1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Wednesday, January 1, 2020

বৃষ্টি


                                                                                                              ...পল্লব পত্রকার 


       লোহার গ্রিলের বাধাকে পাত্তা না দিয়ে সকালের রোদ্দুর যেমন বেমক্কা ঢুকে পড়েছিল বারান্দায়, ঠিক তেমনি গেটের হাতলটা দড়াম করে খুলে ছেলেটাও সোজা চলে এল প্রদোষের সামনে। চোখে চোখ রেখে ঝাঁঝালো গলায় বলল, 'আপনি এটা কি করলেন?'
         রোজের মতোই মেঝের ওপর মাদুর পেতে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে খবরের কাগজে চোখ বোলাচ্ছিলেন প্রদোষ। একটু পরে স্নান খাওয়া সেরে অফিস যাবেন। অবাক হয়ে তাকালেন ছেলেটার দিকে। দেখে তো ভদ্র ঘরেরই মনে হচ্ছে! কিন্তু এইভাবে বলা নেই, কওয়া নেই!
   কিছুটা ভয়, অনেকটাই বিরক্ত হয়ে জানতে চাইলেন, 'কি করলাম!'
   -- জানেন না কি করেছেন? ঘাড় নাড়েন প্রদোষ। জানেন না।
      ছেলেটা গলার ঝাঁঝ আরও বাড়িয়ে দিয়ে বলল, 'আমি বার বার রিকোয়েস্ট করা সত্ত্বেও আমাকে       গান শেখাতে রাজি হলেন না! বললেন আমি কাউকে গান শেখাই না! আর এখন বৃষ্টিকে ...'
   তার কথা শেষ করতে না দিয়ে প্রদোষ বললেন, 'কি মুশকিল! আমি কাকে গান শেখাব না শেখাব, সেটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার!'
   -- কথা ঘোরাবার চেষ্টা করবেন না! আপনি বলেছিলেন, কাউকে শেখান না!
   ঢোক গেলেন প্রদোষ। একটু থেমে বলেন, 'ও আমার ভাইঝি!,
   --ভাইঝি না ছাই! ওরা দত্ত, আপনি সেন!
   -- আরে ছোকরা, তুমি কি জানো, বৃষ্টির বাবা সোমনাথ আমার ....
   -- মাইন্ড ইওর ল্যাংগুয়েজ! ছোকরা বলছেন কাকে? এত তাচ্ছিল্যর কি আছে! কি ভাবেন নিজেকে? আপনি ছাড়া কি গানের টিচার নেই? বুঝি বুঝি, সব বুঝি! ডবকা সুন্দরী মেয়ে পেয়েই …
   অনেক সহ্য করেছেন প্রদোষ। আর রাগ সামলাতে পারলেন না! 'কি আজেবাজে কথা বলছিস! বেরো, বেরো এখান থেকে!..' বলতে বলতে ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়ান।
   ছেলেটা বেগতিক বুঝে পিছন ফিরে নিজের রাস্তা ধরে। তবে গজগজ করতে ছাড়ে না। 'আরে ছাড়ুন মশাই! সব জানা আছে!...'
   ফ্যাল ফ্যাল করে স্কাউড্রেলটার দিকে তাকিয়ে থাকেন প্রদোষ। ইচ্ছে করছিল দৌড়ে গিয়ে কলার ধরে ঠাস ঠাস করে কয়েকটা চড় কষান। কিন্তু রুচিতে বাধল। বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী তিনি। তাঁকে এটা মানায় না! পাশের বাড়ির লোকজন দেখলে কি বলবে! তখন কৈফিয়ত দিতে দিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত!
