1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Thursday, July 1, 2021

আমার বাগান

 

ছবি  : সৌমিক ঘোষ 

আমার বাগান
সৌমিক ঘোষ
বাগান তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত । বাড়ির দক্ষিন দিকে গোলাপ বাগান , পেছন দিকে সবজি ও পুজোর ফুলের বাগান আর ছাদে শীতকালীন মরসুমি ফুলের আয়োজন ।

সারা বছরই প্রায় প্রত্যেক মাসে আগাছা ও ঘাস নির্মূল করা হয়ে থাকে । মাটিও খোঁড়া হয় ।
সেপ্টেম্বর মাসের শেষ থেকেই গোলাপের বিশেষ পরিচর্যা শুরু । প্রথমে পুরোনো ডাল ছেঁটে ফেলা হয় । ব্যবিস্টিন ওষুধ স্প্রে করা হয় । ভোরের দিকে একটু শিশির পরা শুরু হলেই গোড়ার মাটি খুঁড়ে দেওয়া
হয় । দুদিন রোদ ও বাতাস লাগে । তারপর হাড় গুঁড়ো , সুপার ফসফেট , জৈব সার , নিম খইল
১-১-১-১ অনুপাতে মিশিয়ে সব গাছের গোড়ায় দেওয়া হয় । ১৫ দিন অন্তর সরিষার খইল পচিয়ে
পাতলা জলের মিশ্রণে সব গাছে দেওয়া হয় । ১৫ দিন অন্তর নিম তেল স্প্রে করা হয় । এন-পি-কে পাউডার জলে গুলে সব গাছে স্প্রে করা হয় । ডিসেম্বর মাসে ফুলে বাগান ভরে যায় ।

পেছনের সবজি বাগানে শীতের শুরুতে দুই বস্তা গোবর সার গুঁড়ো করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় । জমিতে
থাইমেট পাউডার ছড়ানো হয় । এটি মারাত্মক বিষাক্ত । সাবধান । জমিতে সবরকম ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ মেরে ফেলে । পালং – এর দানা আগের দিন জলে ভিজিয়ে রাখা হয় । পরের দিন মাটিতে ছড়িয়ে হালকা করে মাটি ঘেঁটে দিতে হবে । লাউয়ের দানা বসানো হয় । বেগুন , লঙ্কা , টমাটো , ফুলকপি –এর চারা ১ হাত দূরত্বে থাকে । সুপার সোনাটা স্প্রে করা হয় ১৫ দিন অন্তর । একটু ডি-এ-পি দানা গোড়ায় দিতে হয় । ১৫ দিন অন্তর সরিষার খইল পচা জল দেওয়া হয় ।

পুজোর ফুলের গাছে সারা বছর জৈব সার , সুপার ফসফেট , সরিষার খইল মিশিয়ে দেওয়া হয় । ১৫ দিন অন্তর একতারা ওষুধ জলে গুলে স্প্রে করা হয় । এছাড়া রোগোর স্প্রে করা হয় । জবা , টগর , গন্ধরাজ , কাঞ্চন , আকন্দ , কুন্দ , লঙ্কা জবা ,স্থল পদ্ম , বেল , জুঁই সারা বছর নানা সময়ে পুজোর ফুলের যোগান দেয় । বর্ষার আগে এইসব গাছের গোড়ায় গোবর সার মেশানো দোঁয়াশ মাটি উঁচু করে দিতে হয় ।


জুলাই – আগস্ট মাসে চন্দ্রমল্লিকা মাদার গাছের পুরোনো ডাল কেটে ফেলা হয় । নতুন শাখা গজালেই কেটে একদম পাউডার মাটিতে হার্মোন পাউডার লাগিয়ে বসানো হয় । দিন সাতেক পরে শেকড় গজিয়ে যায় । গোবর সার মেশানো টবের মাটিতে বসানো হয় । একটু ডি-এ-পি দানা ও সরিষার খইল পচা জল দেওয়া হয় । নভেম্বর মাসের শুরুতে সব টব রোদে দেওয়া হয় । দোঁয়াশ মাটি ও গোবর সার রোদে শুকোনো হয় । মিশিয়ে চেলে টবে ভর্তি করা হয় । একটু ঠান্ডা পড়লে ভালো বৈশিষ্ট্যের চারা আনা হয় । ডালিয়া , ইনকা , ফিটুনিয়া , অ্যাস্টার , ফ্লক্স , ডাইনথাস , এন্টিরাম , সিনেরিয়া , গ্যাজেলিয়া , জারবেরা , স্প্যাঞ্জি , সালভিয়া আর চন্দ্রমল্লিকা সারা ছাদ ভরিয়ে রাখে রঙিন ক্যানভাসে । এদের বাড় ঠিক রাখার জন্য বিকালে ২-৪ টি ইউরিয়া দানা প্রথম দিকে দেওয়া হয় । পরে ডি-এ-পি দানা দেওয়া হয় । ৭ দিন অন্তর এন-পি-কে পাউডার জলে গুলে স্প্রে করা হয় । রোগোর স্প্রে করা হয় । রাতের দিকে শুঁয়োপোকা ও অন্য লার্ভারা গাছের পাতা খেতে আসে । রাতে গাছে নজর রাখতে

হয় । তামাক পাতা ভেজানো জল দিলে উপকার পাওয়া যায় । ডিসেম্বর মাস থেকে ফুল ফোটা শুরু হয় । ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত ফুল থাকে । ঠিকমতো জল দিলে ও পর্যাপ্ত ছায়ার ব্যবস্থা থাকলে খোলা ছাদে অনেকদিন ফিটুনিয়া সতেজ থাকে । শীতের শেষে টব থেকে মাটি ঢেলে শুকিয়ে বস্তায় রাখা হয় । টবগুলো রোদে রেখে তুলে রাখা হয় ।

গাছের জন্য আমরা – আমাদের জন্য গাছ – সত্যি , মন ভালো করার জন্য , মন ভালো করতে , মন ভালোর সঙ্গী --- একটুখানি ‘বাগান’ ।
ছবি  : সৌমিক ঘোষ 

ছবি  : সৌমিক ঘোষ 



ছবি  : সৌমিক ঘোষ 

ছবি  : সৌমিক ঘোষ 









soumikghosh57@gmail.com
হুগলী

No comments:

Post a Comment