জীবনে অভ‍্যস্থ শ্বেতা ওখানে থাকতে পারবে কিনা তা নিজেই জানে না। এদিকে ও ওর বাপি মামণিকে তো বেশ করে বুঝিয়ে এসেছে যে ওখানে থাকতে ওর কোন অসুবিধে হবে না। তবে নিজের মনের বল ভরসা কমে আসছে যেন। চিরদিনের ডে স্কুল ডে কলেজ করা শ্বেতা যাচ্ছে মর্নিং স্কুলের চাকরিতে। ভোর পাঁচটার বাস ধরে বাঁকুড়ায় এসে এবার কেঞ্জাকুড়া যাওয়ার জন্য মাচান তলা থেকে ছাতনার বাস ধরবে। বাসের মধ্যে একটা মিষ্টি বাচ্ছা ওর সঙ্গে ভাব জমালো। নামার কিছুক্ষণ আগে বাচ্ছাটার মা শ্বেতাকে জিজ্ঞেস করল-"তুমিও ছাতনায় নামবে?"

"হ‍্যাঁ, আমিও নামব।"

"তারপর কোথায় যাবে?"

"কেঞ্জাকুড়া গার্লস স্কুলে।"

"আরে আমিও তো ওখানেই যাব,চল নেমে আমরা এক রিক্সাতেই চলে যাব।"

শ্বেতা এই প্রস্তাবে হাতে চাঁদ পেল। যাক এই অজানা অচেনা জায়গায় কেউ একটা চেনা হল। রিক্সায় যেতে যেতে আলাপ আরো এগিয়ে চলল। বাচ্ছাটাও খুব মিশুকে। ও আদুরে গলায় বলল-"আমি তানি,তোমার নাম কী?"

"শ্বেতা,তোমার একজন নতুন মাসি।"

"আমার মাও ঐ স্কুলের টিচার। তুমিও পড়াতে যাচ্ছ?"

"হ‍্যাঁ তো ভালোই হল।"

"আমার মা তোমার কাকলিদি হবে। আমার মা বাংলা পড়ায়? তুমি কী পড়াবে?"

"জীবনবিজ্ঞান,তোমার পড়তে ভাল লাগে?"

"আমার মায়ের সঙ্গে থাকতে ভাল লাগে। আজ আমার ছুটি,তাই তো মায়ের সঙ্গে যাচ্ছি।"

কথা বলতে বলতে এসে গেল ওদের সবাইয়ের গন্তব্য। বরাবর যে স্কুলে পড়ে এসেছে শ্বেতা,সেখানে পাঁচিল ছিল,সুন্দর বাগান দিয়ে ঘেরা ছিল স্কুল। কিন্তু ও এখন চোখের সামনে যে স্কুল দেখছে সেখানে না আছে কোন পাঁচিল,না আছে বাগান। সবুজ ঘাসে কতকগুলো গরু, ছাগল চড়ে বেড়াচ্ছে। একটা একতলা বাড়ি দেখে শ্বেতা জিজ্ঞেস করল-"এটাই গার্লস স্কুল?"

"হ‍্যাঁ, এই স্কুলেই তুমি যোগ দেবে।"

শ্বেতা কী আর করে,এখন তো ফেরার উপায় নেই।

সবুজ ঘাসে পা ডুবিয়ে স্কুলের অফিসে গিয়ে লতিকাদির সঙ্গে দেখা করে যোগ দিল। স্টাফরুমে

বসা ও বিশ্রামের ব‍্যবস্থা আছে। দেওয়ালে টাঙানো রুটিন থেকে নিজের ক্লাসগুলোর সময় টুকে নিল।

