![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
আয়না
মৌসুমী দেবঘোষ
প্রবালবাবু এক সাধুবাবার কাছ থেকে দিব্যদৃষ্টি পেয়েছেন,যে কোনো মানুষের দিকে তাকালেই তিনি তাঁর মনের কথা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছেন। এই যেমন পাড়ার মোড়েই দেখা হয়ে গেল প্রতিবেশী সঞ্জয়বাবুর সাথে, হেসে বললেন- ‘কি , ভালো তো ,বাজার করতে গেছলেন বুঝি ?’ কিন্তু প্রবালবাবু স্পষ্ট শুনলেন –‘এ হে সাতসকালেই এই অপয়া অলক্ষুণে লোকটারমুখ দেখতে হল !’ তাড়াতাড়ি যাহোক কিছু বলে ওখান থেকে কেটে পড়লেন।
বাড়ির গেটের সামনেই দেখা হল কাজের মেয়ে মিনতির সাথে, ঝাঁট দিচ্ছিল।কি ছিরি ঝাঁট দেবার নোংরা যেখানের সেখানেই আছে! ওঁর সাথে চোখাচোখি হতেই ভুরু কুঁচকে বলল –‘মেসোমশাই ওদিকের দরজা দিয়ে যান।‘ অথচ প্রবালবাবু যেন শুনতে পেলেন মিনতি বলছে-;এইরে হাড়বজ্জাত খিটখিটে বুড়োটা এসে গেছে, সব কাজের খুঁত ধরবে ।‘
তড়িঘড়ি ঘরে ঢুকে পড়লেন । গিন্নিকে বললেন –এক কাপ চা দিতে, গিন্নি সোফায় বসে মনোযোগ দিয়ে গতকালের সিরিয়ালের রিপিট টেলিকাস্ট দেখছিলেন। বিরক্তি নিয়ে বললেন- ‘এতবেলায় কেউ চা খায় ?’গজগজ করতে করতে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলেন। প্রবাল বাবু আবার যেন শুনতে পেলেন গিন্নি বলছেন – ‘মিন্সে আসবার আর সময় পেল না!একেবারে ক্লাইম্যাক্সের সময়েই আসতে হল! ‘
এরপর আর সাহস নেই প্রবালবাবুর ,সবাইকে এড়িয়ে চলছেন। অন্তত চোখাচোখি যাতে না হয়
তাই কারো দিকে তাকাচ্ছেন না পর্যন্ত । আজ দিন তিনেক হল তিনি দাঁড়ি কাটছেন না, এমনকি স্নান করে চুল আঁচড়াবার
জন্যও আয়নার সামনে দাঁড়াচ্ছেন না।বলা তো যায় না নিজের চোখের সাথেই যদি-- !
No comments:
Post a Comment