![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
নিষ্প্রান
গোপা চক্রবর্তী
হাড়ের কঙ্কালের খাঁচা ইঁটের পাঁজরে গাথা খাঁচাটার জীবনমৃত্যুর মধ্যের সুখ দুঃখের কত কথা বুকে নিয়ে সময় আজ জানিয়ে দেয় রায় বাড়ীর ছোট ছেলের টাকা পয়সার টানাটানি। এবছরে মায়ের পূজোয় তাই সে যোগদান করতে পারবে না।
বড় ছেলে সব শুনে বলেছিল , ঠিক আছে ,এবারে না হয় মায়ের কাজ আমরা চালিয়ে নেব, যেমন অন্যবার হয়। কিন্তু তুমি মায়ের কাজে থেক আনন্দের সঙ্গে। পরে যখন পারবে দেবে। বড় ভায়ের কথামত অন্য ভায়েরা, তাদের ছেলে মেয়ে,বৌমা,ননদ-নন্দাই ,নাতি ,নাতনি সবাই পুজো আনন্দ করে কাটালো ।
বাড়ির মন্দিরে প্রতিবারের মত এবারও কাঠামো গড়া থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন সবটাই নিয়ম মাফিক হলো। কিন্তু প্রতিমা নিরঞ্জনের দিনই বাড়ির ছোট ছেলে আকষ্মিক ভাবে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ল। ছোট ছেলে আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। ইদানীং অফিসের মাইনে অর্ধেক হওয়ায় তার অসুস্থতা আরও বেড়ে গিয়েছিল।
পূজোর আনন্দপূর্ণ মূহূর্তের ছবি যখন বাড়ির আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তখনই অভাবনীয় এই ঘটনা সম্পূৰ্ণ এক উল্টো ছবির বাতাবরন বয়েছিল বাড়ির প্রতিটি দেওয়ালের এ কোন থেকে ওকোণে।
এরকম ঘটনা পরের বারও কাক তালীয় ভাবে ঘটেছিল বয়বৃদ্ধ বড় ভায়ের আকষ্মিক মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে। তখন সকলের মনে চেপে বসেছিল অলৌকিকতার কথা। তাই নির্দিধায় সকলেই বাড়ি পরিত্যাগ করে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
রায় বাড়ির ছোট ছেলে আর বড় ছেলের শব ফাঁকা বাড়ির খাঁচার মত শরীরের খাঁচাকে ফেলে পরলোকে পা রেখেছিল।হাড়ের পাঁজরের শরীর ও ইঁটের পাঁজরের বাড়ি নিস্প্রান হয়ে পড়ে থাকে জন্মের স্মৃতি প্রেম বিরহ ,আনন্দের মিষ্টি , টক, ঝাল, নোনতা গন্ধ নিয়ে। যে গন্ধ লেগে থাকে প্রতিটি ধূলি কনায়। শুন্যতার ক্ষত নিয়ে।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment