...জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
আজ সকালে
প্রাতঃভ্রমন করা লোকেরা খুব অবাক হয়ে লক্ষ
করলো বুড়ো ঝুরিওয়ালা বট গাছের তলায় সিমেন্ট দিয়ে গোলাকার বাঁধানো জায়গায় এক অদ্ভুত
দর্শন লোক আধশোয়া হয়ে বসে আছে।লোকটার মাথায়
ছেঁড়া, ময়লা ফেজ টুপি, গায়ের রং তামাটে , মুখে কাঁচাপাকা দাড়ি, চোখের তলাগুলো যেন কালো, কপালে অনেক ভাঁজ, গালগুলো ভিতরে ঢোকা, গলার কন্ঠির হাড়টা বেশ উঁচু হয়ে আছে।ও একটা
কোঁচকানো অপরিস্কার গেরুয়া রঙের ফতুয়া পরেছে আর শরীরের নিচের ভাগটা একটা ছেঁড়া
কম্বল জড়িয়ে নিয়েছে।কেমন যেন আধশোয়া অবস্থায় বট গাছের কান্ডে শরীরটাকে এলিয়ে দিয়ে
বসে আছে।চোখ গুলো মাঝে মাঝে পিটপিট করে চাইছে। পায়ের কাছে কারুর দেওয়া একটা প্লাস্টিকের জলের বোতল যার থেকে কিছুটা জল
বোধহয় ও গলধরণ করেছে।
পাড়ার বয়স্ক কয়েকজন
ওকে দেখতে পেয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো।একে তো এ
পাড়ায় কোনোদিন চোখে পড়েনি।কে হতে পারে
লোকটা?
কে হতে পারে
লোকটি?ভিখারি, ভবঘুরে, পাগল, জেল পালানো দাগি
আসামি, ছদ্মবেশী
ডিটেকটিভ, পুলিশের খোচোর, কারো ছেলে খেদানো
বাপ, পরিযায়ী শ্রমিক
নাকি কোভিড আক্রান্ত লোক যাকে ভীতু
ভালমানুষের ছানারা পাড়াচ্যুত করেছে।এমন অজস্র প্রশ্ন সবার মনে ঘুরতে লাগলো।
একজন সামনে গিয়ে
লোকটার নাম ধাম জিজ্ঞাসা করাতে ও কোনো উত্তর দিলো না।কালা বোবা নাকি?কয়েকজন সামনে
গিয়ে আবার চিৎকার করে ওকে ডাকলো।লোকটা ভ্রুক্ষেপহীন।অদ্ভুত একটা ভাবলেশহীন মুখে
তাকিয়ে ও সব জিজ্ঞাসু লোকেদের পিটপিট চোখে দেখছে।গাছের কান্ডটার আরো কাছে ও
সেঁটে বসলো ।কয়েকটা কাক বট গাছের ওপর থেকে
সব লক্ষ্য করে শেষে উৎসাহী হয়ে মজা দেখতে নিচের চাতালে নেমে এসে ওর সামনে বসে
কম্বলটাকে টানতে শুরু করলো।বোধহয় কম্বল ছিঁড়ে বাসা বাঁধবে।লোকটা অশক্ত হাত দিয়ে
কাকগুলোকে তাড়াচ্ছে, কিন্তু মুখে কিছু আওয়াজ করছে না।
প্রফেসর আব্দুল
করিম আমাদের বহুদিনের ভ্রমণ সঙ্গী।পন্ডিত মানুষ বলেই সবাই ওনাকে জানেন।লোকটার ফেজ
টুপি দেখে বললেন
," মুসলিম ফকির বলে মনে হচ্ছে।"
শ্যামলদা, রিটায়ার্ড ব্যাংক
অফিসার, এখন নাকি
স্বঘোষিত দেশভক্ত ।হটাৎ উনি নিজ মতামত জাহির করলেন,"
কিন্তু ফতুয়াটা গেরুয়া
তো।আসলে গেরুয়া টাই ওর পরিচয়।পাগল ছাগল বলে কেউ মজা করে ফেজ টুপিটা পরিয়ে
দিয়েছে।কম্বলটাকে সরালেই দেখবেন নিচেও গেরুয়া।"
পাড়ার মাস্তান
কালুয়া বাইকে হন্তদন্ত হয়ে যাচ্ছিল।বোধহয় নতুন কোনো প্রমোটারের কাছে মাসিক
বন্দোবস্ত করতে যাচ্ছে।বয়স্ক লোকের ভিড় দেখে একটু হিরোগিরি করার সাধ হওয়াতে বাইকটা
দাঁড় করালো।
" জ্যেঠু কি হয়েছে?"
ও ভিড়ের দিকে এগিয়ে এসে
আমাকে জিজ্ঞাসা করলো।আমি আবার কোনো পক্ষই নই।নিজেকে নিরপেক্ষ বলে জাহির করলেও
লোকেরা আপনাকে একটা পক্ষের জোর করে স্ট্যাম্প মেরে দেবে।যেন পক্ষ ছাড়া পৃথিবীতে
কেউ থাকতে পারে না।মাস্তানরা আমাকে একটু মান্যগণ্য করে কারণ ওরা জানে এই ওয়ার্ডের
আমি বহু পুরোনো বাসিন্দা আর শিক্ষক হিসেবেও লোকেরা আমাকে চেনে । কালুয়াকে আমি
সংক্ষেপে সব বললাম।গেরুয়া আর ফেজ লড়াইয়ে আমি নিরপেক্ষ।
" তাহলে তো শালার কম্বলটা সরিয়েই দেখতে হয়।"
কালুয়া সিমেন্টের বাঁধানো জায়গাটাতে উঠে সামনে ঝুঁকে কম্বলের একটা দিক ধরে জোরে
টান মারলো।লোকটা কম্বলটাকে রোলের মতো নিজের রোগা শরীরে জড়িয়েছিলো।প্রায় লাট্টুর
মতো কয়েক পাক ঘুরে ও মাটিতে আছড়ে পড়লো।মাথাটা ঠক করে সিমেন্টের চাতালে ঠুকে গেল।আমরা
অবাক হয়ে দেখলাম ওর নিম্নাঙ্গে কিছুই নেই।কম্বলটা ওর লজ্জা নিবারণ করছিল।সবাই
লজ্জায় কেটে পড়লাম।খেয়াল করলাম এখনো পুরো নির্লজ্জ হয়ে যাইনি।
দু ঘন্টা পর শুনি
বাইরে গুঞ্জন।কয়েকটা কমবয়সী ছেলে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার তোড়জোড় করছে।কম বয়েস
তো।ভাবনা চিন্তা না করেই ভালো কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে।আমি ছোকরা গুলোকে গিয়ে বললাম," আরে ওকে এখন ছোয়া ছুঁই করিস না।কোভিড রুগীও হতে
পারে।"
করপোরেশন এর থেকে
একটা গাড়ি জোগাড় করা হলো। মাস্ক, গ্লোভস পরে ওকে গাড়িতে তুলে ওরা হৈ চৈ করে হাসপাতালের রওনা হলো।
বিকেলে বাইরে
বেরিয়ে দেখি বট গাছের তলায় কিছু লোক জড়ো হয়েছে।লোকটা সেই এক ভাবে ভাবলেশহীন মুখে
গাছের তলায় সিমেন্টের চাতালে শুয়ে আছে।হাসপাতাল অভিযান ব্যর্থ হয়েছে।সারা কলকাতা
ঘুরে ওরা জেনেছে কোনো হাসপাতালই কোভিড
টেস্ট ছাড়া ভর্তি নেবে না।কিছু হাসপাতালে আবার বেড নেই।আমার আর কি করার আছে।নিয়ম তো
নিয়মই।নিয়মের বন্ধনে সবার হাত পা বাঁধা।
চারজন রিকশাওয়ালা
আমাকে অভিযোগ জানালো যে ওরা সন্ধ্যে বেলায় ওখানে
বসে তাস খেলে।ওই লোকটা শুয়ে থাকায় সেটা বন্ধ হয়ে যাবে।আমি চুপ করে
শুনলাম।বেশি কথা না বলাই উচিত।এর মধ্যে দেখি পাড়ার একটি অন্য গোষ্ঠী সিমেন্টের
ওপরে তিরপল দিয়ে একটা অস্থায়ী বাসা বাঁধছে।লোকটা মাথায় একটা আচ্ছাদন পেলো।যাক ,কাকেরা ওর মাথায়
আর মলত্যাগ করতে পারবে না।দেখি একটা কাগজ এর ব্যানার লিখে টাঙিয়ে দিয়েছে "
একে যথাসাধ্য সাহায্য করুন।"
একটা লাল গামছা
লোকটার সামনে বিছানো হয়েছে।তাতে পঞ্চাশ পয়সা, এক টাকা, দুটাকা , দশ টাকার কয়েন পড়েছে।সন্ধ্যে বেলায় লাম্প
পোস্টের আলোয় দেখি অনেক পয়সাই জমা পড়েছে।লোকটা তাকিয়েও দেখছে না।কেউ দুটো মর্তমান
কলাও দিয়ে গেছে। তিরপলের বন্দ্যবস্ত করা গোষ্ঠী ওই পয়সাগুলো হাতিয়ে নিয়ে
গেল।রাত্রে পার্টি হবে।
সকালে দেখি কেবল
দুটি শুকনো কলা পড়ে।লোকটা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।কম্বলের ওপর থেকে বোঝা যায় ওর
নিঃশ্বাস পড়ছে।একটু জোরে জোরেই পড়ছে।জ্বর এলো নাতো?
বেলা বাড়তে দেখি
কলা দুটোও আর নেই, খেয়েছে হয়তো, তবে বিছানো গামছায় বেশ কিছু পয়সা আবার
পড়েছে।পয়সা দিয়ে লোকে নিজের সামাজিক
কর্তব্য পালন করে শ্লাঘা অনুভব করছে। আবার করপোরেশন এ জানিয়ে আমি আমার কর্তব্য
পালন করলাম।কেউ এলো না।মাস্ক পড়া লোকজন ওর পাস দিয়ে যাচ্ছে, পয়সা ছুঁড়ে
দিচ্ছে, আবার নিজের কাজে
চলে যাচ্ছে।
নির্জন দুপুরে
দেখি দুজন রিকশাওয়ালা একটা রিকশায় লোকটাকে ধরাধরি করে তুলছে।লোকটা কোনো বাধা দিচ্ছে
না।সে ক্ষমতাও ওর নেই।হটাৎ গোটা কয়েক
ছেলের উদয় হলো।এরাই সেই তিরপল লাগানো
ছেলেরা যারা গামছা বিছিয়ে পয়সা রোজকার করছিল।ওদের সাথে রিকশাওয়ালা দের তুমুল বচসা
শুরু হলো।ছেলেগুলো মানবিকতার দোহাই তুলে ওকে রাখতে চাইছে যাতে ওর পয়সায় আরো কদিন
ফুর্তি করা যায়।আর রিক্সাওয়ালা ওদের জায়গার দখলদারকে অন্য কোথাও চালান করে দেবার
কথা ভাবছে।কমবয়সী ছেলেগুলোরই জয় হলো।জোর যার মুলুক তার।
সেরাত্রের মতো
লোকটি বট গাছের তলাতেই পড়ে রইলো।ছেলেগুলোও দানের পয়সায় চুটিয়ে ফুর্তি করলো।রাত্রে
মোবাইলের টর্চ লোকটার মুখে ফেলে দেখি ও চুপচাপ পড়ে আছে।চোখ বন্ধ।তবে বুকটা হাপরের
মতো ওপর নিচ হচ্ছে।একজন এক বোতল মিনারেল ওয়াটার দিয়ে গেছে।সেটিও যেমনকার তেমনি পড়ে
আছে।আমি বাড়ি ফিরলাম।
পরের দিন সকালে
মেয়ে দৌড়ে এসে বললো
"
বাবা, বট তলার পাগলটাকে
টিভিতে দেখাচ্ছে।"
বাইরে বেরিয়ে
দেখি বট গাছের তলায় তুমুল হৈচৈ। আকাশ কালো হয়ে এসেছে।অসময়ে তুমুল বৃষ্টি নামতে
পারে।মিডিয়া হাজির।ক্যামেরা , মাইক, সাংবাদিক সবাই উপস্থিত।থানার বড়বাবুও
এসেছেন।ওনার ছেলেকে আমি পড়াই বলে উনি পয়েন্ট বাড়াতে আমাকে ডেকে নিয়ে গেলেন
ক্যামেরার সামনে একটা বক্তব্য রাখতে।আরে, আগে বললে চোখা চোখা ভাষায় আমার কথা লিখে মুখস্ত
করে বলে আসতাম।হটাৎ করে এক্সটেম্পো কি বলা যায়।সাংবাদিক মেয়েটি ওই লোকটিকে
ক্যামেরায় দেখিয়ে ,
অর্ধমৃত ব্যক্তিটি পড়শী
দেশের নাগরিক বা উগ্রপন্থী হতে পারেন কিনা তার সম্পর্কে আমার মতামত জানতে
চাইলেন।আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম।পলিটিক্যালি কররেক্ট কি উত্তর দেওয়া যায় সেটাই
বলতে পারছি না।
" পাড়ার লোকেদেরও সন্দেহ যে লোকটি উগ্রপন্থী হতে
পারে।" আমার মুখ থেকে ক্যামেরা সাংবাদিক ভদ্রমহিলার মুখে জুম হলো।
" আমরাই সর্বপ্রথম এই খবর আপনাদের সামনে তুলে
ধরছি।আমাদের কাছে গোপন সূত্রের খবর আছে যে লোকটি তিনদিন আগে থেকে এখানে এসে এই বট
গাছটির তলায় আস্তানা গেড়েছে।পড়শী দেশের চর আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর পাচারে
লিপ্ত।"
চারিদিকে বিশাল
ভিড়।সবাই মজা দেখছে।মোবাইলে টপাটপ ছবি উঠছে।লোকটিকে নিয়ে সেলফি তোলাও চলছে।কিছু
ফেরিওয়ালা এই সুযোগে নিজের জিনিস বিক্রিতে নেমেছে।অন্য গোষ্ঠীর লোকজন টিভিতে নিজের
মুখ দেখাতে ঘোরাঘুরি করছে।
তুমুল বৃষ্টি
নামলো।জোরে বৃষ্টি বেশিক্ষন স্থায়ী হয় না।মিনিট পনেরো পর বৃষ্টি থামলো।টিভি
চ্যানেলের লোকজন বৃষ্টির সময় গাড়ির ভিতরে গিয়ে বসেছিল।বৃষ্টি থামতেই আবার ক্যামেরা
হাতে লোকজন ব্যস্ত হয়ে পড়লো।আরো কয়েকটি চ্যানেলের লোকজনও হাজির হয়েছে।
লোকটির স্বাস
প্রশ্বাস খুব গভীর অথচ ধীরে ধীরে এসেছে।মিডিয়া টিমের একজন ওকে গ্লোভস পরে জল
খাওয়ানোর চেষ্টা করছে।লোকটি আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকার দরুন মুখ খুলছে না।সব জল মুখের
পাস দিয়ে গড়িয়ে পড়ে গেলো।ইতিমধ্যে ওর ফেজ টুপি ও গেরুয়া ফতুয়াও চুরি হয়ে
গেছে।ভিড়ের মধ্যে কেউ সুযোগ বুঝে ওগুলো খুলে নিয়েছে।লোকটি ডানপাশে ফিরে , চোখ বন্ধ করে
লম্বা লম্বা নিশ্বাস নিচ্ছে।আমি একজন সাংবাদিককে বললাম,"
আরে ও তো মরবার আগে
দীর্ঘশ্বাস ফেলছে।"
চারিদিকে কাদা
জমে যাওয়ায় বড়ো ভারী ক্যামেরা নিয়ে হাঁটাচলা করা দুষ্কর হয়ে পড়লো।এটা দেখে দুজন
পন্ডিত ব্যক্তি লোকটির গা থেকে কম্বলটা টেনে খুলে মাটিতে বিছিয়ে দিলো যাতে কাদার
ওপরেও দাঁড়ানো যায়।মৃতপ্রায় লোকটি আমাদের দিকে মুখ করে কুঁকড়ে উলঙ্গ অবস্থায় পড়ে
রইলো।
এবার ক্যামেরা
লোকটির মুখে জুম হলো।বলা চললো," এই প্রথম আমাদের চ্যানেলে লাইভ একজন মানুষের
মৃত্যু দেখানো হচ্ছে।আপনারা লক্ষ্য করুন ওনার নিঃশ্বাসের ওপর..............।"
বেরিয়ে এলাম ওই
ভিড় থেকে।সবাই লোকটিকে ভাঙিয়ে নিজের কাজ হাসিল করছে।আমি তো আমার কর্তব্য
করেছি।করপোরেশন এ খবর দিয়েছি, লোকটিকে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করেছি। মনকে
প্রবোধ দিয়ে নিজেকে মহান ভাবতে শুরু করলাম।উগ্রপন্থী তথ্য একটা দল বলছে, গরিবের ওপর
নির্দয় অত্যাচারও অন্য একটি দল বলছে।
বাড়ি ফিরে
এলাম।মেয়ে আর মেয়ের মা টিভি খুলে বসেছে।অধিকাংশ চ্যানেলই এটা দেখাচ্ছে।
লোকটি আর স্বাস
প্রশ্বাস নিচ্ছে না।মুখের কোনে ফেনা দেখা গেল।পিঁপড়ের দল ওর মুখের ওপর দিয়ে যাওয়া
শুরু করেছে। লোকটা মারা গেল।
বাইরে বেরিয়ে
দেখি মিডিয়ার দল প্যাক আপ শুরু করেছে।আবার অন্যখবর তৈরি হবে।ভিড় ক্রমশ পাতলা হয়ে
আসছে।প্রবল বৃষ্টি আবার শুরু হলো।আমরা সবাই বৃষ্টি এড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছি।কেবল মৃত
ব্যক্তির গায়ে জলের ছিটা লাগছে।
ঈশ্বর বোধহয়
ভাবছেন আমি বৃষ্টি দিলাম।এটাতে ভিজে যদি এদের মনের মলিনতা গুলো ধুয়ে যেত।
কলকাতা
mukhopadhyayjaydip@ymail.com
খুব ভাল লেখা।
ReplyDeleteসত্যিই আমরা সবাই কি এতটাই স্বার্থপর হয়ে গেছি? আবার মনে হয় পৃথিবীটা তাহলে এখনো চলছে কি করে?
ReplyDelete