1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Friday, May 1, 2020

ক্যাপ্টেন ভেড়ি

(ধারাবাহিক রহস্য কাহিনী )

পূর্ব কথন 
👆


   
                                                          ...তরুণ চক্রবর্তী
  (দুই) 


        হুর , হুর , দাবাং , দাবাং.....
 পরমা আইল্যান্ড থানার বড়বাবুর মোবাইলে রিংটোন বাজছিল।রাত এগারোটা।এক পাইট রাম মেরে , ডিনার করে সবে শুয়েছে , এইসময় এইসব ঝামেলার কোন মানে হয় । বিরক্ত হয়ে দিবাকর ভট্টাচার্জ্য মোবাইলটা চোখের সামনে ধরল। সেকেন্ড অফিসার , নকুর দাসের ফোন । 
--হ্যালো । 
--স্যার , আমি নকুর বলছি … 
--বুঝতে পেরেছি । আগে…. 
--স্যার, বডি স্যার । মেয়েছেলে । 
-- কোথায় ? দিবাকর সোজা হয়ে বসল । 
--ক্যাপ্টেন ভেড়ি , স্যার । আপনি আসছেন ? 
--হ্যাঁ , হ্যাঁ , আসছি । তুমি ওইখানেই থাক। দিবাকর ফোন কেটে দেয় । 
 রামের নেশা ততক্ষণে কেটে গেছে । দিবাকর দুমিনিটে ইউনিফর্ম পরে নেয় । নিচে নেমে হাঁক পারে , 
-- জনার্দন, জনার্দন । 
   জনার্দন পরমা আইল্যান্ড থানার কন্সটেবল, থানার একমাত্র জিপটা চালায় । এই থানায় মোট আট জন স্টাফ । আর সবাই বাড়ি থেকে ডিউটি করে । থানা কোয়ার্টারে শুধু বড়বাবু আর জনার্দন থাকে। রাত বিরেতে দৌড়তে হলে , বড়বাবুর জনার্দনই ভরসা। দিনেরবেলায় অবশ্য বড়বাবু নিজের বাইক নিয়েই বেড়োয় । রয়েল এনফিল্ড । 
   জনার্দনের পুরো নাম , জনার্দন পাণ্ডে । বাড়ি উত্তরপ্রদেশ , সাহারানপুর জেলা । সেখানে পরিবার , বাল বাচ্চা আছে । বছরে একবার যায় । একমাসের জন্য । থানা তখন ভাড়ার গাড়ি নেয়। সুমো । জনার্দন রসিক লোক । সুযোগ পেলেই , ট্যাংরার , চায়না-টাউনের বেশ্যা পল্লিতে গিয়ে ডাঊনলোড করে আসে ।  কিই বা করবে । পয়তাল্লিশ বছরের শরীর । কতদিন উপোষী থাকা যায় । 
    দিবাকর অবশ্য ব্যাচেলর মানুষ । রামপুরহাটে বাড়ি। ওই অঞ্চলের একসময়ের জমিদার । একান্নবর্তী পরিবার । আগে মাঝে মাঝে বাড়ি যেত । এখন প্রায় যায় না বললেই চলে । গেলেই সবাই বিয়ের জন্য এতো চেপে ধরে ! দিবাকর , বিয়ে করবে না,  বলে বলে থকেগেছে । বিয়ে না করলেও , চল্লিশ বছরের দিবাকরের , রাম ছাড়া কোন বাজে নেশা নেই । 
   জনার্দন গাড়ি স্টার্ট করে অপেক্ষা করছিলো । দিবাকর ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে বললো - ক্যাপ্টেন ভেড়ি । 
   থানা থেকে ক্যাপটেন ভেড়ি যেতে ,  দশ মিনিট লাগে । চারিদিক কুয়াশায় মোড়া । গাড়িগুলোর হেডলাইট , টেললাইট , রাস্তার হ্যালোজেনের আলো , সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে বাইপাস এক মোহময়ী নারী । 
   ঘটনাস্থলে পৌঁছে দিবাকর দেখল ,নকুর মোটামুটি সব ব্যাবস্থা করে ফেলেছে । আম্বুলান্স , ফটোগ্রাফার ডেকে নিয়েছে। ফটোগ্রাফার ,লাশ আর তার আশপাশের ছবি তুলতেও শুরু করেছে । এই রাত্তিরেও কয়েকজন কৌতুহোলি লোকজন জুটে গেছে । দিবাকরকেদেখেই নকুর এগিয়ে এলো । নকুরকে সাথে নিয়ে দিবাকর লাশের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো । 
     ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছরের মহিলা । উগ্র পোশাক , উগ্র মেকআপ । বোঝাই যায় দেহোপজীবিনী । মুখ মোঙ্গলিয়ান ধাঁচের । মুখে কোন যন্ত্রণার অভিব্যক্তি নেই ।দেহে কোন বড়সড় আঘাতের চিন্হ নেই ।  লাশটা বেঞ্চে শোয়ানো ছিল । হাতে রুমাল জড়িয়ে , দিবাকরলাশটার হাত তোলার চেষ্টা করলো । রিগর-মর্টিস শুরু হয়ে গেছে । 
    -- খুনটা কখন হয়েছে মনে হয় ? দিবাকর নকুরকে জিগ্যেস করে । 
   -- তিন চার ঘণ্টা তো হবেই । রিগর-মর্টিস শুরু হয়ে গেছে । নকুর বলে । 
  -- হ্যাঁ , দেখলাম । পঞ্চনামা লেখা হয়ে গেছে ? 
  -- হ্যাঁ স্যার । 
 -- তাহলে লাশ পি .এম  এর জন্য পাঠিয়ে দেও । জায়গাটা ঘিরে দেও । একজন কনস্টেবলকে পোস্ট করে দেও । কাল ফরেনসিক টিম আসবে । 

--ওকে স্যার । 
--আর হ্যাঁ , শোন এই জায়গাটার সি .সি ক্যামেরার ফুটেজটা নিয়ে নিও । 
--ওইটাই তো সমস্যা হয়ে গেছে স্যার । নকুর মাথা চুলকোয় । 
--কেন , কি হয়েছে ? 
--জায়গাটায়  স্যার সি .সি ক্যামেরার কভারেজ নেই । 
--অ্যাঁ । সেকি । কাজটা তো কঠিন হয়ে গেল হে । তা খুনটা কি করে করেছে তোমার মনে হয় । দিবাকর , নকুর কে জিগ্যেস করে । 
--স্ট্রাংগুলেসান হতে পারে স্যার । গলায় একটা হাল্কা লিগেচার মার্ক আছে । 
--গুড । দিবাকর নকুরের পিঠে হাল্কা চাপড় মারে । ঠিক আছে , আমি চলি । তুমিও বাকি কাজ গুলো সামলে বাড়ি চলে যেও । কালকে সকালে রিপোর্ট কোর । দিবাকর , নকুরের দিকে হাত নেড়ে , গাড়ির দিকে এগোয় । 
   জনার্দন গাড়িতে বসেই ছিল । দিবাকর সিটে বসতেই রওনা দিল থানার পথে ।
 ( ক্রমশ  ) 
tchak1961@gmail.com
কলকাতা 

1 comment:

  1. ভালোই এগোচ্ছে। তবে আরেকটু বেশী বেশী দরকার। বড্ড।কম। মন ভরছে না।

    ReplyDelete