   গানই প্রদোষের ধ্যান জ্ঞান। নিয়মিত রেওয়াজ করতে ভোলেননা। কণ্ঠস্বরও ভালো। তাই হয়ত এই বয়সে পৌঁছে একটু নামডাক! খান কয়েক ক্যাসেট সিডি প্রকাশ! একটা সংস্থার মাধ্যমে ইউ টিউবে দুটো গানের ভিডিও আপলোড।
   সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শুধু গান গাওয়া নয়, ইদানিং নানা সভা সমিতিতে বিশিষ্ট অতিথির পদও অলংকৃত করতে হচ্ছে। যখন মঞ্চে ওঠেন, সসম্ভ্রমে সবাই তাকিয়ে থাকে। হ্যান্ডসাম বলে যৌবনে যথেষ্ট পরিচিতি ছিল। এখনও তা পুরোপুরি ম্লান হয়নি। তার ওপর সুগায়ক!
   তাঁর ভাগ্যে এই! একটা হাঁটুর বয়সী ছেলে বাড়িতে এসে ...!  ছি ছি ছি!
   একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে প্রোদোষের বুক থেকে। বিড় বিড় করে মনোলোগ পাঠের মতো বলেন, বৃষ্টি যে আমার জীবনে কি আর কতখানি তুই কি করে জানবি রে জানোয়ার! শুধু খারাপ ভাবনাগুলোই ভাবতে শিখেছিস! মূল্যবোধ বলে তো কিছু নেই! …
   আজ বিকেলেই তিনি বৃষ্টির সঙ্গে বইমেলা যাবেন। কাল সন্ধেবেলা বৃষ্টি যখন গান শিখতে এসেছিল, তখনই দুজনে ঠিক করেছেন। নরসিংহ দত্ত কলেজে সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী সে। চারটে নাগাদ ক্লাস শেষ। তারপর নবান্নে প্রদোষের অফিসে আসবে। দুজনে একটা ট্যাক্সি নিয়ে সোজা মিলন মেলা। এই স্টল থেকে সেই স্টল। পছন্দমতো বই কেনা। মাঝে মাঝে ফুচকা, আলুকাবলি, ঝালমুড়ি। ফেরার পথে কোনও ভালো রেস্তোরাঁয় ঢুকে মাটন বিরিয়ানি, চিকেন রেজালা। বৃষ্টির ফেভারিট। তাঁরও।
   অনিন্দিতাকে তাঁর বলাই আছে, রাতে আজ রান্না করাতে হবেনা। খাবার নিয়ে ফিরবেন। এই তো একটু আগে সে বেরিয়ে গেল। আন্দুলে একটা কলেজে পড়ায়। অধ্যাপনার পাশাপশি প্রচুর টিউশনি করে। খুবই ব্যস্ত থাকে। স্ত্রীর সঙ্গ তাই প্রদোষের ভাগ্যে জোটে না বললেই চলে।
   বৃষ্টিই তো তাঁর বন্ধু। হ্যাঁ, অসমবয়সী বন্ধু।
   অফিস কলিগ বা পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে প্রদোষের শুধু হাই হ্যালোর সম্পর্ক। করোর সঙ্গে সেরকম ঘনিষ্ঠতা নেই। অথচ সোমনাথের সঙ্গে সবার মেলামেশা। একটা ক্লাবের সেক্রেটারিও সে। তাদের সঙ্গে কয়েক বছর আগে একবার পুরি বেড়াতে গিয়েছিলেন। তখন থেকেই দুটি পরিবারের ঘনিষ্ঠতা। বৃষ্টি তখন বেশ ছোট। নাইন বা টেনে পড়ে। সমুদ্রের ধারে প্রদোষের দরাজ কণ্ঠের গান শুনে কাকুর সে ন্যাওটা হয়ে ওঠে। তারপর তো চোখের সামনে বড় হয়ে গেল। এখন পূর্ণ যুবতী। পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী। পাশপাশি তার হাজার গুণ। খু্ব ভালো আঁকতে পারে। নাচ করতে পারে। বছর খানেক হল ক্যারাটে শিখছে। স্টেট লেভেলেও কম্পিট করেছে। কদিন আগে আদুরে গলায় বলল, 'কাকু তোমার কাছে গান শিখব!' 'আমি কখন সময় পাব রে!' হাসতে হাসতে বলেছিলেন প্রদোষ। 'ওসব শুনতে চাই না! তোমাকে শেখাতেই হবে!' শেষ পর্যন্ত আর না করতে পারেননি প্রদোষ। রাজি হয়ে গেছেন।
