![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
কাছের মানুষ কাজের মানুষ
রিয়া ভট্টাচার্য
---- " আজ সন্ধ্যায় উলবেড়িয়া চলে আসবি, ক্লায়েন্ট আছে।
আর হ্যাঁ, একটু সেজেগুজে
আসিস। ক্লায়েন্ট খুশি না হলে কিন্তু এবার একপয়সাও পাবিনা,
গতবার ন্যাকামি করে চলে
এসেছিলি খেয়াল আছে? আর যেন না হয় এমন! "
কর্কশস্বরে কথাগুলি বলে ফোন নামিয়ে
রাখলেন হাবিব ভাই। কেটে যাওয়ার পরেও ফোন কানে কিছুক্ষণ থম মেরে বসে রইল রাঘব।
গোধূলির রঙ তখন আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ছে আকাশের শামিয়ানায়,
ফ্যাকাশে মেঘেরা কাজল পরে
বোধহয় প্রেমিকপুরুষের অপেক্ষায়।
বেশ কিছুক্ষণ
আগেই রমাকে পাত্রপক্ষ দেখে গেছে, যৌতুকে চারচাকা গাড়ি না দিলে বোধহয় বাবা মায়ের
সম্মান থাকবে না!
রমা রাঘবের
একমাত্র বোন। শিশুকালে একবার মায়ের অসতর্কতায় সন্ধ্যাপিদিমের আগুন ছড়িয়ে গিয়েছিল
লালচে ফুল ফুল ফ্রকে। প্রাণ যায়নি, তবে চামড়ায় রয়ে গিয়েছে সাদাটে কুঁচকানো নিশান; প্রত্যাখ্যানের
লাল কাপড় হয়ে।
পাত্র স্কুলের মাষ্টার, বিপত্নীক।
যৌতুকের লোভে রাজি হয়েছে খুঁতো মেয়েকে বিয়ে করতে, রাঘবের বিন্দুমাত্র ইচ্ছে না থাকলেও মা বাবার
ইচ্ছার কাছে সে অসহায়। তাছাড়া বোনেরও মত রয়েছে এতে।
---" আচ্ছা মা তোমরা কেন বোঝনা! ওরা শুধুমাত্র
টাকাপয়সার লোভে রমাকে চাইছে। এভাবে কি বিয়ে টেকে বলো! তাছাড়া ছেলের বয়স অনেক বেশি, আমাদের ছোট্ট
মেয়েটাকে এভাবে ভাসিয়ে দিওনা তোমরা। " পাত্র দেখে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বাবা
মাকে একথা বলেছিল সে।
সস্তার নীলচে
শাড়ি পড়া রমা তখন দরজার এককোনে দাঁড়িয়ে নখ খুঁটছিল, কালচে গড়নে উজ্জ্বল সাদা ছুরির ফলার মত চেয়ে
ছিল পোড়া দাগগুলো।
---" টাকা দিয়েও ওই খুঁতো মেয়েকে বিদায় করা যাবেনা, তবু ভাগ্যি এরা
রাজি হয়েছে! নয়ত আজীবন বাপের বুকের ওপর বসে খেত। " খরখরে পিঠ চুলকাতে চুলকাতে
বললেন মা।
প্রতিবাদ করতে
গিয়েও থেমে গেল রাঘব, চোখ চলে গেল বাবার দিকে। তক্তপোষের তেলচিটে
চাদরের ওপর বসে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছেন বাইরের দিকে, যেখানে একটু একটু করে মরা রোদ হেঁটে যাচ্ছে
অন্তর্জলিযাত্রায়।
রাঘব যখন দশম
শ্রেণীতে তখনই একদিন ট্রেনের হকার বাবার হৃদয়ের কলকবজায় দেখা দিয়েছিল
গণ্ডগোল। সরকারি হাসপাতাল সে যাত্রায়
প্রাণ বাঁচিয়ে দিলেও, কাজ করার শক্তি চলে গিয়েছিল বরাবরের মত। পড়া
ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে সেই সময়ই কাজে নামতে হয়েছিল রাঘবকে,
এক দামাল কিশোরের