কাকলিদি অন‍্য সব শিক্ষিকাদের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল। শ্বেতার মনে হল স্কুলটা ডে স্কুল হলে বাড়ির থেকে যাতায়াত করার চেষ্টা করত। মর্নিং যখন তখন স্কুল মেসেই থাকতে হবে। টিফিনের সময় বাড়ির থেকে আনা খাবার খাবে বলে বেসিন খুঁজতেই কাকলিদি বলল-"বাইরে টিউবওয়েল আছে,ওখানেই হাত ধুতে হবে,খাওয়ার জলও ওখান থেকেই আনতে হবে।" একটু থমকালেও ওখান থেকেই হাত ধুয়ে এল শ্বেতা। একটা জিনিস ওর খুব ভাল লাগল,ছাত্রীরা প্রায় সকলেই মনোযোগী ও পড়তে ইচ্ছুক। স্কুলের শেষে কাকলিদি বলল-"চল মেসে যাই,তোমাকেও তো ওখানেই থাকতে হবে।"

"এখানের সবাই কি মেসে থাকে?"

"না,মোট ছ'জন থাকে,তুমি হলে সাত হবে। দুজন কাছেই থাকে আর লতিকাদি মেসের খুব কাছে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন।"

"আচ্ছা,চলুন তাহলে আপনার সঙ্গেই যাই।"

শ্বেতা তানির হাত ধরে কাকলিদির পাশে পাশে চলল।

মেসে পৌঁছোলে ওকে ওর ঘর দেখিয়ে দেওয়া হল। ওর একটা ঘর পরেই কাকলিদির ঘর। মেসের রান্নার দিদি বীণা খুব ভাল রান্না করে,তা শ্বেতা রাতের খাবার খেয়ে বুঝল। যাক,মায়ের রান্না খেতে না পারার আফসোস রইল না। অনেকক্ষণ লন্ঠনের আলোয় থেকে শ্বেতা বীণাকে জিজ্ঞেস করল-"বীণাদি কারেন্ট আসবে কখন?"

"এই মেসে কারেন্ট নেই তো।"

"মানে?"

"মানে এখনো পর্যন্ত নেই,চেষ্টা চলছে,ভবিষ্যতে আসবে হয়তো।"

মেসবাড়িটা টিনের চালের মাটির কোঠা বাড়ি। নতুন জায়গায় আসার উত্তেজনায় শ্বেতা খেয়ালই করেনি যে ঘরের কোথাও সুইচ বোর্ড নেই। টর্চ হাতে নিজের ঘরে ঢুকল শ্বেতা। বীণা পেছন পেছন এসে একটা কূপি রেখে গেল ওর ঘরে। ধপ করে ঘরের চৌকিতে বসে পড়ল শ্বেতা,এবার কী হবে?ওর তো খুব ভূতের ভয়। রাতে বাথরুমে যেতে হলেও ঐ কূপি হাতে করে যেতে হবে। হঠাৎ নজরে এল ঘরের মধ‍্যে একটা ছোট কুঠুরি ধরণের কিছু। আলো আঁধারিতে নিজের ছায়া দেখেই তো ও ভয় পাচ্ছে। ঐ কুঠুরি তো নিকষ অন্ধকার। লজ্জায় অন‍্য কারুর ঘরেও যেতে পারছে না। ও যে ভীতু সেটা সবাই জেনে যাবে। কূপি জ্বালিয়ে রেখে কোনমতে শুয়ে চোখ বুজল ও। সামান্য তন্দ্রা ভাবের মধ্যে ঘরে কারুর চলাফেরা করার আওয়াজ পেল। দেওয়ালের আলো ছায়ায় মনে হল দুটো ছায়া দেখছে। বালিসের তলা থেকে হাতড়ে টর্চটা বার করে জ্বালালো। টর্চের আলোও ম্রিয়মাণ লাগছে,মনে হয় ব‍্যাটারি ডাউন হয়ে গেছে। সকাল হলে ব‍্যাটারি কিনতে হবে। ভোর না হওয়া অব্দি শ্বেতা রাম নাম যপ করতে করতে জেগে রইল। সকাল সকাল স্কুলে গিয়ে লতিকাদির হাতে ইস্তফা পত্র ধরিয়ে দিয়ে শ্বেতা বলল-"আমি আর এখানে চাকরি করতে চাই না। আজই চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি।"

"কেন কী হল?"

