... দেব চক্রবর্তী
মাঝরাতে হঠাৎ বুকে ব্যথা । বুকের বাঁ
দিকটায় যেন
পিন ফুটিয়ে দিচ্ছে কেউ । ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরবে এখনি । যন্ত্রণায় ছটফট
করছেন যতীন
।
দেবীকার ঘুম
পাতলা । টের পেয়েই উঠে
বসেছেন বিছানায় । আলো জ্বেলে হাত
রাখলেন স্বামীর বুকে । দেবীকার হাতটা পেয়ে আরো গভীর
ভাবে নিজের বুকের উপর চেপে
ধরলেন যতীন
। তারা বৃদ্ধ-বৃদ্ধা একাই থাকেন । এখন উপায় ! এই
রাতে কাকে
ডাকবে, কী
করবে, ভেবে
অস্থির দেবীকা । যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখে যতীনই তাকে
বললেন, “একশো
দুই ডায়াল করে দেখত !” অথৈ জলে
যেন খড়কুটো পেয়ে
গেলেন দেবীকা । কোনক্রমে নেমে আসেন খাট
থেকে
।
ফোন তুলে
ডায়াল করেন
এক---শূন্য------। মিনিট পনেরর মধ্যেই
বাড়ির বাইরে গাড়ির হর্ণ । দেবীকা দরজা খুলে অবাক
।
দু’জন
লোক ট্রেচার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
।
সঙ্গে একজন
নার্সও ।
“পেশেন্ট কোথায়
?”
দেবীকা নিঃশব্দে
শোবার ঘরে
নিয়ে গেলেন ওদের
।
যন্ত্রণায় ছটফট করতে
করতে ততক্ষণে নিস্তেজ
যতীন । নার্স প্রথমেই
পালস্ দেখল
।
দেখেই বলল,“কুইক !” দু’জন
সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত ক্ষিপ্রতায় ট্রেচারে তুলে নিল যতীনকে । বাইরে আ্যম্বুলেন্স স্টার্ট দেওয়াই ছিল । যতীন
ও দেবীকাকে তুলেই ছুটল । চেতলার গলি ছাড়িয়ে বড়
রাস্তায় পড়তেই গতি বাড়ল আ্যম্বুলেন্সের । মাঝরাতে
কলকাতার রাস্তা প্রায় ফাঁকা । তাই
হাসপাতালে পৌঁছতে বেশি সময় লাগল
না ।হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে দু’জন ডাক্তার যেন তাদের জন্যই অপেক্ষা
করছিল । আ্যম্বুলেন্স থেকে নামানর সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকে পড়ল
যতীনের উপর
।
বুক পরীক্ষা করে নার্সকে নির্দেশ দিল,
এখনি ইনজেকশন দিতে
হবে । নার্স পরপর দু’খানা
ইনজেকশন দিল
।
তারপর দ্রুত বেডে দিয়ে অক্সিজেনের নল ঢুকিয়ে দিল
নাকে ।
সবই
খুব তৎপরতার সঙ্গে ঘটল দেবীকার চোখের সামনে । একটু
থিতু হতেই
দেবীকা চলে
এলেন ভিজিটর্স রুমে
।
সেখানে তার মতই উৎকন্ঠা নিয়ে বসে আছে আরো অনেকে । হাসপাতালে এলে রোগীকে দেখে যত না
কষ্ট হয়, তাদের নিকটাত্মীয়ের উৎকন্ঠা, উদ্বিগ্নভরা মুখগুলো দেখলে আরো বেশি
মন খারাপ হয় ।
এক ঠায়
বেশিক্ষণ বসে
থাকতে পারছেন না দেবীকা । মানসিক উদ্বেগ ও
আশংকা নিয়ে পায়চারি করছেন । এর মধ্যে দু’বার উঁকি
মেরে দেখে
এসেছেন । একজন
নার্স ঠায়
বসে আছে
যতীনের বেডের পাশে । ঘড়ি ধরে
প্রেশার মাপছে আর নোট লিখছে । সকালের দিকে যতীন
বোধহয় একটু
নড়েচড়ে উঠলেন । সঙ্গে সঙ্গে নার্স ছুটল ডক্টর্স রুমে
।
একজন ডাক্তার বেরিয়ে এলেন । যতীনের বুক, প্রেসার চেক্
করার পরই
হাসি ফুটল
তার মুখে । নার্সও ডাক্তারের
মুখের দিকে
তাকিয়ে হাসল
।
সাফল্য ও
তৃপ্তির হাসি
।
একজন মরণাপন্ন মানুষের
জীবন ফিরিয়ে দেবার চেয়ে বড়
তৃপ্তি আর কিইবা হতে পারে ? ডাক্তার হাসি মুখে বেরিয়ে আসছে দেখে দেবীকা এগিয়ে গেলেন । ডাক্তার নিজে থেকেই বললেন, “এ যাত্রায় উনি
বেঁচে গেলেন । আর কোন ভয়
নেই । আপনি
এখন নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরে বিশ্রাম নিন । বিকেলে ভিজিটিং আওয়ারে আসুন, তখন
হয়তো কথাও
বলতে পারবেন !”
ডাক্তারের আশ্বাস পেয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত হলেন
দেবীকা । হালকা মন নিয়ে হাসপাতালের বাইরে এসে দাঁড়ালেন । এখনো পরোপুরি চোখ মেলেনি কলকাতার সকাল । রাতজাগা ক্লান্ত মুখটা আঁচলে মোছার পরই হঠাৎ থমকে
গেলেন । মাথায় হাত দিয়ে বসে
পড়লেন ফুটপাতে । হঠাৎ
মনে পড়ে গেল, মাঝরাতে
ঘর থেকে
বেরবার সময়
তাড়াহুড়োয় সদর
দরজা বন্ধ
করা হয়নি
।
“হাঁ ভগবান ! কী
সর্বনাশই না
ঘটে গেল
আমার !”
তাকে এইভাবে মাথায় হাত দিয়ে
বসে থাকতে দেখে এক ট্যাক্সিচালক ব্রেক কষে দাঁড়াল সামনে । মুখ বাড়িয়ে বলল,”আপনি মাথায় হাত দিয়ে বসে
আছেন কেন? কোথায় যাবেন ?”
দেবীকা সংকোচে বলেন,“যাব চেতলায় । কিন্তু এই মুহূর্তে আমার কাছে কোন
টাকা নেই
যে ! হঠাৎ মাঝরাতে অসুস্থ স্বামীকে
নিয়ে চলে
আসতে হয়েছে ।”
ট্যাক্সিওয়ালা পেছনের দরজা খুলে বলে,“তাতে কী ! বাড়ি
পৌঁছে না
হয় ভাড়া
দেবেন ।”
বিশ্বাস হল
না দেবীকার । বললেন,“তোমাদের মিটার-ফিটার আমি
বুঝি না
বাপু ! শেষে
কত চেয়ে
বসবে !”“আপনার কোন
ভয় নেই
মাসিমা ! উঠে
পড়ুন । মিটারে আর কখনো কারচুপি পাবেন না । ট্যাক্সির গায়ে লেখা নম্বরে ফোন করেও জেনে
নিতে পারেন ।”
দেবীকা আর
কথা বাড়ালেন না । এত
করে বলছে
যখন ! তাড়াতাড়ি বাড়ি
ফেরাটাও জরুরি । এতক্ষণে চোরেরা নিশ্চয় বাড়ি
ফাঁকা করে
দিয়েছে !
সকালের ফাঁকা রাস্তা পেয়ে হু
হু করে
ছুটল ট্যাক্সি । জানালার বাইরে চোখ রাখলেও দেবীকার মন ২০ নম্বর বি সি দাস, চেতলায় । ফিরে গিয়ে
কী যে
দেখতে হবে---!
পাড়ায় ঢুকেই দেবীকা দেখলেন তার বাড়ির সামনে ছোটখাট একটা
জটলা । পুলিশ ভ্যান । কিন্তু পুলিশ কেন ? তবে কি
তার আশংকাই ঠিক ! পাড়ার লোক নিশ্চয় চুরির খবর দিয়েছে পুলিশকে ! ট্যাক্সি থেকে নেমে পুলিশের উদ্দেশ্যে বললেন, “বাড়ি ফাঁকা পেয়ে চোর আমায় পথে বসিয়ে দিল ?”
একজন পুলিশ এগিয়ে এসে বলল,“আপনি ঘরে গিয়ে দেখুন, একটা মাছিও ঢুকতে পারেনি ।”
পুলিশের কথা বিশ্বাস হল না দেবীকার ।
জানতে চাইলেন, “আপনারা খবর পেলেন কী করে ? কে খবর দিল আপনদের ?”
পুলিশটি মৃদু হেসে বলল, “বুঝতে পারছি আপনি খুব টেনশনে আছেন ।
একে রাত জাগা, স্বামীর চিন্তা, তায় আবার ভুল করে সদর দরজা খোলা রেখেই চলে গেছেন ।”
মাথা কাজ করছে না দেবীকার । সব কেমন যেন হেঁয়ালির মত মনে হচ্ছে । মাঝরাতে আ্যম্বুলেন্সে ওঠার সময় কেউ তাদের দেখেনি, কাউকে বলেও যেতে পারেননি । তাহলে কি আর বাড়িটা সারারাত ওরকম ফাঁকা পড়ে থাকত ! দেবীকা এবার অনুরোধের সুরে বললেন,“বিশ্বাস করুন, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না । যেভাবে মাঝরাতে হাসপাতালে ছুটেছি , পাড়ার কাকপক্ষীও টের পায়নি । তাই ভাবছি আপনাদের খবর দিল কে?”
পুলিশ ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে বলল, “আপনিই ।”
“আমি !“
“হ্যাঁ, মনে করে দেখুন, রাত তখন একটা বিয়াল্লিশ, আপনি একশ নম্বর ডায়াল করলেন– ।”
“একশ নম্বর !” দেবীকা বিস্ময়ে বলেন, “কিন্তু আমি তো–--।”
“হ্যাঁ, আ্যম্বুলেন্সের কথা বলেছেন । কিন্তু ভুল করে ডায়াল করেছেন একশতে । যাইহোক, আপনার গলা শুনে আমাদের মনে হয়েছিল, আপনি খুব বিপদে পড়েছেন । আমরা তৎক্ষণাৎ সিএলআইতে আপনাদের নম্বর দেখে নিলাম । টেলিফোন ডিরেকটরি থেকে ঠিকানা নিয়ে হাসপাতালে ফোন করে আ্যম্বুলেন্স পাঠাতে বললাম ।
”
দেবীকা কোন কথা খুঁজে পেলেন না ।
কৃতজ্ঞতায় ভরা চোখ নিয়ে তাকালেন শুধু ।
পুলিশ হাত জোড় করে বলল,“এবার আমাদের যেতে
হবে ।
আপনি একবার দেখেনিন, ঘরের জিনিসপত্র সব ঠিকঠাক আছে কিনা ।”
দেবীকা হাত জোড় করে বললেন, “কী বলে যে আপনাদের ধন্যবাদ জানাব !”
“না না, ধন্যবাদ দেবার কিছু নেই ।
এটা আমাদের কর্তব্য ।
জনগণের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষাই তো আমাদের কাজ ।”
পুলিশ চলে গেলে দেবীকা উৎসুক প্রতিবেশীদের দিকে তাকালেন ।
মাঝবয়সি দীনেশবাবু এগিয়ে এসে বললেন, “পুলিশ দেখছি সব খবরই রাখে ! আপনারা বাড়িতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা একা থাকেন, সেটাও জানে ।
থানার তথ্য ভান্ডারে নাকি এই ওয়ার্ডের প্রত্যেকটা বাড়ির নাড়ি-নক্ষত্র লোড করা আছে ।
সেখান থেকেই জেনেছে বলল ।
আপনাদের যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তা ভেবেই চেতলা থানা থেকে পুলিশ পাঠিয়েছে ।”
ক্লান্ত শরীরে দেবীকা আর কথা বাড়াতে চাইলেন না ।
ঘরে ঢুকে সোফায় গা এলিয়ে দিলেন ।
দু মিনিট বসতেই চোখ বুজে এল ।
দীর্ঘ হাই তুললেন ।
তার রেশ শেষ হবার আগেই কলিং বেলের আওয়াজ ।
নিশ্চয় প্রতিবেশী কেউ যতীনবাবুর খবর নিতে এসেছে ।
কিন্তু দরজা খুলে থমকে গেলেন দেবীকা ।
চিনতে পারলেন না আগন্তুককে ।
আগন্তুক সেটা বুঝতে পেরে বলল, “আমাকে চিনতে পারলেন না নিশ্চয় ? আমি লোকাল কমিটির সভাপতি, কমল হালদার ।
আমরা দেরি করে খবরটা পেয়েছি বলে রাতে এসে আপনার পাশে দাঁড়াতে পারলাম না ।
প্রথমেই সেজন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ।
এখন থেকে আপনার যে কোন প্রয়োজনে বলবেন, আমাদের ছেলেরা সবসময় তৈরি।”
একনাগাড়ে বলে গেল লোকটা ।
এমনিতে পার্টির লোকজন একদম পছন্দ করেন না দেবীকা ।
ওরা শুধু ভোটের হিসাব কষে সারাবছর ।
এই ভোটসর্বস্ব রাজনীতি করতে গিয়ে নিজেদের সমর্থকদেরও হারাচ্ছে, তাও বুঝছে না! গত দু’দুটো ইলেকশনে ঠা ঠা রোদের মধ্যে দেড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে শেষে জানতে পারলেন, তাদের ভোট নাকি হয়ে গেছে ।
কমল হালদারকে দেখেই সে কথা মনে পড়ে গেল দেবীকার ।
তাই শ্লেষের সঙ্গে বললেন,“আমরা বাড়িতে মাত্র তো দু’টো প্রাণী ।
তার জন্য খামাকা কষ্ট করতে যাবেন কেন ?”
কমল হালদার জিব কাটে, যেন বিনয়ের অবতার,“না না মাসিমা, আপনি যা ভাবছেন তা নয় ! আমরা মোটেই ভোটের হিসেব করছি না ।
আপনি বিশ্বাস করুন, আমরা বদলে গেছি ।
পুরনো দিনের কথা ভুলে যান ।
মানুষের পাশে থাকাটাই এখন আমাদের নতুন স্লোগান ।
”
আগন্তুক চলে যাবার পর দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন, ছটা পঞ্চাশ ।
কাজের মেয়েটার আসার সময় হয়নি এখনো ।
নিজেই গ্যাস ধরিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে নিলেন ।
জিবের আগায় দুবার ছোঁয়াতেই সাড়া পেলেন শরীরে ।
গরম চা শরীরের ক্লান্তি শুষে নিয়ে জাগিয়ে তুলল তার মনকে ।
কাল রাত থেকে এত ঘটনা ঘটে গেল, ছেলেমেয়েরা এখনো কেউ কিছু জানলই না !
প্রথমে দিল্লিতে মেয়েকে ফোন করলেন ।
ওপ্রান্তে মণিকা ফোন তুলেই অবাক ।
উদ্বিগ্ন কন্ঠে জানতে চাইল,“হঠাৎ কী হল মা? এত সকালে তো কখনো ফোন করো না!”
মণিকার গলায় উদ্বেগ শুনেই দেবীকা বুঝতে পারলেন, বড্ড ভুল হয়ে গেছে ।
এখনি না করে বেলার দিকে ফোনটা করলেই হোত ।
শুধু শুধু ওদের ব্যস্ত করে তোলা ।
“কী হল মা, কিছু বলছ না যে !”মণিকার গলায় ভয়ের রেশ ।
দেবীকাকে বলতেই হল,“আর বলিস না, কাল মাঝরাত থেকে যা গেছে না !”
“কেন, কী হয়েছে ? বাবার শরীর খারাপ করল নাকি ?”
দেবীকা সমস্ত ঘটনা বললেন মেয়েকে ।
সব শুনে মণিকা চুপ করে থাকল কিছুসময় ।
তারপর প্রায় কাঁদো কাঁদো সুরে বলল,“আমার এমনি কপাল, ক’দিন যে তোমার ওখানে গিয়ে থাকব তারও কোন উপায় নেই ।
শাশুড়ি বাতের ব্যথায় পঙ্গু প্রায়
। ওনাকে একা ফেলে কী করে যাই বল ?”
দেবীকা পারলে পাঁচ হাতে না করেন,“না না তোকে আসতে কে বলছে ? আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না ।
তুই বরং শাশুড়ির সেবা যত্ন কর। তুই না দেখলে আর কেই বা দেখবে ওনাকে ?”
নাতি নাতনির খবর নিয়ে ছেড়ে দিলেন ফোন ।
হায়দরাবাদে ছেলের নম্বর ডায়াল করলেন ।
পরে জানালে পুলক যদি রেগে যায়
! এইরকম একটা ঘটনা ঘটল আর আমাকে এত দেরি করে জানালে ? ভাবছ দূরে থাকি বলে তোমাদের কথা ভাবি না ! তোমাদের নিয়ে চিন্তা হয় না ?
“হ্যালো!” রুমার গলা ।
দেবীকা জানতে চাইলেন,“রুমা, পুলক ঘুম থেকে উঠেছে ? ”
“কেন মা, কী হয়েছে ? আপনার গলাটা অমন শুকনো শুকনো লাগছে কেন ? ”
তার ভেতরের উদ্বেগ তরঙ্গ বাহিত হয়ে বৌমার কানে পৌঁছে গেল ! তাহলে আর লুকনো কেন, বলেই দিলেন,“রাত জাগা, তার ওপর এই বয়সে এত টেনশন ।
মাঝরাতে তোমার শ্বশুরকে নিয়ে--––-।”
সমস্ত ঘটনা শুনে রুমা বলল,“হ্যাঁ মা, এই বয়সে দু’জনে ওরকম একা থাকা , কখন কোন বিপদ ঘটে, শরীর খারাপ হল, কে দেখবে ? আপনি চিন্তা করবেন না, আর ক’টা দিন অপেক্ষা করুন, আপনার ছেলেকে অনেক বলে কয়ে এবার রাজি করিয়েছি ।
কলকাতায় পোস্টিং নিলে স্যালারি না হয় একটু কমই পাবে, কিন্তু সবাই মিলে একসঙ্গে তো থাকা যাবে, বলুন ? গুড্ডুটা বড় মিস্ করে আপনাদের ।
সবসময় ঠাম্মা যাবো, ঠাম্মা যাবো বলে ।”
নাতির কথা শুনে দেবীকার চোখ ছলছল ।
বললেন,“হ্যাঁ, দাদুভাইয়ের জন্য আমারও মন কাঁদে সবসময় ।
”
“আপনি আর দুশ্চিন্তা করবেন না, মা ! আপনার ছেলেকে এখনি ডেকে
ফোন করতে বলছি ।”
পরম নিশ্চয়তায় পাশ ফেরেন দেবীকা ।
অভ্যাস বশে হাত বাড়িয়ে খোঁজেন স্বামীকে ।
কিন্তু হাতের নাগালে না পেয়ে
চমকে ওঠেন ।
ঘোরের মধ্যেই উঠে বসেন বিছানায় ।
চোখ কচলে দেখেন, দিব্বি শোফায় বসে পেপার পড়ছেন তিনি ।
তাহলে কাল রাত থেকে যা যা ঘটে গেল, তা সত্যি নয় !
tapanchk@yahoo.com
কলকাতা
কলকাতা
খুব সুন্দর।
ReplyDelete