1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Wednesday, October 6, 2021

পলকে শুরু-শেষ

ছবি : ইন্টারনেট 

পলকে শুরু-শেষ

শুভজিৎ রায়


  ১ 

ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় রাত তিনটে অর্নব পড়ার টেবিলে সবেমাত্র বায়োলজি পড়া শেষ করে বইগুলো গুছিয়ে রাখছে,আর মনে মনে কি ভেবে হাসছে! হাসবেই না বা কেন? পরশু মহালয়া তারপর দূর্গাপূজা সমস্ত শরীরে আনন্দের ‌রেশ।কাল সকাল এগারোটার ফ্লাইটে বছর পর নিজের গ্রামের বাড়ি ফিরবে, মা তেরো বছর আগে মারা যাওয়ার পর প্রায় 7 বছর গ্রামের বাড়িতে অর্নব থেকেছিলো তারপর বাবার রেলের চাকরীর সুবাদেই রাজস্থানের রাজঘর শহরে ওকে এসে থাকতে হয়। তবে পিছুটান থেকেই যায় নিজের জমিদারি ভিটে,জ্যেঠু-কাকু আর সেখানকার গ্রাম-মানুষদের প্রতি, জন্মভূমি বলে কথা।বিশেষত একবিংশ শতাব্দীর যুগে দাঁড়িয়ে একান্নবর্তী পরিবারের মেলবন্ধন ও ভালোবাসার টানই হয়তো ওকে আকর্ষন করে।বর্ধমানের হলদিতে নিজের পুরোনো জমিদারি বাড়িতে দুজন প্রিয় মানুষই আছে যাদের কাছে নিজের কিছু ব্যক্তিগত কথা অর্নব শেয়ার করে,

-জুহি ওর ছোটো কাকার মেয়ে আর দাদু আদিত্য মোহন সেন,তিলকে তাল করা মহাগল্পের ওস্তাদ। এই সব ভাবতে ভাবতেই অর্নব পড়ার টেবিলে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে টেরই পায়নি।


  ২ 

জানলা থেকে বয়ে আসা উষ্ণ-শীতল বাতাস, চড়ুই পাখির ডাক আর একতলায় দাদুর ঘর থেকে ভেসে আসা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায়-ধরনীর বহিরাকাশে......দেবী পক্ষের আরম্ভে মহালয়ার পূর্ণ তিথিতে সেন বাড়িটা আজ যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে।আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে যেখানে সবাই টিভিতে মহালয়া দেখে,সেখানে দাদুর কড়া নির্দেশে সবাই সেকালের মতো রেডিয়োতে মহালয়ার দিন উপভোগ করে।অর্নব সকালে দুতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে এই সব প্রত্যক্ষ করছিলো।সকাল সাতটার সময় বাড়ির সবাই একত্র হলে অর্নব দাদু-ঠাকুমা-জ্যেঠু-কাকুর কাছে গিয়ে প্রনামটা সেরে নেয়। তারপর জুহির ঘরে গিয়ে বিভিন্ন আলাপ আলোচনার মধ্যে হঠাৎ ঠাকুমার ডাক,

-সবাই নিচে এসো সকালের খাবার খেয়ে নাও।               

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বাড়ির আনাচে-কানাচে ঘোরার সময় অর্নবের মনে পড়ে, কাল রাত্রে বাড়ির মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত শনিদেবের মূর্তির বদলে গনেশের মূর্তি অবস্থিত ছিলো! সেই মুহুর্তে শরীরে ঝটকা লাগলেও ক্লান্ত থাকায় কাউকে কোন প্রকার প্রশ্ন করেনি। 

তাই জবাব খুঁজতে অর্নব দাদুর কাছে ছোটে, দাদু বলেন যে,

-শোনো দাদুভাই,আমাদের মন্দিরে যে গঙ্গাধর পুরোত ছিল তাঁর বউয়ের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, ডাক্তারের কাছে না গিয়ে! পুরোত মশাই আরাধ্য শনিদেবের কাছে নিয়ে আসেন। কিন্তু তা সত্বেও ওর বউ মারা যায়। পড়ে বউয়ের অন্তিম সংস্কার সেরে এসে ইট দিয়ে শনি মূর্তি ভেঙে দেন আর ওই রাতেই গলায় দড়ি দিয়ে মারা যান।তাই আমরা ঘটনাটা অশুভ দেখে মূর্তি বদলে বিঘ্নহর্তার মূর্তি  বসিয়েছি।সবই ইহ জগতের প্রেমেরটান! বুঝলে দাদাভাই। 

