...অবাস্তব ডায়েরী
১
“গুড মর্নিং কলকাতা ... রবিবারের ছুটির দুপুর কাটিয়ে আজ আবার ব্যস্ততার সোমবার।
আর সোমবারের সকাল মানেই প্রোজেস্টের ডেডলাইন , রাগী বস , অফিসের একঘেয়েমি , আর কলকাতার রাস্তায় ব্যস্ততার যানজট। আর এই
একঘেয়েমি জীবনে একটু মন ভালো করতে এসে গেছি আমি আর.জে ঝিলম। তোমরা শুনছো ৯৯.৭
রেডিও বাংলা , মনে প্রাণে বাঙলি। আজ থেকে শুরু হচ্ছে একটা নতুন শো ,যার নাম কাহিনী, যা গল্প হলেও সুন্দর। আমাদের সাদা-কালো বর্ণহীন
রোজকার জীবনে মাঝেমধ্যেই পাওয়া যায় রঙিন আলোর ছটা। বাসে ,
ট্রামে ,ট্রেনে যেতে যেতে
পাশের সিটে বা একটু দূরে বসে থাকা মানুষটাকে একঝলক দেখে মনের মধ্যে যেন রামধনু
ফুটে ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো অজানা মানুষের সাথে কিছুক্ষুণ গল্প করে মনের সব
কষ্ট দূর হয়ে যায়। সত্যি এ সব কিছুই আমাদের কাছে এক একটা গল্প। যার পরিণতি কারুর
জীবনে ঘটে আর কারুর জীবনে গল্প হয়েই কেটে গেছে।
এরম কোনো গল্প তোমার মনের মধ্যে থাকলে জানাতে পারো আমাকে ২২২৩৩৩১১৬৬ এই
নম্বরে ফোন করে। এখন সময় হয়েছে পরপর দুটো গানের , তারপর ফিরে আসছি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া এরম একটা
গল্প নিয়ে। শুনতে থাকো ৯৯.৭ রেডিও বাংলা , মনে প্রাণে বাঙালি।” গানের ট্র্যাক সেট করে
হেডফোনটা কান থেকে নামিয়ে কফি হাতে ঝিলম ভাবতে লাগলো চার বছর আগের সেই
কাহিনী।
২
সকাল থেকে বিষন্ন
গুমোট ভাবটা চারদিকে ছেয়ে আছে। একপশলা বৃষ্টি হলেও সিলিংফ্যানটা এখনো দাপটের সাথে
ঘুরছে। কাজ না থাকলে কলকাতাবাসী সহজে ঘরের বাইরে বেরোচ্ছে না। কিন্তু উপায় নেই
ঈশানের। কলেজে আজকে যেতেই হবে ,নইলে এসাইনমেন্টটা জমা দিতে পারবে না। প্রফেসর
বোস যা কড়া ধাতের মানুষ। আর হয়তো নেবেই না।
তাই সাতপাঁচ ভেবে বাস ধরার জন্য রহনা হল ঈশান। বৃষ্টিটা এখন কিছুটা কম হলেও হাওয়া দিচ্ছে খুব , আকাশ কালো হয়ে
থাকলেও বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা নেই। ভাগ্য ঈশানের সহায় ছিল তাই একটু পরেই দেখতে পেল
দূরে কাদা ছিটিয়ে একটা বাস আসছে। এমনিতে এই সময় ফাঁকা বাস পাওয়া দুস্কর ,কিন্তু আজ ভাগ্য
সুপ্রসন্ন বাসটা মোটামুটি ফাঁকাই আছে। তাছাড়া বাসে ও ছাড়া আরেকজন মেয়েই উঠেছে। বাস
এ যে কজন বসে আছে তারা সবাই জানলার ধরে সিট্ দখল করে বসে আছে। একটা সিট ফাঁকা , ঈশান ওই সিটে
বসতে গেলে ওর সাথে ওঠা মেয়েটা অন্যায়ভাবে ওই সিটে বসার দাবি জানায়। তাই একটু
বাকবিতন্ডা ছড়ায়। তাও মেয়েটা অনুরোধ করলে একটা ব্যাপার ছিল ,তার গলায় ছিল
আদেশের সুর , ঈশানের ভালো লাগেনি সেও সিটটা ছাড়েনি।
মেয়েটা বাধ্য হয়ে
আর কিছু না বলে ওর পাশেই এসে বসল। ঈশান
কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে যাচ্ছিল। মাঝে মাঝে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখে
মেয়েটা মুখ গোমড়া করে বসে আছে। তা দেখে বেশ মায়া হল ঈশানের। শেষমেশ ঈশান সিটটা
ছেড়ে দিল। মেয়েটা শুখনো ভদ্রতা দেখিয়ে জানলার
ধারে এসে বসলো। তার চোখেমুখে যেন খুশির ঝিলিক দিচ্ছে। জানলার সিটে বসে মেয়েটা
প্রথমবার কথা বলল।
ঈশানের দিকে
তাকিয়ে বলল “কোথায় যাচ্ছেন ?”