"মেসে ইলেক্ট্রিসিটি নেই আমি জানতাম না। এভাবে দিনের পর দিন থাকতে পারব না।"

লতিকাদি দরজার বাইরে দাঁড়ানো দুই ছাত্রীকে ভেতরে আসতে বলে বললেন-"এই দেখো,তুমি একদিনেই ওদের মন জয় করে নিয়েছো। ওরা তোমায় ছাড়বে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইলেক্ট্রিসিটির ব‍্যবস্থা করছি।"

আশ্বাস পেয়ে শ্বেতা থেকে গেল। ঐ দিন মেসে ফিরে শ্বেতা দেখল ওর ঘরে একটা অচেনা মেয়ে। ওর জিজ্ঞাসু দৃষ্টি দেখে মেয়েটা বলল-"আমি আরশি,দোতলায় থাকি। আগে এ ঘরটা আমার ছিল। অভ‍্যাস বশে মাঝে মাঝে চলে আসি। তুমি তো শ্বেতা?

ঠিক আছে আজ যাই,মাঝেমধ্যে তোমার সঙ্গে দেখা হবে।"

শ্বেতা ঘাড় নেড়ে সায় দিয়ে বাইরের জামাকাপড় ছেড়ে বীণাকে চা দিতে বলে ছাত্রীদের খাতা দেখতে বসল। খাতা দেখতে দেখতে চোখ লেগে যেতে খাটে শুতেই ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুম ভাঙতে দেখল সারা ঘর অন্ধকার। বীণা আলোর কূপিটাও দিয়ে যায়নি। হঠাৎ কোণের ঐ কুঠরিটার দিকে তাকিয়ে ওর হাড় হিম করা দশা হল। ওখানে বাঁশের মাচায় কাকে যেন একটা শোয়ানো রয়েছে। ঐ নিশ্চল শরীরটার এলো চুল চারপাশে ছড়িয়ে আছে। গলা দিয়ে আওয়াজ বার করতে চেয়েও চিৎকার করতে পারছে না শ্বেতা।

ওর ঐ গোঙানির আওয়াজ শুনেই একটা লন্ঠন নিয়ে এসে বীণা হাজির হতেই শ্বেতা আঙ্গুলের ইশারায় কুঠরিটাকে দেখিয়ে বলল-"ও কে? কাকে ওখানে শোয়ানো রয়েছে।"

বীণা বলল-"কোথায় কে? কেউ কোত্থাও নেই,ও তোমার মনের ভয়।"

এর কিছুক্ষণ পরে আরশি এল ওর ঘরে,ও এলেই শ্বেতা কেমন ডেটলের গন্ধ পায়। মেয়েটা কেমন অদ্ভুত। শ্বেতা ওকে বলেই বসল-"আচ্ছা, তোমায় স্কুলে দেখি না তো।"

"আমি তো ডে সেকশনের তাই দেখতে পাও না,

আর এই তো আমি তোমার সঙ্গে মাঝে মাঝে দেখা করে যাই।"

"তা বেশ কর।"

"তুমি কী ভয় পাও।"

"কেন? তুমি কী করে জানলে?"

"কিছুক্ষণ আগে তোমার চিৎকার শুনলাম মনে হল।"

"হ‍্যাঁ, এমন এমন কিছু জিনিস ঘটছে যে একটু ভয় পাচ্ছি।"

"ঠিক আছে আমার সঙ্গে একদিন ঘুরতে নিয়ে যাব,তোমার সব ভয় কেটে যাবে।"

"যাব তোমার সঙ্গে।"

এরপর স্কুলে পরপর তিনদিন ছুটি থাকায় শ্বেতা ওর বাড়ি আসানসোলে গেল। বাবা'মা,বোন খুব খুশী। মা প্রমা বললেন-"আর ফিরে যেয়ে কাজ নেই,এখানেই কোথাও চাকরির চেষ্টা কর, পেয়ে যাবি।"

"দেখি কী করি"

দুদিন পার হতেই আরশির ফোন এল। ফোনটা ধরে শ্বেতা অবাক হল। ও তো আরশিকে ওর ফোন নম্বর দিয়ে আসেনি,তাহলে? নিশ্চয়ই লতিকাদির কাছে নিয়েছে হবে। ও দিকে আরশি বলতে শুরু করেছে-

"তুমি চলে গেলে কেন? এখানে মেলা লেগেছে,দুজনে মিলে ঘুরতাম।"

"তুমি বাড়ি যাও নি?"