   বৃষ্টির ব্যস্ত বাবা আর অসুস্থ মা খু্ব একটা তাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে পারে না। তাই কাকু-কাকিমার সঙ্গে বা শুধু কাকুর সঙ্গেই তার চিড়িয়াখানা, মিউজিয়াম, সায়েন্স সিটি, ইকো পার্ক, নিকো পার্ক আরও কত জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। নন্দন, একাডেমিতে ভালো ভালো সিনেমা-নাটক দেখা।
             এর পরিবর্তে কাকু কাকিমাকেও সে কম দেয় না! মাঝে মাঝে টুকটাক দোকান বাজার বা ওষুধপত্র কিনে আনা তো আছেই। আর আছে হঠাৎ হঠাৎ চলে এসে হুটোপুটি করে কাকু কাকিমার সঙ্গে খুনসুটি। নিষ্প্রাণ বাড়িটায় প্রাণের জোয়ার বইয়ে দেওয়া। কদিন আগেই এক রবিবার বিকেলে সুন্দর করে শাড়ি, গয়না, ফুলের মালা পরে এসে বলল, 'আমার একটা প্রোগ্রামে যাবার কথা ছিল। বাবা নিয়ে যেতে পারল না। আমি এখন তোমাদের ছাদে নাচবো। কাকু তুমি গান করবে। কাকিমণি হারমোনিয়াম বাজাবে।' শুরু হল তিনজনের জলসা। একের পর এক রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে চললেন প্রদোষ। লীলায়িত ছন্দে নৃত্য করে চলল বৃষ্টি। দর্শক শ্রোতা থাকল কয়েকটা গাছপালা, এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ানো পাখ-পাখালি, সারি সারি কংক্রিটের স্তূপ,  আর অস্তগামী রাতুল সূর্য।
         একবার বৃষ্টিকে প্রদোষ জিজ্ঞেস করেছিলেন, 'হ্যাঁরে তোর কোনও বয়ফ্রেন্ড নেই?' দুষ্টু মেয়েটা সঙ্গে সঙ্গে বলেছিল, 'কে বলল নেই! তুমিই তো আমার বয়ফ্রেন্ড!' 'দেব ঠাস করে এক চড়! কাকুর সঙ্গে ইয়ার্কি হচ্ছে?' চোখ পাকিয়ে বলেছিলেন প্রদোষ। 'কই মারো, মারো আমাকে!' ভ্রু নাচিয়ে এগিয়ে এসেছিল বৃষ্টি। মারা তো দূরের কথা! দীঘল দুটো চোখের দিকে তাকিয়ে বৃষ্টির চিবুক নেড়ে দিয়ে প্রদোষ বলেছিলেন, 'দিনে দিনে কি মিষ্টি হচ্ছিস রে তুই!'
   তবে হ্যাঁ, প্রতি মুহূর্তেই তাঁকে মনে রাখতে হয়, বৃষ্টি তাঁর কন্যাসমা। মন যে কখনও দুর্বল হয়না তা নয়। তবে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেই দুর্বলতার গলা টিপে ধরেন। তাঁর একমাত্র সন্তান শৌনক ব্যাঙ্গালোরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। শৌনকের পরে তাঁর যদি একটা মেয়ে থাকত, তারও তো বয়স বৃষ্টির মতো হতো!
   শৌনকের যে গার্লফ্রেন্ড আছে! নাহলে নিশ্চয়ই  তিনি বৃষ্টিকে বউমা করতেন!