ঈশান বলল “আমি
যাচ্ছি কলেজে , প্রেসিডেন্সিতে পড়ি , আজ কলেজের এসাইনমেন্ট লাস্ট ডেট তাই বাধ্য হয়ে
বেরোতে হল। আপনি কোথায় যাচ্ছেন ?”
মেয়েটি বলল “আমি
যাচ্ছি , গড়িয়া , আমার পিসির বাড়ি।
“
ঈশান বলল “কিছু
মনে না করলে আপনাকে আমি তুমি বলে ডাকতে পারি “
মেয়েটি ঘাড়
নাড়িয়ে বলল “স্বছন্দে “
তারপর কিছুক্ষুণ
চুপ থেকে মেয়েটি বলল “তোমার ফোনের স্ক্রিনে গানের নাম দেখে বুঝছি , তুমি পুরোনো
হিন্দি গানের ফ্যান। আমারো খুব ভালো লাগে।
সবথেকে প্রিয় গান কি?”
ঈশান বলল “পুরোনো
হিন্দি গানের মধ্যে একটা আমেজ আছে, যেটা এখনকার গানে মিসিং, আর পুরোনো দিনের
সব গানই খুব ভালো লাগে।”
এভাবেই শুরু হল
তাদের গান নিয়ে গল্প। সেখান থেকে তাদের গল্প পাখা মেলল সাহিত্যের গভীরে। সেখান
থেকে পরিবারের গল্প, ঘুরতে যাওয়ার গল্প , সেখান থেকে বান্ধবীর বিয়ের গল্প , বন্ধুর গল্প , সবমিলিয়ে পাক্কা
১ ঘন্টা। জ্যামের জন্য বাসও চলছে ধিকি ধিকি করে । সবে শ্যামবাজার পেরিয়েছে। ইতিমধ্যে ঈশান জেনে ফেলেছে মেয়েটার নাম , ওর নাম ঝিলম
সেনগুপ্ত। পাইকপাড়ায় বাড়ি। জয়পুরিয়ায়
ইংলিশ অনার্স নিয়ে পড়ছে। ঈশানও জানালো ওর নাম , আর প্রেসিডেন্সিতে এখন ম্যাথ নিয়ে অনার্স করছে
সেটাও অবশ্য জানালো। তাদের গল্পের তুড়িতে , হাসির জোয়ারে বোঝার জো নেই যে তাদের পরিচয়ের
বয়স মাত্র ১ ঘন্টা। যেন কত যুগের পরিচয় তাদের ,কত আপন একে অপরের।
হঠাৎ ঝিলমের একটা
কথা ঈশানকে বেশ অপ্রস্তুত করে দিল। ঝিলম
প্রশ্ন করলো “গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি ?”
ঈশান কিছুক্ষন
চুপ থেকে প্রশ্নটা এড়িয়ে যেতে চাইলো। আসলে মেয়েটার সাথে কথা বলতে বলতে একটা ফিলিংস
আসছিল। ওই যে বলে লাভ এত ফার্স্ট
সাইট। যদিও এক্ষেত্রে লাভের জায়গায় ক্রাশ
হবে।
ঝিলম হেসে বলল “ও তার মানে সব কিছুই একতরফা।
তাইতো? “
ঈশান বলল “আসলে
কোনোদিনও ভালোলাগার কথাই ভাবিনি। আসলে আমি জোর করে কাউকে পাওয়ার চেষ্টা করিনা। জোর
করে পাওয়া ভালোবাসা কোনোদিনও টেকে না। যদি সে ভাগ্যে থাকে তবে সে এমনি আসবে।
ভালোলাগা আর ভালোবাসা এক জিনিস না। ভালোলাগা একটা ইন্স্যাচুরেশন , আর কিছু না। “
ঝিলম বলল “কিন্তু
তুমি যদি সত্যি কাউকে ভালোবাসো , তাকে পাওয়ার জন্য , তাকে আটকানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। “
ঈশান শুধু মাথা
নাড়িয়ে বলল “যদি সত্যি আমার জীবনে ওরম কেউ আসে , তবে আমি তাকে পাওয়ার জন্য নিজের সাধ্যমত চেষ্টা
করবো। “
এরই মধ্যে বাস
কলেজ স্ট্রিটের কাছাকাছি চলে এসেছে , ঈশানকে এবার নামতে হবে। ঈশান বলল “এবার আমাকে
নামতে হবে। আচ্ছা একটা কথা বলবো ?”
ঝিলম বলল “হ্যা
বল “
“তোমার ভয়েসটা খুব আকর্ষণীয়। পারলে ভয়েসের ওপর কাজ করতে পারো। আর হ্যা তোমার
সাথে কথা বলে দারুন লাগলো। তোমার ফোন নম্বরটা দাও। পড়ে ফোনে কথা হবে। “ এই বলে ঈশান ফোনের কিপ্যাড
খুলল।
ততক্ষুনে কলেজ
স্ট্রিট চলে এসেছে। ঝিলম তাড়াতড়ি করে নম্বর বললে ঈশান ফোনে টাইপ করে নিল। ভাবলো
নেমে সেভ করে নেবে। ঝিলম মুচকি হেসে বলল “তাহলে এভাবেই সারাজীবন চালাবে?? কাউকে ভালোই
বাসবে না???”
তাড়াহুড়ো করে
নামতে নামতে ঈশান শুধু বলল “এর উত্তরটা নাহোক
ফোনেই বলবো তোমাকে। “
ঝিলম শুধু বলল
“আমি তোমার উত্তরের অপেক্ষায় থাকবো”.
৩
বাস থেকে নেমে
ঈশান ফোনটা সেভ করতে গিয়ে দেখলো মেয়েটার নম্বরের শেষ তিনটে ডিজিটই তাড়াহুড়োর বশে
টাইপ করেনি। এদিকে বাসটাও তাকে ছেড়ে অনেকদূর চলে গেছে। এখন কি করবে সে। ঝিলম তো
অপেক্ষা করবে তার ফোনের। ইস তাড়াহুড়ো করে নামাটাই ভুল হয়েছে। কলেজে গিয়ে শুনলো
আজ ক্লাস ক্যান্সেল হয়েছে। তাই প্রফেসরকে এসাইনমেন্ট দিয়ে বাড়ি চলে এল ও। বাড়ি
ফিরে বারবার মনে পড়তে লাগলো ঝিলমের কথা। ভাবলো কাল একবার পাইকপাড়ায় গিয়ে খোঁজ
করবে। কিন্তু ঝিলমের বাড়ি তো সঠিক ভাবে চেনে না। কি করে খুঁজবে তার বাড়ি।
দুদিন ভেবে কোনো
কূলকিনারা পেল না ঈশান। তারপর কোনো উপায় না দেখে সে নিল তার জীবনের সব থেকে বড়
আর বোকা সিদ্ধান্ত। লাস্টে তিনটে ডিজিট রেন্দম বসিয়ে সে কল করবে, কোনো না কোনো বার
ঝিলমকে পাবে সে। তাতে যত সময় লাগে লাগুক। কিন্তু তাতেও কম করে ১০০০০ নম্বর
আছে। যাই হোক হাল ছেড়ে দিলে হবে না, একটা চেষ্টা করে
তো দেখা যায়।
দেখতে দেখতে এক
বছর পেরিয়ে গেছে। এই একবছরে তার আশার বেলুন কয়েকবার ফুলে আবার চুপসে গেছে। কিছু
