1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Friday, January 13, 2023

দর্শন

ছবি : ইন্টারনেট

দর্শন

প্রতীক মিত্র

সেলুনের চেয়ারটায় বসে বাইরেটা দেখতে বেশ লাগে।ও যেন ওই বাইরে মানে যেটা এই পৃথিবীর তারও বাইরের কেউ যার ওদের নিয়মের বৃত্তের কোনো তোয়াক্কা নেই।ইশ্বরের মতন বা কোনো ভিনগ্রহীর মতন যে এই মর্ত্যে ঘুরতে এসেছে। বাইরে বলতে একটা রাস্তা।চওড়া বড় কোনো রাস্তা নয়, একটা গলি সামান্য।তবে ব্যস্ততা সে গলির কম নয়। লোকজনের আসা-যাওয়া চলতেই থাকে। বৃদ্ধ, জোয়ান, বাচ্চা, মহিলা, পুরুষ সবাই। কেউ ওকে দেখে হাসে।ও চিনতে পারে।হ্যাঁ লোকটা ওর পরিচিত।কেউ ওকে দেখে না চেনার ভান করে।কেউ ওকে আবছা চেনে তাই বুঝে উঠতে পারে না হাসবে অথবা হাত নাড়বে কিনা, আগন্তুকও থাকে রাস্তায় যারা ওর বিষয়ে একদমই ভ্রুক্ষেপহীন। ফলে ওর দিকে তাকানো নিয়ে ওদের কোনো মাথাব্যথা নেই।কিম্বা ওরা ওর দিকে তাকালেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়না।একটা ছোট বাচ্চা নিজের মনে নাচতে নাচতে যায়।উলটো দিক থেকে আসে এক বৃদ্ধ মাছবিক্রেতা।হাতে তার পেল্লায় বঁটি। সেলুনের পর্দা উত্তুরে হাওয়ায় উড়তে শুরু করলে ও কিছুক্ষণের জন্য চোখদুটো বন্ধ রাখে।তারপর চোখ খুললে দেখে এক মহিলা।বেশ সুন্দরী।খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। একটু খানি গিয়েই গাড়ি রাখা ছিল।ড্রাইভারও ছিল বসে গাড়িতে।ড্রাইভার সেলুনের মালিকের বন্ধু। হাত নাড়ে। ও পরে বুঝতে পেরেছিল।প্রথমে অবাকই হয়েছিল ড্রাইভারের হাত নাড়াতে।ওতো ড্রাইভার মশাইকে কোনোদিন দ্যাখেনি পর্যন্ত। তারপর এক বৃদ্ধ যায় ‘চা’ ‘চা’বলতে বলতে।প্লাস্টিকের বাসন বেচতে বেচতে চলে যায় এক যুবক।বাংলায় তার অদ্ভুত রকমের টান।আগের জনের চুল কাটা শেষ হলেও দাড়ির তখনও বাকি।ফলে ওর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।খবরের কাগজেও নতুন কিছু যেন থাকতে নেই। সবই জানা, সবই গঁদে বাঁধা।বিষয়টা এখানেই শেষ হয়ে গেলে ঝামেলা মিটেই যেত।মানে এই অন্যদের ওকে দেখে, হেসে কিম্বা হাত নেড়ে চলে যাওয়াটাতে। কিন্থু লোকেদের ওকে দেখা বা ওর লোকেদের দেখার মাঝে ও এমন একটা জিনিস দেখলো যেটা বোধহয় না দেখলেই পারতো।মানুষটা আর কেউ ন। ও নিজেই।তবে ওর ওই পথিক অবতারটি কি ওকে দেখে ততোটাই স্থম্ভিত?।ও দেখতে থাকে হুবহু ও নিজেই যেন গলির একদিক থেকে অন্যদিকে হেঁটে চলে যাচ্ছে।

...(সমাপ্ত)...

No comments:

Post a Comment