          এসব তিনি না হয় বুঝলেন! কিন্তু কুচুটে লোকেরা কুচুটেপনা করতে ছাড়বে কেন! এই প্রথম যে কেউ বৃষ্টির সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে অশালীন ইঙ্গিত করল তা নয়। বৃষ্টিকে পাশে নিয়ে রাস্তা-ঘাটে যখন বের হন, কত আজেবাজে লোক কানে বিষ ঢেলে দিয়ে যায়! 'বাহ্ দাদু, মালটা বেশ জুটিয়েছ তো!' ইচ্ছে করে সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে গিয়ে নাকে একটা ঘুষি চালাতে! কিন্তু সেটা আর পারেন কই! বেচারা বৃষ্টিও সেই মুহূর্তে চূড়ান্ত অসহায়! পরক্ষণেই অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে পাহাড়ি ঝর্ণার মতো খিল খিল করে হাসতে হাসতে বলে, 'কাকু তুমি কিছু মনে করো না!  এরকম দুপেয়ে জন্তু চারপাশে হাজার হাজার!'
   কিন্তু তারা তো সবাই রাস্তাঘাটে! এ যে একেবারে বাড়ি বয়ে এসে!
যথারীতি আজ বইমেলা ঢুকে একটুও ভালো লাগছিল না প্রদোষের। আর অদ্ভুত ব্যাপার, বৃষ্টিও সেটা কিছুক্ষণের মধ্যে বুঝতে পেরে বলল, 'কি ব্যাপার কাকু! আজ তুমি এত গম্ভীর কেন?'
   -- এমনি!
   -- এমনি আবার কি! এমনি কিছু হয় নাকি? নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে! বলো তুমি আগে! কাকিমণির সঙ্গে ঝগড়া করেছ? কাকিমণিকে এক্ষুণি আমি ফোন করব! বলতে বলতেই সেলফোন অন করতে যায়। প্রদোষ তাকে বাধা দিয়ে বলেন, 'না না, এখন ফোন করিস না! অনিন্দিতা ব্যস্ত আছে। ওর সঙ্গে আমার কিছু হয়নি! অন্য আর একজনের সঙ্গে...!'
   -- কার সঙ্গে, কি হয়েছে? চলো মাঠের ওদিকটা ফাঁকা আছে। গিয়ে বসি। বলতে বলতে কাকুর একটা হাত ধরে টানতে টানতে সবুজ ঘাসের গালিচায় বসে পড়ে।
   মাথা নিচু করে থাকেন প্রদোষ। মুখে কোনও কথা সরেনা।
   -- কি হল! বলো কি হয়েছে?
   প্রদোষ এবার বৃষ্টির চোখে চোখ রাখেন। 'আর বলিস না! আজ সকালে এক ছোকরা এসে হাজির। অনেকদিন আগে আমার কাছে গান শিখতে চেয়েছিল। আমি তখন না করেছিলাম। এসে রেগেমেগে বলল, 'বৃষ্টিকে গান শেখাচ্ছেন, আমাকে শেখাবেন না কেন?'
   -- নাম কি ছেলেটার?
   -- নাম জিজ্ঞেস করা হয়নি!
   -- কেমন দেখতে বলতো?
   -- তোর মতোই বয়স। বা দু এক বছরের বড়। লম্বা ফর্সা ছিপছিপে! নীল রঙের রিপড জিনস, টি সার্ট পরেছিল। চুলগুলো কোঁকড়ানো। ….
   -- , উ-ষ্ণি-ষ! খিল খিল করে হেসে ওঠে বৃষ্টি। হাসতে হাসতেই বলে, বাঁদরটা তোমাকে জ্বালাতে এসেছিল? ঠিক আছে, ওকে আমি বকে দেব। দু চার ঘা কষিয়েও দিতে পারি! আর বলোনা! আমাকেও কি কম জ্বালায়! বোধহয় প্রেম ট্রেম করতে চায়! আমি একদম পাত্তা দিইনা! ইলেভেন টুয়েলভে তো এক স্কুলেই পড়তাম! তখন থেকেই চিনি। ডিগ্রি কোর্সে আমার সঙ্গেই ইংরাজি অনার্স নিয়েছে। এইচ এসে সায়েন্স ছিল। রেজাল্টও ভালো! ইচ্ছে করলেই জয়েন্ট দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রাই করতে পারত! ....
