বসন্তের বিকেল
গোবিন্দ নাথ
বসন্তের বিকেল | হালকা দখিনের হাওয়া | গা-য়ে আলতোভাবে ছুঁয়ে যাচ্ছে | বেশ লাগছে | রুক্ষ শীতকে বিদায় দিয়েছি |
প্রকৃতি সাজছে আর একভাবে | এতোদিন মনমরা হয়ে পড়েছিলো ধূসর প্রকৃতি | এরই আঙিনায় এখন রঙের বাহার | বনে বনে নতুন সাজ | ডগায় ডগায় নতুন পাতার আত্মপ্রকাশ | যেন মনে হচ্ছে এক কুমারী সবুজের আয়োজন |
বসন্তের গন্ধে কোকিলের শোরগোল | ঠিক শোরগোল বললে ভুল হবে | একটা সুরেলা আওয়াজ | গাছের মাথায় বসে নিজেকে পাতার আড়ালে রেখে একটানা ডেকে যাওয়া | শব্দ আসে, দেহ দেখা যায় না | একা একাই ডেকে যায় |
এদিকে শিমূল-মাদারের চোখ রাঙানো | পলাশও কম যায় না | তা হলেও পলাশের দেখা পাওয়া ভার | এ-তো পুরুলিয়া না, যে, যেখানে সেখানে এর দেখা মিলবে |
সত্যিই পলাশকে দেখতে হলে পুরুলিয়ায় আসতে হবে | যেদিকে তাকাই, সেদিকেই শুধু লাল আর লাল | লাল চাদর গা-য়ে দিয়ে সেজেছে এখানকার প্রকৃতি | কী অপরূপ দৃশ্য ! এ চেহারা না দেখলে কিছু বলা যাবে না | যেন চোখ জুড়িয়ে যায় |
কৃষ্ণচূড়া-রাধাচূড়াকে বাদ দিয়ে বসন্তকে ভাবাই যায় না | ওপরে লাল-হলুদের খেলা, নীচে বিছানো তার অপূর্ব বাতাবরণ | এ দৃশ্য মাঝে মাঝেই দেখা যায় | বিশেষ করে রাস্তার ধারে বসানো নতুন গাছগুলোতে |
ঋতুরাজ তো ঋতুরাজ | শরৎ-কে বলে থাকি ঋতুর রানী, আর বসন্ত-কে বলতে হয় ঋতুরাজ | বসন্তের বিকেলে বেড়াতে বেরোলে একটার পর একটা দৃশ্য চোখে পড়বেই | কোনটাকে ছেড়ে কোনটাকে দেখি ! মনোরম একটা স্মৃতি ভেসে ওঠে | মৃদু বাতাসের হালকা প্রলেপ | এক জায়গায় বসে কয়েক ঘণ্টা বেমালুম কাটিয়ে দেওয়া যায় |
চলতে চলতে দেখছিলাম
ওদেরকে | ওদেরকে
ঠিক চিনতে পারলাম না | আমাদের একটু দূরে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে ওরা | ব্যস্ত মুখ |
যদিও
কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না | শুধু অনুমান করছিলাম, আর ভাবছিলাম এটা
সেটা | আঠারো-কুড়ির
দুই আগন্তুক |
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment