1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Sunday, April 17, 2022

আন্দামান হ্যাভলক আইল্যান্ড : স্বরাজ দ্বীপ

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 


𝗦𝘄𝗮𝗿𝗮𝗷 𝗗𝘄𝗲𝗲𝗽 (𝑯𝒂𝒗𝒆𝒍𝒐𝒄𝒌) 

ডাঃ রণধী দাশ

আজকের ভ্রমণকাহিনী আন্দামানের হ্যাভলক আইল্যান্ড যার নাম এখন স্বরাজ দ্বীপ। সকাল সাড়ে ছটার সময় আমাদের হ্যাভলক যাবার ক্রুজ Aashi 1 ছাড়ার কথা। রিপোর্টিং এক ঘন্টা আগে করতে হয়, আমরা মোটামুটি সাড়ে পাঁচটার সময় হোটেল থেকে চেক আউট করলাম। হোটেল Sand Heaven থেকে ব্রেকফাস্ট টাও প্যাক্ করে দিল। জেটিতে এসে টিকিট এবং কোভিড ভ্যাক্সিনেশন সার্টিফিকেট দেখে ব্যাগ স্ক্যান হলো  তারপর আমাদের লাউঞ্জে বসতে হলো খানিকক্ষণ..  আগেই চলে এলো আমাদের ক্রুজ। আমরা লাগেজগুলো কে এক নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে উঠে গেলাম। ক্রুজের দুটো ক্লাস প্রিমিয়াম (লোয়ার ডেক) আর লাক্সারি (আপার ডেক), এটি পরে আপগ্রেড ও করা যায়।

খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জাহাজ, পুরোটাই এসি, চালু হলে বাইরে বেরোনোর নিয়ম নেই। আমরা লাক্সারি আপগ্রেড করে নিয়ে উপরে  গিয়ে বসলাম। আয়ুষ্মানের অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল যে জাহাজের কেবিনে যাবে এবং সেই ইচ্ছাটা তার এবারে পূরণ ও হয়ে গেল, কেবিন ঘুরেটুরে অনেক কিছু জেনে বাবু ফিরে এলেন। 

1 ঘন্টা 45 মিনিটের মধ্যে জাহাজ পৌঁছে গেল হ্যাভলক।  হ্যাভলক দ্বীপ ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের রিচির দ্বীপপুঞ্জের অংশ।

হ্যাভলক দ্বীপের নামকরণ করা হয়েছিল একজন ব্রিটিশ জেনারেল স্যার হেনরি হ্যাভলকের নামে, যিনি ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। 

ডিসেম্বর 2018 সালে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্বরাজ দ্বীপ হিসাবে এর নামকরণ করেছিলেন। নেতাজী 1943 সালের 30 ডিসেম্বর পোর্ট ব্লেয়ারে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরবর্তীকালে নীল দ্বীপকে শহীদ এবং হ্যাভলক দ্বীপের নাম দেন স্বরাজ দ্বীপ।

স্বরাজ দ্বীপ সুন্দর সাদা বালুকাময় সৈকত, সমৃদ্ধ প্রবাল প্রাচীর এবং সবুজ অরণ্য সহ একটি মনোরম প্রাকৃতিক স্বর্গ।

এটি প্রবাল প্রাচীর সহ ডাইভ সাইট এবং সমুদ্র সৈকতের জন্য পরিচিত, যেমন এলিফ্যান্ট বিচ। অর্ধচন্দ্রাকৃতির রাধানগর সমুদ্র সৈকত সূর্যাস্ত দেখার জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান। দ্বীপের পূর্ব দিকে, পাথুরে অংশগুলি লম্বা, গাছের রেখাযুক্ত বিজয়নগর সমুদ্র সৈকতকে চিহ্নিত করে। দ্বীপের অরণ্যঘেরা অভ্যন্তরভাগে পাখিপ্রাণী যেমন সাদা মাথার ময়না এবং কাঠঠোকরা রয়েছে।

এর আয়তন 113 বর্গ কিমি এবং পোর্ট ব্লেয়ারের উত্তর-পূর্বে 39 কিমি দূরে অবস্থিত।

জেটিতে আমাদের ড্রাইভার আমাদের নামের বোর্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, আমাদের লাগেজ গুলো নিয়ে আমরা উঠলাম গাড়িতে আর তার 15 মিনিটের মধ্যে আমাদের Ocean Tree Beach Resort এ। এখন আসা যাওয়ার রাস্তা খুব সুন্দর আর চারপাশে প্রচুর হোটেল এবং রিসোর্ট ।


আমাদের হোটেলটা খুব সুন্দর, কটেজ কটেজ করা, মাঝে একটা সুন্দর সুইমিংপুল, তার সঙ্গে একটা প্রাইভেট বিচ (𝓥𝓲𝓳𝓪𝔂𝓷𝓪𝓰𝓪𝓻 𝓑𝓮𝓪𝓬𝓱 এর মধ্যেই)এবং সেই সাগরের রং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের চেঞ্জ হয় । সূর্যোদয় দেখার জন্য আদর্শ। 

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

হোটেলে এসে একটু ফ্রেশ হয়ে খানিকক্ষণ এর মধ্যেই আমরা বেরিয়ে গেলাম.. টার্গেট দুটো বিচ - একটা কালা পাত্থর বিচ এবং আরেকটি হলো রাধানগর বিচ। সাথে বিজয়নগর সমুদ্রসৈকতে ও যাওয়া হল। আমার সবচেয়ে সুন্দর লাগলো কালা পাত্থর সমুদ্র সৈকত, তার প্রথম কারণ হচ্ছে এটি নির্জন এবং অপূর্ব সুন্দর নীল এর বিভিন্ন রকম শেডের রং সাগরে.. তাতে অনেক  ছবি উঠিয়ে আমরা চললাম রাধানগরের উদ্দেশ্যে।

লাঞ্চ করে রাধানগর বিচে পৌঁছে দেখলাম লোক তখন পিলপিল করছে আর প্রচন্ড গরম ।চেঞ্জিং রুম আছে এবং টয়লেটও আছে সব-ই  পে এন্ড ইউজ। এখানে কিন্তু কোনোরকম লকার নেই। বসার অনেক জায়গা, সুন্দর.. এখানে কোন ওয়াটার স্পোর্টস হয়না, এখানে লোকে আসে স্নান করার জন্য।

গরমের তন্দুরি হয়ে স্নান করে ক্লান্ত হয়ে আমরা ফিরে এলাম হোটেলে... তারপর খেয়ে দেয়ে ঘুম।

𝓚𝓪𝓵𝓪 𝓟𝓪𝓽𝓽𝓱𝓪𝓻 𝓑𝓮𝓪𝓬𝓱  :

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

নীল সমুদ্রের পাশে বড় কালো পাথর দিয়ে সাদা বালি ঘেরা একটি দীর্ঘ প্রসারিত সমুদ্রসৈক এটি। এটি হ্যাভলকের এক কোণে অবস্থিত এবং এটি সমুদ্র সৈকত নং ৫ এর অন্তর্ভুক্ত । 

সমুদ্র সৈকতটি peak Season এ ভিড় থাকে , তবে আপনি যদি দক্ষিণে আরও বেশি হাঁটা যায়, তবে একটা নির্জন জায়গা পাওয়া যায়, যেখানে নিজেকে একা পাওয়া যায় । সবুজ জঙ্গলের মাধ্যমে একটি ছোট লজিং পথ রয়েছে, যেখানে একবার একটি হাতি প্রশিক্ষণ শিবির ছিল, কিন্তু আজকাল তা নেই, যা পাওয়া যায় তা হল একটি বিচ্ছিন্ন সৈকত। সাবধানে সাঁতার কাটতে হয় এবং এটি জোয়ারের দ্বারা খুব একটা প্রভাবিত হয় না। কালপথারে বসার কয়েকটি ছাতা এবং কাঠের চেয়ার আছে । গাছের ছায়ায় বসে, জলের বিভিন্ন রকমের নীলের শেড  পরিবর্তন হওয়া দেখতে খুব সুন্দর লাগে।একটি ছোট পিকনিক এলাকা। স্থানীয়রা তাজা নারকেল এবং আম জুস বিক্রি করে, আর কিছু দোকান আছে, কিন্তু অন্য কোন সুবিধা নেই।

𝓡𝓪𝓭𝓱𝓪𝓷𝓪𝓰𝓪𝓻 𝓑𝓮𝓪𝓬𝓱 :

টাইম ম্যাগাজিন (ইউএসএ) দ্বারা এশিয়ার সেরা সমুদ্র সৈকত হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। রাধানগর (Beach 7) সৈকত শান্ত, সোনালি বালি এবং নীল সবুজ সমুদ্রের জল। ছোট ঢেউ এবং অগভীর গভীরতার কারণে সাঁতার কাটা এবং খেলার জন্য খুবই নিরাপদ।

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

খেজুর গাছে ঘেরা, সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের প্রকৃতির মাঝে বিশ্রাম নিতে একটি শান্ত পরিবেশ প্রদান করে। খালি পায়ে হেঁটে, জলের তরঙ্গগুলি পায়ের উপর বয়ে যাওয়া উপভোগ করা যায় । রাধানগর সমুদ্র সৈকতের আরেকটি আকর্ষণ হল নিল কোভ। সৈকত বরাবর একটি 10 ​​মিনিটের হাঁটা আপনাকে এই স্থানে নিয়ে যাবে। নিল কোভ হল একটি উপহ্রদ এবং এটি কম পরিচিত স্পটগুলির মধ্যে একটি। এই আকর্ষণটি প্রচুর ফটোগ্রাফির সুযোগও দেয়। তবে সূর্যাস্তের পর সাঁতার কাটা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

একটি সদ্য Blue flag সার্টিফাইড সমুদ্র সৈকত। 

ব্লু ফ্ল্যাগ হল একটি আন্তর্জাতিক ইকোট্যুরিজম মডেল যা ডেনমার্ক পরিবেশ-বান্ধব সমুদ্র সৈকতকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এবং সমস্ত ধরণের লোকেদের প্রবেশাধিকার বৃদ্ধির পাশাপাশি সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেয়। 

বর্তমানে, প্রোগ্রামটি 40 টিরও বেশি দেশে 4000টিরও বেশি সৈকত, বন্যপ্রাণী রক্ষা করছে। এই প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হল সমুদ্র সৈকতের সাথে মানুষকে সংযুক্ত করা এবং সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষার পথ তৈরি করা। 

এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী পুরস্কার যা সমুদ্র সৈকত এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ভ্রমণকে স্বীকৃতি দেয়।

আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন এজেন্সি, পরিবেশ শিক্ষার জন্য ফাউন্ডেশন, ডেনমার্ক চারটি প্রধান জিনিসের 33টি কঠোর মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে সৈকতগুলিকে সাবধানে বেছে নেয়... 

1. পরিবেশ শিক্ষা এবং তথ্য

2.  স্নানের জলের গুণমান 

3. পরিবেশ ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ এবং

4.  সৈকতে নিরাপত্তা এবং পরিষেবা।

দ্বিতীয় দিন... 

𝑬𝒍𝒆𝒑𝒉𝒂𝒏𝒕 𝑩𝒆𝒂𝒄𝒉 

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

পরের দিন সকালবেলা আমাদের গন্তব্য ছিল এলিফ্যান্ট বিচ। ব্রেকফাস্ট করে দশটার সময় আমরা পৌছে গেলাম জেটিতে.. সেখান থেকে লঞ্চ করে এলিফ্যান্ট বিচ। 


এলিফ্যান্ট বিচ হ্যাভলক দ্বীপের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্যগুলির মধ্যে অন্যতম , এর নির্মলতা, স্বচ্ছ জল এবং water sports এর কারণে। এটি উত্তর স্বরাজ দ্বীপের একটি নির্জন অংশে অবস্থিত, যেখানে পৌঁছাতে হয় নৌকার মাধ্যমে বা বনের মধ্য দিয়ে ট্রেকিং করে। এলাকাটি নিজেই বেশ মনমুগ্ধকর। 

ঘন গ্রীষ্মমন্ডলীয় জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত, সৈকতটি চারদিক থেকে লম্বা গাছ এবং সবুজে আচ্ছাদিত, যা সাদা বালি দিয়ে একটি বিস্তৃত সৈকত।

এলিফ্যান্ট বীচ অ্যাডভেঞ্চার উৎসাহীদের দ্বারা পছন্দ করার সবচেয়ে বিশিষ্ট কারণ হল যে সমুদ্র সৈকতটি অনেক রকম ওয়াটার স্পোর্টস হয় যেগুলো অন্যান্য জায়গায় হয় না। 

জলতরঙ্গগুলি মাঝারি এবং প্রাণবন্ত, যা জেট স্কিইং, কায়াকিং, স্পিড বোট, বানানা, ডিস্কো এবং সোফা বোট রাইডের মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসগুলিকে আরও উপভোগ্য করে তোলে। Coral দেখার জন্যে আদর্শ এই জায়গা। 

