ছবি : ইন্টারনেট দিন বদলে যায় শমিত কর্মকার |
সূর্য ডুবু ডুবু
বিকালে হঠাৎ সুরজিৎ সজলের বাড়ি এলো। আচ্ছা সজল তোর কি হলো বল্ তো? তাকে আমাদের বট তলার আড্ডা খানায় আসতে দেখি
না। মাঝে মাঝে তোকে আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে সকালে সাইকেল নিয়ে যেতে দেখতাম সেটাও
দেখি না। তুই এখন কি করছিস? আমাদের
গ্র্যাজুয়েশনের পরীক্ষা তো হয়ে গেছে, এখন তো একটু চুটিয়ে আড্ডা মারার সময়। তিন বছর
ধরে তো শুধু পড়েই গেলাম। সজল এবার কথা বলল,তুই এবার বস্।আসার পর থেকে দাঁড়িয়ে
দাঁড়িয়েই কথা বলে যাচ্ছিস।
শোন তবে সুরজিৎ, আমাদের পরিবারের অবস্থা অতো ভালো নয়। তার উপর
আমার বাবার শরীর দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। তাই পরীক্ষা হয়েই গেছে দেখে ভাবলাম একটা
কিছু করা যায় কি না। আমি একটি ইনস্টিটিউট এ ভর্তি হয়েছি চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার
জন্য। সপ্তাহে দুদিন করে ক্লাস করতে যাই। আর সকালে কিছু টিউশন পড়াচ্ছি। ক্লাস
নাইন এবং টেনের ছেলে মেয়েদের তাই তেমন সময় পাই না।সুরজিৎ এতোক্ষণ শুধু কথাই বলছি
একটু বস্, আমি চা নিয়ে
আসছি। চা খেতে গল্প করবো।
সজল আমি তোকে অনেক দিন না দেখে আজ এসেছি। আর
যার জন্য এসেছি তাকে বললে না বলবি না। সে ঠিক আছে সুরজিৎ আগে বল্, শুনে হ্যা কি না
জানাব। আমি ঠিক করেছি আমাদের কলেজের কয়েক জন ঘুরতে যাবো অনেক দিন কোথাও যাইনি।
আমি সেই তালিকায় তোকে রেখেছি।সে ঠিক আছে,কিন্তু কি কোরে আমি যাবো বল্। আমার তেমন তো
টাকা নেই। ঘুরতে গেলে টাকা লাগবে। আগে এক রকম ছিল বাবার কাছে চাইলে পেতাম। আজ বাবা
অসুস্থ। ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই।
তোর কিছু দিতে হবে না সজল শুধু সাথে যাবি।
আমি তুই বিমল, সেতা আর পৌলমি এই কজন দোলে শান্তি নিকেতন যাব। আমি কাকিমাকে বলে নিচ্ছি। না না, মা খুব রাগ করবে।
সে কেমন করে হয় ঘুরতে যাব টাকা পয়সা ছাড়া। সে তোকে কিছু চিন্তা করতে হবে না
সুরজিৎ বলল।
অনেক কষ্টে সব ঠিক ঠাক করে সবাইকে রাজি
করিয়ে ওরা পাঁচ জন আজ সন্ধ্যায় শান্তি নিকেতন এসেছে। কাল সকালেই দোল /বসন্ত
উৎসব। হঠাৎ করে সব ঠিক হওয়ায় হোটেল বাড়ি কিছুই পাইনি। ওরা সবাই ষ্টেশনে একটা চাদর
পেতে বসলো। ওদের সাথে এমন অনেকেই ষ্টেশনে আছে। রাত টুকু কাটাবার জন্য কেউ গান কেউ
নাচ করছে। ওরা পাঁচ জন ওই দেখে তাদের সাথে ভিরে গেল। দিনের আলো ফুটতেই ওরা চা
জলখাবার খেয়ে সোজা বসন্ত উৎসব প্রাঙ্গণে রওনা দিল।প্রবোল আনন্দ নিয়ে ওরা দোল
উৎসবে মেতে গেল।
No comments:
Post a Comment