ফোন নম্বর এক্সিস্টি করে না। আবার অনেকেই তার ফোন মুখের ওপর কেটে দিয়েছে। অনেকে
তো তাকে ভালো মন্দ কথাও শুনিয়েছে। একবার তো ভুল করে একজন বয়স্ক লোককে ফোন করেছিল।
সে আবার কানে শোনে কম, যতবারই ঈশান ঝিলমের নাম বলেছে ততবার বলছে “না
আমাকে বাবা তুমি তো কিছু দাওনি, কি দেবার কথা বলছো” বাধ্য হয় ঈশান নিজেই ফোন
কেটে দেয়।
আরেকবার একজন
পুলিশ অফিসারকে কল করে ফেলেছিল। সে আবার ভুল বুঝে মিসিং ডায়েরী করে ফেলতে
যাচ্ছিল। তারপর ঈশান বুঝিয়ে শুনিয়ে তাকে শান্ত করে। তারপর আবার সেই পুলিশ অফিসার
তাকে কড়া গলায় বলে, এভাবে মেয়ের নম্বরের নামে যাকে তাকে হ্যারাস
করতে লজ্জা করে না, দেবো নাকি গারদে পুড়ে। একপ্রকার অনেক সরি তরি
বলে ঈশান সে যাত্রায় বেঁচেছিল।
দুজন আবার জানিয়েছিল সে ঝিলম বলছে। কিন্তু এই ঝিলম
যে সেই ঝিলম না টা বুঝতে অসুবিধা হয়নিi উভয়পক্ষেরী। শেষে একপ্রকার বাধ্য হয়ে হাল ছেড়ে
দিল ঈশান। ঝিলম কে পাওয়া তার ভাগ্যে নেই। মাঝে মাঝে ভাবে ঝিলমকে একদিন খুঁজে
পাবেই সে। কিন্তু সেই দিন আর আসে না।
৪
প্রায় ৫ বছর
পেরিয়ে গেছে। ঈশান একটা গভমেন্ট অফিসে চাকরি পেয়েছে। শুক্রবার একটা অফিসের কাজে
সে গেছিল মেদেনিপুর। আজ সোমবার ও ফিরছে কলকাতা। নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করছিল। গাড়িতে
হালকা গান চলছিল। কিন্তু একই গান বারবার শুনতে শুনতে বোরিং হয়ে গানটা বন্ধ করে
রেডিও অন করল ঈশান। রেডিওতে একটা নতুন বাংলা গান হচ্ছে। গানটা শেষ হতে ঈশান শুনলো
"ওয়েল কাম ব্যাক বন্ধুরা, পরপর দুটো গানের পর আবার আমি এসে গেছি আরজে
ঝিলম। তোমাদের যেটা বলে ব্রেক নিয়েছিলাম আমার জীবনে ঘটে যাওয়া এক কাহিনী আজ
তোমাদের সাথে শেয়ার করবো। আর তার মাঝে তোমাদেরও যদি এরম কোনো গল্প থেকে থাকে তবে
তোমরাও শেয়ার করতে পারো আমাকে আমাদের নম্বরে ফোন করে। কে বলতে পারে হয়তো সেই মনের মানুষটা
তোমার জন্য এখনও অপেক্ষা করছে, সেও শুনছে তোমার কাহিনী। তবে শুরু করা যাক আমার
কাহিনী।
আরজে ঝিলম, এই ঝিলম কি সেই
ঝিলম, যাকে সে আজও
খুঁজছে। কি জানি ঝিলম নামে অনেক মেয়েই আছে। মনে মনে ভাবলো ঈশান। কিন্তু ভুলটা
ভাঙলো আরজে ঝিলমের কাহিনী শুনে। আরে এ কাহিনী তো তার চেনা। এই কাহিনীর প্রধান নায়ক
আর কেউ না সে নিজে। সেই ৬ বছর আগে বাসে দেখা হওয়াটা মনে পড়ে গেল ঈশানের। ঝিলম
এখনও তার কথা মনে রেখেছে, এখনও তার জন্য অপেক্ষা করছে। এটা ভেবেই মুখে
একটা হালকা হাসি খেলে গেল তার। ঝিলমের কাহিনীটা শেষ হতেই আর কিছু না ভেবে গাড়িটা
রাস্তার ধারে পার্ক করে রেডিও বাংলার ফোন নম্বরে ডায়েল করলো ঈশান। তারপর মিনিটের
প্রতীক্ষা। ওপাশ থেকে একটা গলা ভেসে এল "বলতে বলতে একজন বন্ধু কল করেছে, নমস্কার আপনার
নাম জানতে পারি?"
