![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
সরোর মন খারাপ (প্যান্ডেমিক পরিস্থিতি )
গার্গী চৌধুরী
“সরো,ও সরো,ওঠ মা
দেরী হয়ে যাবে “
দেবী দূর্গা আদুরে কন্যাকে আজ একটু সকাল সকাল ঘুম থেকে তুলে দিলেন।
“পঞ্চমী অনেকক্ষণ লেগে গেছে।
রাজ হাঁস কখন চান টান করে রেডি।
বাংলায় ছেলে মেয়েরা ব্যাস্ত তোকে পুজো করবে বলে,আর তোর কোনো তাড়া নেই।“
“মনটা ভালো নেই মা,
এবার পুজোয় যেতে
ইচ্ছে করছে না”
“কেন রে,কি হল?”
“দুবছর ধরে স্কুল না গিয়ে ছেলে মেয়েদের পড়াশুনোর খুব খারাপ অবস্থা।“
“তবে যে শুনলাম,পড়াশোনা হচ্ছে কম্পিউটারে কি যেন শুনলাম অনলাইন ক্লাস হচ্ছে ইস্কুলে “
“তাতে কিছুজনের উপকার হচ্ছে,সবার পক্ষে অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব নয়।
অতো খরচা করার সামর্থ্য সবার নেই। কত বাচ্চার পড়াশুনো বন্ধ।শিশু শ্রমিক অনেকগুণ বেড়ে গেছে।“
“ইসস্ !!! কি বলছিস সরো “
“আর সব হয়েছে তোমার গুণবতি লক্ষ্মীর গুণে “
“কি বলছিস সরো,লক্ষ্মীর কী দোষ?”
“কেন প্রতি বৃহস্পতিবার চাল কলা পায়, কিন্তু আর্থিক বৈষম্য ঘোচানোর কোনো ব্যাবস্থাই নিল না”
“চুপ কর,সক্কাল সক্কাল ঝগড়া না বাঁধালেই নয় “
লক্ষ্মীর আবির্ভাব অনেকক্ষণ আগেই ঘটেছে, তা কারুর নজরে পরেনি।
“দেখেছো বাবা,সরো কেমন মায়ের কাছে আমার নামে নিন্দা করছে। আমিও সব নজর রাখি।
তোর অতি শিক্ষিত গুণীজনেরা কি করলো?
করোনার নিয়ম কানুন কিচ্ছু মানে নি।
আর আমাদের তৈল মর্দণ করার জন্য কখনো এই মেলা কখনো ওই উৎসব করে বেড়াচ্ছে।“
“শিক্ষা দেবার কাজ আমার, দিদি।
শিক্ষাকে বোধ ও বুদ্ধিতে পরিণত করার কাজ অনেকটাই গণুর “
গণপতি আর দূর্গার অনেকক্ষণ দৃষ্টি বিনিময় চলছিল।
তবে দূর্গার বিশ্বাস ও ঠিক পরিস্থিতি সামলে দেবে।
“হুমম্,বনু ঠিকই বলেছে।
তবে কি জানিস বিশুদার কৃপায় বাচ্চা বড়ো,সবার বড্ড মোবাইল দেখার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।
বিশুদা অনলাইন শিক্ষা ব্যাবস্থা ভালোই করলো কিন্ত অভ্যাস গুলো সবার খারাপ হয়ে গেল।“
“ভাই,তুই কিছু কর না। বোধ বুদ্ধির জেয়গাটা যেন সবার ঠিক থাকে “
“চিন্তা করিসনা,আমি একটা কিছু করবো যাতে মন ও মনন দুদিকেই সুপ্রভাব পরে।
নে,তুই তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে পর।
হাঁসদা অনেকক্ষণ রেডি।“
“কোয়াক,কোয়াক” রাজহাঁসের ওপর যেই সরস্বতী বসতে যাবে অমনি নারদের আগমন।
“নারদ,নারদ”
কী দিদিমণি,সব ঠিক আছে?”
দূর্গা তাড়াতাড়ি বীণাটা সরোর হাতে দিয়ে বলল “হ্যাঁ গো, সব ঠিকই আছে “
সরস্বতী সবাইকে “টাটা “ করে হুসস্ করে মর্ত্যে আবির্ভাব করলেন।
No comments:
Post a Comment