"বাড়ি গিয়ে কী করব? তুমিও ফিরে এসো।"

"ঠিক আছে,আগামীকাল আসছি।"

শ্বেতার মা ওদিকে চিৎকার করছেন-"থাকবি বলে এসে ছুটি শেষের আগেই চলে যাবি। একদম যেতে হবে না,যাবি না বলে দে।"

শ্বেতা কাচুমাচু হয়ে বলল-"বিদেশ বিভুঁইয়ে আরশিই আমার খেয়াল রাখে। এত করে বলছে,যাই না মা। নতুন চাকরি না পেয়ে এ চাকরি তো ছাড়াও যাবে না। তুমি চিন্তা কোর না,কাল যাই আবার সামনের সপ্তাহে আসব।"

পরদিন আরশি মেসে ফিরে দেখল বাকিরা কেউ ফেরেনি। দোতলায় আরশি যে ঘরে থাকে বলেছিল সেটাও তালা বন্ধ। বীণা ছিল না,শ্বেতা ফিরেছে খবর পেয়ে দুপুরে এসে ভাতেভাত করে দিয়ে গজগজ করতে লাগল-"ছুটি আছে ফিরে এলে কেন? আমাকেও ফিরতে হোলো।"

"কেন আর কেউ নেই?"

"আবার কে থাকবে?"

শ্বেতা খুব অবাক হল,আরশি বাড়ি যায়নি বলল,তাহলে ও কোথায়? ভাত খেয়ে ভাতঘুম দিয়ে যখন উঠল শ্বেতা সূর্য তখন পশ্চিম দিগন্তে ঢলেছে। মুখে চোখে জল দেবে বলে ও উঠতেই দেখল আরশি পাশে বসে আছে। শ্বেতা অবাক হয়ে বলল-"তুমি এখানে ছিলে? তবে বীণা যে বলল.."

ওকে থামিয়ে দিয়ে আরশি বলল-"তুমি আসোনি তাই দুদিন পুরুলিয়ার জঙ্গল থেকে ঘুরে এলাম।"

শ্বেতা বলল-"ও,আচ্ছা তোমায় একটা কথা জিজ্ঞেস করব,তুমি কি ডেটল মাখো?"

"কেন তোমার গন্ধটা ভাল লাগে না? আমার তো বেশ ভাল লাগে। মাখতে মাখতে অভ‍্যাস হয়ে গেছে।"

"সেন্ট না মেখে ডেটল,এ কেমন অভ‍্যেস?"

"ওসব ছাড়ো তো,চল একটু বেড়িয়ে আসি।"

"চল,আমারও মাথাটা ধরেছে,হাওয়ায় মাথাটা ছাড়বে।"

দুজনে পথের পাশের ঝোপঝাড়, জোনাকির মিটমিটে আলোর মধ্যে দিয়ে চলল। পথটা মনে হচ্ছে ওদের স্কুলের দিকে গেছে। শ্বেতা বলল-"আমরা কোথায় যাচ্ছি?"

"চল আমাদের স্কুল বাড়িতে যাই। ওখানে ছাদ থেকে গোটা গ্রাম,আকাশ, আকাশের তারা খুব ভাল লাগে।"

এমন অদ্ভুত প্রস্তাবে অবাক হলেও শ্বেতা আরশির পেছন পেছন চলতে চলতে বলল-"যাচ্ছ যে চাবি কোথায় পাবে?"