স্বপ্নগুলো কাগজের নৌকা হয়ে ভেসে গিয়েছিল বাস্তবের দরিয়ায় ; আর ফেরেনি।
চারজনের সংসার
টানতে নাভিশ্বাস উঠত প্রথম প্রথম, কতদিন অন্নদানার অভাবে শুধুমাত্র জল খেয়ে
মেটাতে হয়েছে নাড়িছেঁড়া ক্ষিধে একমাত্র ওরাই জানে। ঘটনাচক্রে একদিন হাবিব ভাইয়ের
সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর একটু একটু করে স্বচ্ছলতা ফিরেছে সংসারে, মাথার ওপর জুটেছে
নিজস্ব একটা ছাদ ; ভাতের চিন্তা করতে হয়না আর।
এই কাজটা রাঘবকে কাঙ্খিত স্বচ্ছলতা দিলেও তার একটুও ভালো লাগেনা এসব, মাঝেমাঝে ইচ্ছে করে সবকিছু ছেড়ে অনেকদূরে পালিয়ে যেতে ; কিন্তু কর্তব্যের বেড়াজাল শেকল হয়ে আঁকড়ে ধরে পা..... যাওয়া হয়না।
মা বাবার ইচ্ছেমতো এই পাত্রের সঙ্গেই বিয়ে
হবে রমার। কিন্তু তারজন্য দরকার অনেক টাকা, তারজন্য অপছন্দের কাজটাই তাকে করতে হবে আরো
বেশি করে। এছাড়া চটজলদি টাকা কামানোর আর কোনো রাস্তা জানা নেই যে তার! কাজটার কথা
মনে পড়তেই পেট গুলিয়ে বমি পেল তার, একটা সিগারেট ধরিয়ে তড়িঘড়ি উঠোনে নেমে এল সে।
গাছের পাতার
ফাঁকে ফাঁকে এখনো লেখে রয়েছে হালকা আলোর আভা, আকাশের বুকে একটু একটু করে জাঁকিয়ে বসছে
অন্ধকার। একটু পরেই সেজেগুজে তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে তাকে, হাবিবভাইয়ের গাড়ি
তাকে পৌঁছে দেবে নির্দিষ্ট ঠিকানায়। কাজশেষে পেমেন্ট হাতেহাতেই পাবে সে, যার থেকে
নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা কমিশন হিসাবে কেটে নেবে হাবিব ভাই।
একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল রাঘবের ভেতর থেকে, সেই কোনকালে সে
কবিতা লিখত! তারাভরা আকাশের দিকে চেয়ে জেগে উঠত তার কবিসত্ত্বা, পাতার পর পাতা
সেজে উঠত শব্দমালিকায়। আজ তার পরিচয় একতাল মাংসপিণ্ড, এটুকুই৷ প্রয়োজন
মত বিভিন্ন প্রণালীতে রান্না করে সুসজ্জিত প্লেটে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয় অতিথিদের
প্লেটে, মনোরঞ্জনের জন্য।
--" আসমানী দরিয়ায় ইতিউতি ভেসে চলে ইচ্ছেসাম্পান
হয়ে মনের ফানুস ;
কেমন আছে কাছের
মানুষ --
কেমন আছে কাজের
মানুষ! " আপনমনেই বিড়বিড় করে সে। মনে পড়ে বৈদেহীর কথা, কাজের ধরণটা
জানার পর আর একদিনও টেকেনি সম্পর্কটা। ভালোবাসার লাল রঙ ঠিক কবে কলঙ্কের কালির মত
দগদগে হয়ে উঠেছিল জীবনে মনে পড়ে না তার। সব ফুরিয়েছে, জেগে আছে শুধু একজোড়া ক্লান্ত চোখ ; ঘুমোবার
অপেক্ষায়।
*
* * *
---" আরে আসুন আসুন। বাড়ি খুঁজে পেতে কোনো সমস্যা
হয়নি তো?" দরজা খুলে সহাস্যে অভিবাদন জানিয়ে একপাশে সরে দাঁড়াল রাকা।
বাইরে দাঁড়িয়ে
ক্লান্ত চোখে একঝলক তাকে দেখে নিল রাঘব, সামনে দাঁড়িয়ে বছর ছাব্বিশের এক চনমনে তরুণী।
কালো ফুলহাতা টপ, ধূসর কেপ্রি আর আকর্ণবিস্তৃত হাসি ছাড়াও যেটা চট করে নজরে পড়ে সেটা হল মেয়েটির
একজোড়া কৌতুকমাখা চোখ। এইটুকু মেয়েও তার ক্লায়েন্ট! মনে মনে ভাবল রাঘব, সে বাড়ি চিনতে
ভুল করেনি তো! কিন্তু অভিবাদন দেখে মনে হচ্ছে ভুল হয়নি বিন্দুমাত্র, মেয়েটি তারই অপেক্ষায় ছিল মনে হচ্ছে।
রাকাকে কাটিয়ে বড় ড্রইংরুমে ঢোকে রাঘব। সেন্টার টেবিলে দামী ফ্লাওয়ার ভাসে রাখা একগোছা হোয়াইট লিলি, ঘরের এককোনায় একটা বড় রেকাবীতে জলের ভেতর ভাসিয়ে রাখা হয়েছে গ্ল্যাডিওলাস ফুল আর রঙিন সুগন্ধি মোমবাতি। ঘরের আলো ডিম করে রাখা, মিউজিক সিস্টেমে ঢিমেতালে বাজছেন বড়ে গুলাম আলি খান সাহেব। ড্রইংরুমের একপাশেই পার্টিশন দিয়ে ডাইনিং স্পেস, সেখান থেকে একটা জলের বোতল তুলে ঢকঢক করে অনেকটা জল খেল রাঘব। আজকাল ওষুধটা খেলে কেন জানেনা গা গুলায়, বমি পায়৷ সাইড এফেক্ট কিনা কেজানে! ড্রইংরুম থেকে হাসিমুখে তার দিকে চেয়ে আছে রাকা, তার চোখে বাঘিনীর ক্ষুধার্ত লোভাতুর দৃষ্টি খোঁজার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হল রাঘব৷ আগের ক্লায়েন্টের ভালোবাসার অত্যাচারে এখনো সারাগায়ে অসহ্য ব্যথা। গোপনাঙ্গে দাঁত বসিয়ে দিয়েছিলেন মাঝবয়সী মহিলা, ইনফেকশন হলে আর দেখতে হবেনা! ভাবতে ভাবতেই আবার ড্রইংরুমে ফিরে আসে রাঘব, রাকার কোমর জড়িয়ে টেনে নেয় কাছে।
---" আরে হচ্ছে টা কি! ছাড়ুন দেখি। বলি খাওয়াদাওয়া
কিছু হয়েছে?" ছটফট করে নিজেকে রাঘবের বাহুপাশ থেকে মুক্ত
করতে করতে বলল রাকা।
হতভম্ব রাঘবের
দিকে গোল গোল চোখে তাকিয়ে আবার কৌতুকমাখা শাসনের সুরে সে বলে,
--" আরে কি হল? বলি পেটে কিছু পড়েছে? নাকি খাইয়েই চলেছেন বড়ো ভিখারীদের! "
রাঘব মাথা নাড়ে
দুপাশে, সত্যিই আজ দুপুর
থেকে পেটে পড়েনি কিছুই। বোনকে দেখতে আসা, মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি তারপর উলবেড়িয়ার
বয়স্কা হিংস্র ক্লায়েন্ট ; এতকিছুর পরে আর খাওয়ার কথা মাথায় ছিল না তার, সময়ও ছিল না।
---" এদিকে আসুন, অনেক হয়েছে। আগে কিছু পেটপুজো হোক, তারপর বাদবাকি
সবকিছু হবে। " বলতে বলতে ডাইনিং টেবিলের একদিকের চেয়ার টেনে বসে পড়ে রাকা, বিপরীতদিকের
চেয়ারে নিঃশব্দে বসে পড়ে রাঘব।
---" দেখুন আমি বেশি রান্নাবান্না পারি না, যা পেরেছি করেছি।
খেতে বসে মুখ বেঁকালে হবে না কিন্তু! রেগে যাব।" রাঘবের প্লেটে চাউমিন তুলতে
তুলতে বলল রাকা।
খেতে বসে কলকল
করে কথা বলে যাচ্ছিল রাকা, মাঝেমাঝে রাঘবকে খুঁচিয়ে জেনে নিচ্ছে তার
জীবনবৃত্তান্ত।
মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের স্কলার রাকা চৌধুরীর একমাত্র শখ হল বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানো ও নানা অফবিট মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া। তথাকথিত সামাজিক নিয়মে চলতে অস্বীকৃত হওয়ায় পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বহুদিন, ভালোবাসা নামক জন্তুটা সরে গেছে মোক্ষম ক্ষতসৃষ্টিকারী কামড় বসিয়ে। বিভিন্ন সংবাদপত্রে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ ও নানা বইপত্র মিলিয়ে আয় ভালোই ; সেসব খরচ হয় ভ্রমণখাতে। এছাড়াও কয়েকটি চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সঙ্গেও যুক্ত সে।
--" আসলে আমি মুক্ত জীবন ভালোবাসি। এজন্য নয় যে আমি
বন্দী হতে ভয় পাই, এজন্য যে আমায় বন্দী করার সাধ্য কারো
নেই।" বাগানের ঘাসে পা ছড়িয়ে বসে রাতের আকাশের দিকে আনমনে চেয়ে বলল রাকা।
আকাশে তখন ভেসে
বেড়াচ্ছে অনেকগুলো ফানুস। একটু আগেই সবগুলো পরপর জ্বালিয়ে উড়িয়েছে রাঘব আর রাকা।
---" আপনাকে কেন ডেকে পাঠিয়েছি জানেন? কোনোরকম যৌনসুখ
লাভের জন্য নয়, সে আমি চাইলেই অনেক মৌমাছি আমার চারপাশে ঘুরঘুর করবে। আসলে আমি দেখতে
চেয়েছিলাম টাকার বিনিময়ে পন্য হওয়া মানুষদের মন থাকে কিনা! নাকি তারা যান্ত্রিক হয়
; সেক্সটয়ের মত
নিষ্প্রাণ । " সিগারেট ধরিয়ে একগাল ধোঁয়া ছেড়ে ঘাসজমিতে শুয়ে পড়ে রাকা।
---" আপনি হয়ত ভুলে যাচ্ছেন আমরাও মানুষ, আমাদেরও মন আছে।
শুধু পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতেই......!" মুচকি হেসে বলে রাঘব।
--" বুঝলাম, মাঝে মাঝেই আমার মাথায় এমন অদ্ভুত খেয়াল চাপে; কেন জানিনা। কিছু
মাইন্ড করবেন না প্লিজ। " সিগারেটের ছাই
ঝাড়তে ঝাড়তে বলে রাকা।
--" নাহ, মাইন্ড করার কিচ্ছু নেই। আপনি কিছুই করেননি, এরচেয়ে আরো বদখত
আচরণ সহ্যের অভ্যেস আছে। " রাকার হাত থেকে সিগারেটের কাউন্টার প্রায় ছিনিয়ে
নিয়ে তাতে লম্বা টান দিয়ে বলে রাঘব।
---" আচ্ছা ঘেন্না করেনা? আইমিন এসব দিনের পর দিন....." রাকার কথা
শেষ হয়না খিলিখিলিয়ে হেসে ওঠে রাঘব।
--" ঘেন্না করলে পেট চলেনা ম্যাডাম, শুধু মহিলাদের
ওপর সম্মানটা চলে যায়। খাদ্য কখন নিজেই খাদক হয়ে ওঠে সে নিজেই জানেনা, বুঝলেন? "
কোথা থেকে ঘিরে
ধরে একরাশ নিস্তব্ধতা, ঘাসজমিতে বেপরোয়া ওড়াউড়ি করে জোনাকির ঝাঁক।
কুয়াশার চাদর আস্তে আস্তে পাতলা পর্দার মত ঢেকে দেয় চোখের সামনের তারার রাজ্য।
সেদিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রাকা বলে,
--" আচ্ছা কিছু মানুষ এত বেখাপ্পা হয় কেন বলুন তো!
তাদের সঙ্গে বসবাস করতে পারে না কেউই। কখনো কখনো বুঝে উঠতে পারিনা দোষটা আমার, নাকি বোহেমিয়ান
স্বভাবের; যা থিতু হতে দেয়
না কখনো। "
--" আসলে কি জানেন তো, মানুষ মুখে যতই আধুনিক হোক, আড়ালে পোশাক খুলে
উগ্র আধুনিকতার নিষিদ্ধ আতর মাখুক.....দিনের শেষে সেই সামাজিক ছত্রছায়ায় লুতুপুতু
জীবন কাটাতে ভালোবাসে। তাইজন্য নিয়মের বিধিনিষেধ প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ওটাকেই
আঁকড়ে ধরে; দায়িত্ব থেকে বাঁচার জন্য। " শেষ হওয়া সিগারেটের জ্বলন্ত ফিল্টারটা
ঘাসজমিতে ছুঁড়ে দিয়ে বলে রাঘব।
--" এই বাড়িটা আমার মাসির,
উনি মৃত্যুর আগে আমায়
দিয়ে যান। মাঝেমাঝে তাই এখানে আসি, শেকড়ের সন্ধান করতে। পাই না জানেন! কেন জানিনা
আর বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না কোনো সম্পর্ককে, আসলে সম্পর্করা জীবনে আসে শেকল হয়ে, যা দগদগে শিক্ষার
ক্ষত ছাড়া রেখে যায় না কিছুই। " আনমনে বলে রাকা।
--" আচ্ছা বালিকে কখনো মুঠোয় ভরে দেখেছেন? পিছলে যায় তাইনা? আঁচলে ভরে দেখবেন, পিছলাবে না।
জীবনটাও তাই.....অপূর্ণ; তাই পূর্ণতার প্রত্যাশা বেশি। " রাকার
মুখের দিকে চেয়ে ম্লান হাসি হেসে বলে রাঘব। নিঃশব্দে কেপ্রির পকেট থেকে পাঁচলাখের
চেকটা বের করে রাকা, আজই এসেছিল রয়াল্যটি বাবদ। এতে নিশ্চয় হয়ে যাবে
রাঘবের কাজ!
--" এটা ধরুন, আর আসুন৷ কাল সকালের ফ্লাইট আমার, ঘুমোতে হবে। আসার
জন্য ধন্যবাদ, শুভরাত্রি। " রাঘবের মুখের ওপরই সামনের দরজা বন্ধ করে দেয় রাকা। আস্তে
আস্তে গাড়িতে এসে বসে রাঘব, একবার তাকায় চেকটার দিকে। এতে যা আছে তাতে
বোনের গাড়ি এসে যাবে, বাকি যা ব্যাঙ্কে আছে তাতে বিয়ের খরচ উঠে যাবে।
কাল সকালে এখানে আবার আসবে রাঘব, তবে কোনো কাস্টমারের কাছে নয় ; খাপছাড়া এক
পাগলের কাছে।
--" আমি জানিনা তুমি অপেক্ষা করবে কিনা, শুধু এটুকু জানি
অস্বীকার করবেনা।" যাদের সীমায় বাঁধা যায় না, তাদের বাঁধা যায় নাড়ির বাঁধনে। গাড়ি হু হু করে ছুটে চলেছে বাইপাস দিয়ে, একজোড়া চোখ এখন
অপেক্ষা করতে ব্যস্ত ; জীবন বদলে দেওয়া একটা সকালের জন্য।।
No comments:
Post a Comment