1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Monday, August 15, 2022

চিকিৎসা সমাজতত্ত্বের (Medical Sociology) পরিপ্রেক্ষিতে IVF পদ্ধতির সামাজিক পর্যালোচনা


ছবি : ইন্টারনেট

চিকিৎসা সমাজতত্ত্বের (Medical Sociology) 

পরিপ্রেক্ষিতে IVF পদ্ধতির সামাজিক পর্যালোচনা 

জয়দেব বেরা


সমাজতত্ত্বের একটি অন্যতম শাখা হল ‛চিকিৎসা সমাজতত্ত্ব’ (Medical Sociology)। সামাজিক দিক থেকে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনস্বীকার্য। চিকিৎসা সমাজতত্ত্ব হল সমাজতত্ত্বের এমন একটি তাৎপর্যপূর্ণ শাখা যেখানে চিকিৎসার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর পারস্পরিক সম্পর্ক, মানুষের শারীরিক সুস্থতা-অসুস্থতা, রোগ-অসুখ, রোগ-অসুখের নিরোধ-নিরাময় প্রভৃতি বিষয়াদিকে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-

মনস্তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটে ব্যাখা-বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ন করা হয়ে থাকে। এককথায়, Medical Sociology is simply the study of the effects of social and cultural factors on health and medicine. সমাজতত্ত্বের এই শাখায় সমাজের বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ের পাশাপাশি চিকিৎসার বিভিন্ন বিষয় গুলিকেও (রোগ-অসুখের সৃষ্টি, রোগ-অসুখের প্রকৃতি-প্রতিকার, চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধার ধরন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ সংগঠন এবং রোগ-অসুখের আঞ্চলিক বন্টন প্রভৃতি) পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ন করা হয়ে থাকে। চিকিৎসা সমাজতত্ত্বে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতির কথা বলা হয়ে থাকে, তা হল - (১) IVF (২) Counselling পদ্ধতি।

                      আমি আমার এই আর্টিকেলটিতে IVF পদ্ধতির সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো। যদিও IVF পদ্ধতি চিকিৎসা শাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তবুও এই পদ্ধতি সমাজতত্ত্বের আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। সমাজে পরিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এই পরিবার গঠনে IVF পদ্ধতির একটি সংযোগমূলক সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও বিবাহিত নারীদের বাচ্চা নাহলে তাকে সমাজে নানান বঞ্চনা সহ্য করতে হয়। যদিও এই বঞ্চনা নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরকেও সহ্য করতে হয়। তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদেরকেই বেশিরভাগ নানান ধরনের লাঞ্ছনা ও অপমান সহ্য করতে হয়। সমাজ তাকে 'বন্ধ্যা নারী' হিসাবে তার পরিচিতি প্রদান করে থাকে। এছাড়াও তাকে নানান ধরনের নিয়ম ও কুসংস্কার মেনে চলতে হয়। যেমন - যেকোনো শুভ অনুষ্ঠানে থাকা চলে না প্রভৃতি। এইসবের ফলস্বরূপ অনেক দম্পতি সামাজিক-মানসিক দিক থেকে অনেকাংশে হতাশায় ভুগতে থাকে। যার ফলে তাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতিও হয়ে থাকে। এইসমস্ত বন্ধ্যা দম্পতিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা হল IVF (In-Vitro Fertilization) পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে নারী-পুরুষ বা দম্পতিরা তাদের ‛বন্ধ্যা’ তকমাটি মুছে ফেলতে পারবেন। তাহলে এবার IVF পদ্ধতির সম্পর্কে জানা যাক। IVF হল বন্ধ্যাত্বের এক বড় ধরনের চিকিৎসা। প্রাণীদেহের বাইরে শুক্রাণুর সাহায্যে ডিম্বাণুর গর্ভাধানের প্রক্রিয়াই হল IVF বা বহির্দেহ গর্ভসঞ্চার পদ্ধতি। এই IVF পদ্ধতির মাধ্যমে নিঃসন্তান দম্পতির সন্তান প্রজননের ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় একজন মহিলার ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের করা হয়। তারপর গর্ভাধানকৃত ডিম্বাণু (Zygote) কে নারীর তথা  রোগিনীর জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে পুরুষের শুক্রাণু আর নারীর ডিম্বাণুর নিষিক্তকরণ টুকুই কেবল স্বাভাবিক পদ্ধতিতে না হয়ে দেহের বাইরে হয়ে থাকে। যে পদ্ধতিতে স্ত্রী দেহের  ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে বের করা হয় তাকে বলা হয় ‛ল‍্যাপারোস্কপি’। এককথায় IVF হল - IVF is a process by which an egg is fertilized by sperm outside the body. It is a major treatment for infertility. এই পদ্ধতির মাধ্যমেই নিঃসন্তান দম্পতিরা তাদের সন্তান জন্ম দিতে পারেন। যদিও এই পদ্ধতি সর্বদাই যে সফল হয় তাও কিন্তু সঠিক নয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ১৯৭৮ সালে প্রথম শিশু লুই ব্রাউনের জন্ম হয়। এবং এই IVF পদ্ধতিটির উদ্ভাবন করেন বিশিষ্ট শারীরবৃত্তবিদ আর.জি.এডওয়ার্ডস (Robert G. Edwards)।


               যাইহোক, এই চিকিৎসা পদ্ধতির অনেক নিয়ম রয়েছে যেগুলি IVF অভিজ্ঞ ডাক্তারবাবুদের সাথে আলোচনা করলে জানা যাবে। এই পদ্ধতির মাধ্যমেই সমাজের অনেক দম্পতির কোল জুড়ে এক আলোর ছোঁয়া আসে। এবং তারাও সমাজে আর পাঁচজনের মতো সম্মানের সহিত হতাশা মুক্ত হয়ে সন্তান সহ স্বাভাবিক ভাবেই জীবনযাপন করতে পারবে। তাদেরও এক সুন্দর পরিবার গড়ে উঠবে। তবে এই পদ্ধতির জন্য সবসময় মনে রাখবেন ভালো IVF সেন্টার বা হাসপাতালে গিয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার বাবুদের পরামর্শ নিয়েই তারপর এই পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।কোনো ভাবেই ভুল বা ভ্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন না।

...(সমাপ্ত)...

No comments:

Post a Comment