"লতিকাদি আমার কাছে দিয়ে রেখেছেন, আছে আমার কাছে চল।"

দুজনে সন্ধ‍্যে নামা ফাঁকা স্কুল বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠে এল। কার্নিশ ধরে ওরা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে, আকাশের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে শ্বেতা। ও হঠাৎ দেখল পাশে আরশি নেই। "আরশি" "আরশি" করে ডাকতেই কান ফাটানো ভুতুড়ে হাসি আশেপাশের জঙ্গলে প্রতিধ্বনিত হতে শুরু হল। শ্বেতা নামতে যেতেই কে যেন ওকে বাধা দিচ্ছে। ও চেঁচাচ্ছে-"আমাকে ছেড়ে দাও।"

প্রতিধ্বনিত উত্তর পেল-"আমার জায়গা দখল করেছিস,তোকে ছেড়ে দেব,হা হা হা।"

শ্বেতা সমস্ত শক্তি এক করে নেমে এসে ছুটতে ছুটতে গ্রামের ঠাকুর দালানে এসে আছড়ে পড়ল। ও যখন চোখ খুলল তখন দেখল ওকে ঘিরে বাকি শিক্ষিকারা বসে আছে। চোখ খুলেই ও বলল-"আরশি কোথায়?"

সবাই মুখচাওয়াচাওয়ি করে উত্তেজিত হয়ে বলল-"আরশি?"

"হ‍্যাঁ, ও তো ছিল আমার সঙ্গে স্কুলের ছাদে কিন্তু পরে ও যেন কেমন হয়ে গেল তারপর আমার পেছনে তাড়া করল।"

"আরশি তো মারা গেছে তিনমাস হয়ে গেল। ঐ ভ‍্যাকেন্সিতেই তো তুমি এসেছো।"

"সেকি! তাহলে এতদিন কে আমার ঘরে আসত?"

"এ তো অকল্পনীয় ব‍্যাপার,তুমি তো আরশির আত্মাকে দেখেছো। ও স্কুলকে বড় ভালোবাসত,ছুটিতে বাড়ি যেতে চাইত না। ছাত্রীদের ডেকে মেসে পড়াতো। বাড়াবাড়ি জন্ডিসে পনেরো দিন বাঁকুড়া হাসপাতালে ভর্তি থেকে মারা গেছে।"

"তাই হাসপাতাল হাসপাতাল গন্ধ পেতাম ও কাছে এলে।"

"খুব কপাল জোরে বেঁচে গেছো, ও ওর জায়গায় তোমার উপস্থিতি মেনে নিতে পারেনি।"

"এতে আমার কী দোষ?"

"যে রহস্য কেউ জানে না তার দোষগুণের ব‍্যাখ‍্যা আমরা কীভাবে দেব?"

ভিড় ঠেলে শ্বেতার বাবা সামনে এসে বলল-

"মা তোর কী হয়েছে?এখানে এসে কীসব শুনছি?"

"বাপি,তুমি হঠাৎ এখানে?"

"তুই গতমাসে যে ইন্টারভিউ দিয়েছিলি তার জয়েনিং আগামীকাল। বাড়িতে চিঠি এসেছে, আমি তোকে নিতে এসেছি।"

"তাই চল বাপি।"

শ্বেতা ফিরে চলল নিজের শহরে এক আচমকা ভয়ের স্মৃতিকে পেছনে ফেলে। ছাত্রীরা অবশ‍্য আরশিকে হারানোর দুঃখ ভুলতে পেরেছিল শ্বেতাকে পেয়ে। সহ শিক্ষিকারাও ভালোবাসার বন্ধনে বেঁধে ফেলেছিল। তবে বাড়ির কাছাকাছি যেতে পারা এটা তো বিশাল প্রাপ্তি যেখানে এক গ্রামীন বিদ‍্যালয়ের ভৌতিক অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই অসহনীয় ছিল শ্বেতার কাছে। জীবনের ঝুঁকিও পদে পদে জড়িয়ে ছিল।

...(সমাপ্ত)...

No comments:

Post a Comment