অর্নব দাদুকে ‘ও’ শব্দটি বলে আনমনে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়। 


   ৩ 

ষষ্ঠীর আর চারদিন বাকি সেন বাড়িতে সাজো সাজো রব,নাট মন্দিরে দূর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায়ই শেষ।তবে নতুন দূর্গা প্রতিমা তো নয় 103 বছর আগের একই কাঠামোর উপর পুজো চলে আসছে।4 বছর আগে পুজোয় দাদুর কাছে অর্নব শুনেছিল কেন এত পুরোনো কাঠামোয় এখনও পুজো করা হয়? দাদু বলেছিল যে, 

-ওনার মা প্রথম যখন এই বাড়িতে বিয়ে করে আসেন, সেই বছর সেন বাড়িতে প্রথম দূর্গা পুজো অনুষ্ঠিত হয়। তবে আশ্চর্য ঘটনা হলো নবমী পুজো শেষ হওয়ার পর  দাদুর মা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরে জ্ঞান ফিরলে উনি জানান যে, 

-“স্বয়ং মা দূর্গা আদেশ করেছেন যে তাঁর প্রতিমা যেন বিসর্জন না দেওয়া হয়”।দাদুর দাদু অর্থাৎ দাদুর মার শ্বশুর নতুন গৃহবধূর কথা ফেলতে পারেননি। তাই এখনও প্রতি বছর সেই একই প্রতিমায় নতুন রং-সাজসজ্জা করে পুজো করা হয়। 

অর্নবের এই সব গাঁজা খুরি ঘটনায় বিশ্বাস হয় না। কারন ঘটনাটা দাদুর জন্মের আগের, আর বাবার মুখে শুনেছিল বাবার দাদু আর আমার দাদু নাকি সাংঘাতিক পরিমানের কিপটে ছিলেন। অর্নবের মতে, প্রতিমা বানাতে অনেক টাকা খরচ হবে তাই এই সব গল্প বানিয়ে সেন বাড়িকে ভুলিয়ে রেখেছে ওস্তাদ আদিত্য মোহন। তবে মা বেঁচে থাকলে নিশ্চিত এর সত্যতা অর্নব যাচাই করতে পারতো। 

রাত প্রায় সাড়ে বারোটা অর্নবের চোখে এক টুকরোও ঘুম নেই,ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে ফেসবুক-হোয়ার্টস অ্যাপে

জমা হওয়া ম্যাসেজ পড়ছে আর রিপ্লাই দিচ্ছে।কেউ দূর্গা পুজোর অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছে আবার কেউ ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসা করছে।বাইরে থেকে মৃদু মৃদু শীতল বাতাস ভেসে আসছে,ফোনটা রেখে অর্নব বিছানা থেকে উঠে মরীচা ধরা জানলার সামনে গেলো।কালো অন্ধকার রাত আকাশে শুক্ল পক্ষের বাঁকা চাঁদ,গ্রামের কোথাও আলোর ছোঁয়া নেই চারিদিক নিঃস্তব্ধ মাঝে মাঝে ঝিঁ ঝিঁ পোঁকা ডেকে উঠছে।বাড়ির সামনের বড়ো ঝিলটাতে চাঁদের কিরণ পড়ায় ঝিল মিল করছে।অর্নব ভাবছে, সে যেন বইতে পড়া হাজার বছর আগের চর্যাপদের যুগে ফিরে এসেছে।অর্নব এই সুন্দর মুহূর্তটিকে পূর্নতা দেওয়ার জন্য ফোনে তিনটি গান চালায়--

Bade Achhe Lagte Hain,Gali Main Aaj Chand Nikla আর Beete Lamhe.এই সবের মাঝে বারংবার পুরোনো বাড়ির ঝলসে পড়া ইট গুলো অর্নব ছুঁয়ে দেখছে।জন্মসূত্রে অর্নব জেনেছিলো বাড়িটা দাদুর দাদু জমিদার কাশ্যপ কান্তি সেন বানিয়েছিলে। বড়মার মুখে ছোটোবেলায় অর্নব শুনতো তিনি নাকি অত্যন্ত অত্যাচারী,প্রজা পীড়ক এবং কর আদায়কারী অর্থ পিপাসু জমিদার ছিলেন ফলে সাধারন জনগনের অভিশাপও প্রচুর কুড়িয়েছিলেন,শেষ জীবনে এসে তিনি নাকি ক্যান্সারে মারা যান। তাই সিমেন্ট গাঁথা প্রাচীরে হাত দিয়ে অর্নব ভাবছে কত মানুষের রক্ত জল করা পারিশ্রমিক শোষন করে-কত অভিশাপ-কত মানুষের চোখের জলে এই পাপের রাজপ্রাসাদ গড়ে তোলা হয়েছে তাঁর কোনো আন্দাজ নেই।


   ৪ 

নাটমন্দিরে ঢাকের আওয়াজ,পুরো বাড়িটা আনন্দের জোয়ারে মেতে উঠেছে।রান্না ঘরে বিভিন্ন ধরনের নিরামিষ খাবারে পরিপূর্ণ।কিন্তু পুজোর অঞ্জলী দেওয়ার আগে কিছু খাওয়া যাবে না।এই দিকে অর্নব পুকুরে স্নান করে এসে খাঁটি বাঙালিদের মতো ধুতি-পাঞ্জাবি পড়ে নিচে এসেছে।ওকে দেখে বাড়ির সবাই হতবাক! যে ছেলের মনে আধুনিকতার ছোঁয়া প্রাচীন পন্থিদের মতো ধুতি-পাঞ্জাবি পড়তে চায়না, সে আজ কি মনে করে......? অঞ্জলির শেষে ঠাকুমার হাতের সুস্বাদু খিচুড়ি আর পায়েস পুরো অমৃত সমান মনে হলো অর্নবের।এই ভাবেই ষষ্ঠী-সপ্তমী পাড় হয়ে গেলেও অষ্টমীর দিন ঘটলো বিপদের উপরে বিপদ। 

অর্নবদের দূর্গাপুজো করছিলেন যে পুরোহিত তাকে নাকি পথে আসতে গিয়ে সাপে দংশন করেছে, হাসপাতালে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রানে বেঁচে গেছে অবশ্য,তবে পুজো করার মতো অবস্থায় সে আর নেই।যাইহোক অর্নবদের পরিবারের মাথায় তখন ছাদ ভেঙে পড়ার মতো টেনশান,এই মুহূর্তে দাড়িয়ে ব্রাহ্মণ পাবে কোথায়?  আর সেন বংশের মতো ঐতিহ্যশালী বনেদি বাড়িতে যদি পুজো ভেস্তে যায় তবে মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি পড়বে।

অর্নব অন্যদিকে এই সব টেনশানে মাথা না ঘামিয়ে দুতলায় নিজের ঘরে গিয়ে মনের পাতা ওল্টাতে থাকে,হঠাৎ ওর মনে পড়ে 7 বছর আগে বাংলা স্যারের কাছে পড়ার সময় স্যার বলতো “আমার ছাত্র স্নেহাশীষ ব্যানার্জি একদিন এই শহরের সবচেয়ে বড় ব্রাহ্মণ হবে”।তখন কোনো ক্রমে ফোনে স্যারের কাছে স্নেহাশীষ ব্রাহ্মনের নম্বর নিয়ে ফোন করলে অর্নব জানতে পারে পাশের ক্লাবে সে পুজো করতে গেছে, তাই অর্নব কাল বিলম্ব না করে স্নেহাশীষ ব্রাহ্মণের বাড়ির ঠিকানা নেয়।

এরপর তাড়াতাড়ি সিঁড়ি থেকে নেমে বাবা-কাকাকে বাড়ির গাড়িতে করে নিয়ে স্নেহাশীষ ব্রাহ্মনের বাড়িতে উপস্থিত হলো। ব্রাহ্মন মশাই তখন ক্লাব থেকে সবে পুজো করে ফিরছেন।তখন স্নেহাশীষ ব্রাহ্মনকে সব ঘটনা খুলে বলা হলে তিনি সেন বাড়ির পুজো করতে রাজি হন। কিন্তু গাড়িতে আসার পথে অর্নব দেখে বজ্র-বিদ্র্যুৎ সংযোগে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে।যাইহোক স্নেহাশীষের আগমনে সেন বাড়ির লোকেরা শরীরে আবার প্রান পায়। সকাল 11:17 মিনিটে অষ্টমী পুজো শুরু হয় তারপর শেষ হতে হতে দুপুর তিনটে। তবে অর্নবের দাদু-ঠাকুমা তাঁর এই কাজে খুবই প্রসন্ন হন, তাঁরা বারবারই বলতে থাকেন,

-আমাদের দাদু ভাই হচ্ছে এই বংশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, যতই ওর ধর্মে-কর্মে বিশ্বাস না থাকুক।আজ যদি ‘ও’ না থাকতো তবে সেন বংশের তিলে তিলে অর্জন করা মান-সম্মান ডুবে যেতো। 

এককথায় বলতে গেলে সেন বাড়িতে অর্নবের মর্যাদা, প্রতিপত্তি যেন এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। কিন্তু অর্নবের ওইসব দিকে খেয়ালই নেই কত ওই রকম প্রশংসা ‘ও’ পেয়েছে তাঁর কুল-কিনারা নেই। 


  ৫ 

সেনবাড়ি তথা সমগ্র পরিবেশটাতে আজ কেমন যেন বিষাদের ঘনঘটা।অর্নবের মতো নাস্তিক ছেলেটার মনও আজ খাঁ খাঁ করে উঠছে,মনের মধ্যে একটা না বলতে পারা চাপা কান্নার আর্তনাদ ওর মধ্যে স্পষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাইরের জগৎটা আজ খুবই শান্ত,কোনো পশু-পাখির ডাকও  পাওয়া যাচ্ছে না। বছরে একবার মাত্র পাঁচটা দিনের জন্যই মা দূর্গা এই পৃথিবীতে আসেন তাঁর বাপের বাড়ি,পৃথিবীর যতো বড়ই কঠিন মনের মানুষ হোক না কেন দশমীর দিনটিতে তাঁর মনের মধ্যে এক অজানা বেদনা-বিষাদ থাকবেই অপ্রাকৃতিক ভাবে! 

স্নেহাশীষ ব্যানার্জির সাথে এই দুদিনের আলাপে অর্ণবের একটা ভালো সম্পর্ক হয়ে উঠেছে, তাই অর্নব স্নেহাশীষকে দাদা বলেই ডাকে।সে এসে দশমী পুজো শেষ করার পর সেন বাড়ির লোকেরা ওকে বিশেষত জোর করেই আজকের সারাদিনটা তাদের বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করে এবং তাঁর বাড়িতে ফোন করে এই কথাটা জানিয়ে দিতে বলে।এরপর জুহির মা মানে অর্নবের ছোট কাকিমার হাতে তৈরি লুচি-ছোলার ডাল,মিষ্টি খেয়ে শুরু হয় আসল অনুষ্ঠান,

-বাড়ির সবাই এবং গ্রামের অনেকে মাকে শেষ বিদায় জানানোর উদ্দেশ্যে তাকে বরন করে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে, বাড়ির পুরুষেরাও সিঁদুর খেলায় সেই জাক জমক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়, সে কি আনন্দ উল্লাস তা বলে বোঝানো যাবে না। তারপর মঙ্গল ঘট নদীতে বিসর্জন দিতে দিতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। অর্নব বাড়িতে ফিরে স্নান করে সবাইকে বিজয়া দশমীর প্রনাম সেরে নেয় এবং কিছু বকশিসও কাকা-জ্যেঠুর কাছ থেকে অর্নব পায়।স্নেহাশীষ দা সেই সময় বাড়ি চলে গেছেন তাই ওকে না খুঁজে নিজের ঘরেই চলে আসে অর্নব। 

পুজো শেষ আবার রাজস্থানে ফিরতে হবে, বাবা নবমীর দিনই ফ্লাইটের টিকিট বুকিং করেছেন,পরশু রাতেই চলে যেতে হবে,-এই সব ভাবতে ভাবতে অর্নবের মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে এসেছে। আবার একটা বছর নিজের মানুষদের ছেড়ে যাযাবরের মতো জীবন কাটাতে হবে,আর ভালো লাগে না অর্নবের বছরের পর বছর ভীন রাজ্যে থাকতে,তবে ওখান থেকে চলে আসারও কোনো উপায় নেই,অর্নবের সমস্ত পড়াশুনো ওখানেই চলছে,তবে মাঝে মাঝে অর্নব ভাবে যদি ইঞ্জিনিয়ারিং করার পর নিজের রাজ্যে চাকরিটা পেয়ে যায় তবে ভীন রাজ্য এমনকি বিদেশেও কোনো দিন আর যাবে না।অর্নব ওর ভেঙে পড়া মনকে শান্তনা দেয় এই ভেবে যে, 

-আর মাত্র একটা বছর তারপর আবার ফিরবো,দেখতে দেখতে সব ঋতু পার করে ফেলবো। চিন্তা নেই বস্ আসছে বছর আবার হবে। 


 ------------------সমাপ্ত------------------


                                                        suvojitroyal110802@gmail.com
                                                                    উত্তর 24 পরগনা

No comments:

Post a Comment