   বৃষ্টি আরও অনেক কথা বলে যায়। কিন্তু প্রদোষ সেসব কিছুই শুনছিলেন না। হঠাৎ কেমন আনমনা হয়ে গেলেন।
   ফেরার পথে বিরিয়ানি রেজালার গুণে বা ভালো বই কেনার আনন্দে বা সময়ের অনিবার্যতায় প্রদোষ সামলে নিয়েছিলেন নিজেকে। সকালের বিচ্ছিরি ঘটনাটা, তারপর বৃষ্টির সঙ্গে উষ্ণিষের সম্পর্কের কারণে মনের যে খিঁচখিঁচানি, সেটা অনেকটাই দূর হয়ে গিয়েছিল। ট্যাক্সির জানলা দিয়ে শহরের শোভা দেখতে দেখতে উদাত্ত কণ্ঠে তিনি গান ধরলেন। 'আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও...!'
   বৃষ্টিও তাঁর সঙ্গে গলা ছেড়ে গাইতে লাগল। 'আপনাকে এই লুকিয়ে রাখা ধুলার ঢাকা ...'
   -- কাকু আমরা এত চেঁচিয়ে গান গাইছি, পুলিশ ধরবে না তো! বলবে দুটো পাগলা পাগলি ট্যাক্সিতে যাচ্ছে, এক্ষুণি এদের পাগলা গারদে ঢোকাও! বলে হি হি করে হেসে ফেলল।
   প্রদোষও হাসলেন। তবে গান থামালেন না। গান শেষ হলে জিজ্ঞেস করলেন, 'তোর সঙ্গে উষ্ণিষের কবে দেখা হবে রে?'
   -- কালই কলেজে আসবে। এলেই … বলে ঘুষি দেখায় বৃষ্টি।
   -- না না গায়ে হাত দিস না! বরং আমার কাছে একদিন আসতে বলিস!
   -- ঠিক আছে! তুমিই ওকে আচ্ছাসে …
   -- ছি! মারব কেন! বরং ভাবছি … একটু থামেন প্রদোষ।
   -- কি ভাবছ?
   -- ভাবছি তোর সঙ্গেই ওকে গান শেখাব।
   -- সত্যি কাকু! সত্যি! আমার গ্রেট কাকু! সুইট কাকু! বলে চলন্ত গাড়িতেই প্রদোষের দিকে ঝুঁকে  তাঁর দুই গালে চকাস চকাস করে চুমু খায় বৃষ্টি। কল কল করে বলে যায়, 'কি আনন্দ যে হবে ওর! দেখবে কাল সন্ধেতেই তোমার কাছে ছুটে আসবে। এমনিতে ছেলেটা ভালো! শুধু মাঝে মাঝে মাথা গরম করে। কাল কমনরুমে যখন গান গাইছিলাম, জিজ্ঞেস করল, কার কাছে গান শিখিস? বললাম। শুনেই মুখটা ভেটকে  থাকল। ...তোমার কাছে গান শিখতে চেয়েছিল, আমাকে কই একবারও বলেনি! আচ্ছা শয়তান তো! …
   আরও অনেক কথা বলে যায় বৃষ্টি।
   সেসব শুনছিলেন প্রদোষ, অথবা শুনছিলেন না। তবে মনে মনে তৃপ্তি অনুভব করছিলেন। বাঁধতে গেলে তো ছাড়তে হয়! ছাড়তেই হয়!

pallabkumarparui@gmail.com

No comments:

Post a Comment