ঈশান বলল
"আমি ঈশান বলছি, দমদম থেকে"
ঝিলম বলল
"কি অদ্ভুত, আমার কাহিনী যাকে নিয়ে তার নাম আর তোমার নাম তো মিলে গেছে একদম। তোমার জীবনে
এরম কোনো কাহিনী থাকলে তুমি আমাদের শেয়ার
করতে পারো"।
ঈশান বলল
"আমার জীবনের কাহিনীর শুরুটা তোমার সাথে মিলে গেছে। তাই তুমি যেখানে শেষ
করেছো,ওখান থেকেই আমার
কাহিনীর শুরু।"
তারপর ঈশান বলে
গেল বাস থেকে নামার পর ফোন নম্বরের শেষ তিনটে ডিজিট তাড়াহুড়োর চক্করে না টাইপ
করার কথা, অনেকবার চেষ্টা
করেও রং নম্বরে ফোন করার কথা, সব। মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনতে লাগলো ঝিলম। সত্যি
আজও সে ঈশানের প্রতীক্ষায় দিন গোনে, এই বুঝি ঈশান ফোন করবে। কিন্তু না সেই ফোন আর
আসে নি। আজ এত বছর পর রেডিওর মাধ্যমে ঈশান কে সে ফিরে পেয়েছে। ঈশানের কাহিনী শুনতে
শুনতে ঝিলম যেন নিজের মধ্যেই হারিয়ে গেছিল। তাই ঈশানের কথা শেষ হলেও সে চুপ করে
ছিল। কিন্তু বলার মত কোনো উত্তর ঝিলম খুঁজে পেল না শুধু বলল "সত্যি কিছু গল্প
সারাজীবন অসম্পূর্ণই থেকে যায়। কিন্তু এই অসম্পূর্ণ গল্পগুলি খুব সুন্দর হয়ে মনের
মধ্যে থেকে যায়। যখনই মনে আসে মুখে একটা হাসি ফুটে ওঠে"। কিন্তু ঈশান
ঝিলামের এই কথাটা শুনতে পেল না , কারণ কল ড্রপের জন্য ততক্ষনে ফোনটা কেটে গেছে।
ঝিলমের চোখে জল বেরোচ্ছে। চোখের জলটা মুছে সে বলল "এবার সময় হয়েছে একটা
গানের তারপর ফিরে আসছি আবার তোমাদের সাথে আড্ডা দিতে। তোমরা শুনছো ৯৯.৭ রেডিও
বাংলা.." গানের ট্রাকটা চালিয়ে কান থেকে হেডফোনটা খুলল ঝিলম। চোখ দিয়ে তখনও
জল পড়ছে। ঝিলম বুজলো আজ সব কান্না যেন একসাথে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু এই কান্না
দুঃখের না, এই কান্না একটা অসম্পূর্ণ গল্পকে নতুন করে সম্পূর্ণ করার আশার কান্না। সত্যি
ভালোবাসলে তাকে ফিরে পাওয়ার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করা যায়।
রেডিওতে তখন
বাজছে "মেরি আশিকি আভি তুম হি হো"।
No comments:
Post a Comment