![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
পন্ডিতজী -কা বেটা
ডাঃ কেশব মুখার্জি
ধানবাদ শহরে, কোন এক পাড়াতে দুই ডাক্তার প্র্যাকটিশ করতো। ডাঃ সিং এবং ডাঃ মুখোপাধ্যায়। দুজনের মধ্যে খুব সু সম্পর্ক ছিল। রুগী না থাকলে একে অন্যের চেম্বারে বসে গল্প করত। সে কত রকম গল্প। হাসি-ঠাট্ট, ইয়ারকি সবই থাকতো সেই গল্পে। না কিছু হলে দৈনিক হিন্দুস্তান খবরের কাগজ পড়া, যেটা ডাঃ সিং এর চেম্বারে আসতো ।
একদিন ডাঃ সিং সন্ধ্যে বেলাতে এক গল্প বললেন, ধানবাদের কাছে ডা. সিং এর চেম্বার থেকে ৫-৬কিটি দূরে এক জায়গায় ডাঃ সিং রুগী দেখতে গিয়েছিলেন , বোস নামক একজনের সঙ্গে, রুগী দেখে ফেরার সময় বোস এবং ডাঃ সিং বাসের কম মধ্যে বসে আছে ,এমন সময় এক মধ্য রয়সী ছেলে এসে বাসে গণেশ পূজো শুরু করলো, সেই ছেলেটি বোস সাহেবের ছাত্র। শিক্ষক কে দেখে সে প্রণাম করলো শিক্ষকও তাকে জীতে রহো বলে আশীর্বাদ -করে জিজ্ঞেস করল, কেমন আছ- কতদূর পড়াশুনো করলে? এখন কি করছো। ছেলেটি গ্রামের স্কুলের তুলনায় লেখাপড়াতে ভালোই ছিল। ছেলেটি বললে ক্যায়া করেগা পন্ডিত-কা বেটা পণ্ডিতাই কর রাহা হ্য অর্থাৎ পণ্ডিত পুরুতের ছেলে পুরহিত গিরি করছি। আপনে মুঝে পড়নে কাঁহা দিয়া? অর্থাৎ আপনারা আমাকে পড়তে কোথায় দিলেন ।
এই কথা শুনে ডাঃ সিং জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে, ছেলেটি কেন এমন বলছে।
তখন বোস সাহেব একটা পুরানো গল্প বললো-
বললো একবার হোলির পর স্কুলে বিনা পয়সায় বই বিতরণ হবে, সব ছেলেরা খুব আনন্দ করে বই নেবে বলে এসেছে এবং লাইন করে দাড়িয়ে আছে বই নেবে বলে । বই কিন্তু যত ছাত্র আছে তার চেয়ে সংখায় কম আছে এবং নির্দেশ আছে কোনো তপোশিলি ও উপজাতির ছেলে মেয়েরা যেন বই থকে বঞ্চিত না হয় ।
একে একে সবাই-বই নিচ্ছিলো লাইনে দাড়িয়ে হটাৎ -হেড মাষ্টার বললেন পন্ডিতজী -কা বেটাকো পুস্তক নহি-মিলেগা -বেচার পন্ডিতজীর ছেলে , ক্লাশের ফার্স্টবয় লাইন থেকে বেরিয়ে গেল কাঁদতে কাঁদতে। তার বাবাও এইরকম বাসে চড়ে পুজো করতো
পন্ডিতজীর ছেলের আর বেশীদূর পড়াশুনো হয় নাই, সে আজো বাসে পূজো-করে।
ঠিকই আছে। মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী বিজনেশ ম্যানের ছেলে বিজনেশম্যান। পন্ডিতজীর ছেলে পন্ডিত।
- আজ ডা সিং আর নেই, তার বলা পল্পটা হঠাৎ মনে পড়ে গেল।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment