![]() |
ছবি-আন্তর্জাল |
প্রফেসর রাজেশ বিশ্ব উষ্ণায়নের উপর বক্তৃতা দিলেন। বললেন, এই বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ, তার প্রভাব এবং কীভাবে এর সমাধন করা সম্ভব। এরপর বাড়ি ফেরার পথ ধরলেন। হঠাৎ ফোন। তার বউ রীতার ফোন। ধরতেই হুকুম এলো, বাড়িতে ঢোকার সময় যেন দুটো গরমমশলার প্যাকেট কিনে আনে কারণ আজ রাতে মাংস রান্না করছে সে। সব কিছু কিনেছিল। শুধু ওটাই ভুলে গেছে। নিয়ে যাবো বলে রাজেশ ফোন কেটে দেয়। এরপর বাড়িতে এসে সোফার উপর ফাইলটা রেখে রান্নাঘরে গিয়ে গরমমশলা রীতার হাতে দিতেই সে বিরক্তি নিয়ে বললো
- দুটো প্যাকেট আনতে বলেছিলাম। আর নিয়ে আসলে একটা। একটা কাজও যদি তোমাকে দিয়ে হয়!
চুপচাপ কথা হজম করে রান্না ঘর থেকে সে বেরিয়ে আসতেই পাশের ঘর থেকে তার মেয়ে ডাকলো। মেয়ের কাছে যেতেই সে বলে
- বাবা, কবে থেকে বলছি তোমাকে যে চিলড্রেন্সে নিয়ে চলো। তোমাকে যে খেলনাটির কথা বলেছিলাম সেটা কি বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর যাবে।
মেয়ের কাছেও এক প্রকার কথা শুনে কিছুই না বলে ওয়াশ রুমে গিয়ে দেখে কল থেকে জল খুব ধীরে পড়ছে। কিছুটা বিরক্তি নিয়ে সে বলে
- কলে জল পড়ছে না। একটু দেখে তো রাখতে পারো। ট্যাঙ্কটা ফুল আছে কিনা দেখে তো আসতে পারো।
শুনে রীতা বলে - কবে থেকে পাম্পটা গণ্ডগোল করছে। চালু করলেই সোঁ সোঁ শব্দ করে কিছুক্ষণ চলার পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তোমাকে কতবার বলতে হবে শুনি যে পাম্পটা মেকানিককে দেখাও।
রাজেশ চুপসে গিয়ে কোনোমতে ধরে রাখা ড্রামের অল্প জলে হাতমুখ ধুয়ে বেরিয়ে এসে হল ঘরের দিকে যেতেই তার মা দোতলা থেকে নামতে-নামতে বলে
- হ্যাঁরে, আমার তো প্রেসারের ওষুধ শেষের মুখে। ডাক্তারের কাছে কবে নিয়ে যাবি। এর মধ্যে তো আবার ব্লাড টেস্টটা করাতে হবে। সুগারের অবস্থা কীরকম কে জানে!
সবটা শুনে রাজেশ ধপ করে হল ঘরের সোফায় বসে পড়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রীতার দিয়ে যাওয়া গরম চায়ে মুখ দিতে গিয়ে জিভে ছ্যাঁকা খেয়ে সোফার গায়ে হেলান দিয়ে হালকা মুখ বেঁকিয়ে ভাবতে থাকে যে বিশ্ব উষ্ণায়নের জের এখন বাইরের পরিবেশ থেকে সংসারে ঢুকে পড়ে তার খেল দেখাতে শুরু করেছে ...
লেখক - সোমনাথ বেনিয়া
somnathbenia14@gmail.com
Khub bhalo laglo.DR.TARAK MAJUMDAR.EDITOR-SAHITYA DARPAN PATRIKA.
ReplyDeleteBhison bhalo laglo
ReplyDelete