![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
খিদে
বাপ্পা রুইদাস
দিদি, এ..দিদি, আমার খুব খিদে পেয়েছেরে, আমাকে কিছু খেতে দে নারে।
সেই কোন সকাল থেকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে দুজনে, বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়ে এলো। তবুও তাদের একটা পেনও বিক্রি হল না। হতাশার সুরে মনি তার ভাই বিলুকে বলে, তুই এই বটতলায় একটু বসে থাক। আমি ওই চোরামার্কেটের দিকে ঘুরে আসি। আমি না আসা অবধি তুই কোথাও যাবি না বুঝলি।
বিলু কাঁদ কাঁদ গলায় বলে, খাবার আনবি তো?
- হ্যাঁরে ভাই, আমি তোর জন্যে খাবার আনবো।
মনি বাজারের কয়েকজনকে পেন নেওয়ার জন্য অনুরোধ করল, কিন্তু কেউ তার দিকে ফিরেও তাকালো না। সে মনে-মনে বলে, আজকেও বোধহয় কিছু খাওয়া হবে না।
তার খুব রাগ হয় মায়ের উপর। বাবা যতদিন বেঁচেছিল, ততদিন সবাই সুখে ছিল। দুই ভাইবোনে স্কুলে যেত, কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর তাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। তার আর মাধ্যমিকের পরিক্ষাটাও দেওয়া হলনা। তার কিছুদিনের মধ্যেই মা অন্য একজনের সঙ্গে ভেগে গেল। তারপর থেকে যে কিভাবে চলছে তা ভগবানই জানেন। হঠাৎ তার কাঁধে কে যেন হাত রেখেছে। সে পেছন ফিরে দেখে একজন মাঝ বয়সির লোক। মুখ ভর্তি দাড়ি, দেখলেই বোঝা যায় সে হয় চোর, না হয় গুন্ডা। সেই লোকটি বলে, খিদে পেয়েছে তো?
মনি মাথা দুলিয়ে বলে, খুব খিদে পেয়েছে।
- আমার সাথে এসো। ঐ ওখানে আমার দোকান।
মনি লোকটার পিছু পিছু যেতে থাকলো।
কিছুদূর গিয়ে দেখে একটা ভাঙা গেরেজ ঘর। লোকটি বলে, ভেতরে এসো। আজকে আমাদের এখানে রান্না হয়েছে।
মনি ঘরের ভেতরে ঢোকার মাত্রই লোকটি দরজায় খিল লাগিয়ে দিল। নিমেষের মধ্যেই মনিকে জাপটে ধরে জামা খুলতে থাকে। সে চিৎকার করতে থাকে, কিন্তু সে চিৎকার কেউ শুনতে পেলনা। লোকটার শক্ত হাত থেকে নিজেকে সে রক্ষা করতে পারলনা, একসময় সে তার শরীরটাকে লোকটার কাছে সঁপে দিল। সে মুখ বুজে যন্ত্রণায় সয্য করতে থাকে।
দুদিন পর মনির রক্তাক্ত মাখা নিথর দেহটা পুলিশ এসে উদ্ধার করে।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment