1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Sunday, September 25, 2022

বিস্কুট

ছবি : ইন্টারনেট

বিস্কুট

শৌনক ঠাকুর

   স্কুলের টেনশন কাটিয়ে একটু ফ্রেশ হতে গান্ধী ঘাটে গেলাম। এক ভাঁড় চায়ে গলা ভেজানো আর কি। মুর্শিদাবাদের ফারাক্কার এটা একটা জনপ্রিয় স্থান। অবিভক্ত গঙ্গার বাঁধের উপর সারি সারি চা এর দোকান। দূরে দেখা যায় ফারাক্কার বিখ্যাত ব্যারেজ। আর ব্যারেজের উপর শত শত গাড়ির সারি। মাঝে মাঝে কর্কশ শব্দ করে দু'একটা ট্রেন চলে যাচ্ছে গন্তব্যে। চা যে এখানকার মানুষের কত প্রিয়, তা দোকানে ভিড় দেখলেই বোঝা যায়।

   যাক,একটা দোকানের বেঞ্চে বসলাম। ছোট্ট বেঞ্চ। আমাকে নিয়ে চার জন কোনরকমে এঁটে গেল। ফুরফুরে হাওয়া। ঠান্ডা। মনোরঞ্জক। মাঝে মাঝে অবশ্য মরা পোড়ানোর গন্ধ আসছে। একটু দূরেই যে শ্মশান। চা দিতে বললাম। সঙ্গে একটা বিস্কুট।

   বিস্কুটাতে একটা কামড় দিতে যাবো অমনি "শৌনকবাবু" বলে একটা ডাক শুনতে পেলাম। চেনা কন্ঠ। আমারই সহকর্মী। "আরে, ...আসুন... আসুন...বসুন... বসুন। চা খান ? ", আমি বললাম। উনি সামনের বেঞ্চে বসলেন। তার জন্য চা বললাম। শুরু হলো চর্বিত-চর্বণ। মানে স্কুলের কচকচানি। বিরক্তিকর মনে হলেও আগ্রহী অভিনয়ে শুনতে শুরু করলাম।

   বিস্কুটের একটা কামড় দিয়ে হাতটা পিছনে রাখলাম। বাধ্য ছেলের মতো অতীত ইতিহাস শুনছি। হঠাৎ মনে হল বিস্কুটটা কিসে যেন আটকে গেছে। থমকে গেলাম। ভাবলাম বিস্কুট তো কাপড়ের টুকরা নয় যে বেঞ্চের পেরেক আটকাবে। না। না। 

   আবার ভুরু কুঁচকে চিন্তা করলাম, কেউ ইয়াকি করছে না তো ? না না । সেরকম তো কেউ নেই এখানে। তাছাড়া সামান্য বিস্কুট নিয়ে ...

   তাহলে ভুত-টুত নয় তো ? যে মরাটি পুড়ছিল সে হয়তো অভুক্ত অবস্থায় মারা গেছে। স্বর্গে যাওয়ার পথে বোধ হয় তার ক্ষিধে পেয়েছে। অথচ পিছনে তাকাতে পারছি না। সামনে বসা আমার সহকর্মী তখন পুরোদমে গল্প বলে যাচ্ছে । ও কি ভাববে ?

  কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। মনে কৌতূহল হচ্ছে। যা ভাবে ভাবুক । আড় চোখে তাকালাম। খুব অবাক হলাম। ও বাবা ! এ যে একটা ছাগলের বাচ্চা। বিষ্কুটে ভাগ বসানোর চেষ্টা করছে।

...(সমাপ্ত)...

No comments:

Post a Comment