সমুদ্র স্ফটিক স্বচ্ছ এবং একটি প্রশস্ত জলের নীচে প্রচুর সামুদ্রিক রংবেরঙের মাছ এবং কোরালের জন্য স্নোরকেলিং, scuba, sea walking এখানে খুবই জনপ্রিয়। এখানকার গভীর সমুদ্রে প্রবাল এবং জলের নিচের বৈচিত্র্য স্বরাজ দ্বীপের অন্য কোনো স্থানের সাথে তুলনা করা যায় না। বিভিন্ন প্রজাতির রঙিন মাছের বাসস্থান, কঠিন এবং নরম কোরাল উভয়ের সংমিশ্রণে, সমুদ্র সৈকতটি সী ওয়াক, গ্লাস বটম বোট এবং স্নরকেলিং (Gopro ফটোগ্রাফি কম্প্লিমেন্টারি) এর মতো ক্রিয়াকলাপের জন্য সেরা জায়গাগুলির মধ্যে একটি।

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 


আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে 560 টিরও বেশি প্রজাতির প্রবাল রয়েছে, যার নিছক রঙ এবং বৈচিত্র্য একজনকে মুগ্ধ করে। প্রবাল হল ক্ষুদ্র জীব যা বিশাল ক্যালকারিয়াস স্কেলেটন নিঃসরণ করে এবং সম্মিলিতভাবে ক্যালসিয়াম কার্বনেট জমা করে বড় উপনিবেশ গঠন করে। 

গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্বীপপুঞ্জে 165টি পরিবারের প্রায় 1,439 প্রজাতির মাছ রয়েছে।  

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 
প্রবাল প্রাচীরগুলি আন্দামানে 11,000 বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং নিকোবরের প্রবাল প্রাচীরের নীচে 2,700 বর্গ কিমি এলাকা রয়েছে।


প্রাচীর গঠনে অবদানকারী সাধারণ জেনেরা হল.. Acropora, Montipora, Pocillopora, Porites, Goniopora, Favia, Fungia, Millepora, Soft Coral (Sarcophyton sp.) Heliopora etc. 

এই দ্বীপগুলির একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল  non-scleractinian (soft) corals প্রাচুর্য।

একটি সাধারণ প্রাচীরে, প্রবাল, ক্লাম, স্পঞ্জ, শামুক, অ্যানিমোন, কাঁকড়া, স্টারফিশ, চিংড়ি, গলদা চিংড়ি, ইল, মান্টা রে, octopuse, squid ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায় । এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ যেমন ড্যামসেলফিশ, গ্রুপার, সার্জন ফিশ, butterfly fish, Angel fish, Ocellaris Clownfish, Giant Trevally, Blue Fin Trevally, Coral Trout, Green Jobfish, Wahoo, Skipjack Tuna, Dorado ইত্যাদি দেখা যায় ।

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রাচীরের জন্য প্রধান কাঠামো নির্মাতাদের মধ্যে প্রবালের পোরাইটিস গ্রুপ অন্যতম। এরা পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘজীবী (অন্তত 200-300 বছর) এবং সবচেয়ে বড় (6-7 মিটার পর্যন্ত লম্বা) পাথুরে প্রবাল। তারা অন্যান্য প্রবাল, মাছ এবং লক্ষ লক্ষ রিফ ডেনিজেনকে তাদের নিজস্ব ক্যালসিয়াম দেয়ালে উপনিবেশ স্থাপন এবং আরও বৃদ্ধি করার জন্য একটি ভিত্তি প্রদান করে। যদিও পোরাইট বোল্ডারগুলি আয়তন বিশাল বিশাল আর বয়স ও অনেক , তবে তারা অত্যন্ত ধীর গতিতে বৃদ্ধি পায় (গড়ে বছরে 1-2 সেমি)। 


বাস্তুতন্ত্র হিসাবে প্রবাল প্রাচীরগুলির মধ্যে ছোট বাস্তুতন্ত্র থাকতে পারে। Crinoidea, star fish, sea urchins এবং sea cucumbers নিকটাত্মীয়।  তারা শিকারী এবং স্রোত থেকে অস্থায়ী বা স্থায়ী ছোট প্রাণীদের শিকার করে। 

সত্যিকারের গুপ্তধনের মতো, আন্দামানের অগভীর অঞ্চলে বিচিত্র সামুদ্রিক জীবনের অনেক কিছুই লুকিয়ে আছে। প্রবাল শিলার ক্যালসিয়াম দেয়ালে বৈদ্যুতিক ক্ল্যামগুলি (Ctenoides ales) কার্যত ছায়াযুক্ত ঢাল এবং পাথরের গুহাগুলিতে এমবেড হয়ে থাকে । তাদের শেলগুলির প্রবেশদ্বারের বাইরের একটি সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই স্পন্দনশীল আলোকে প্রায়ই বায়োলুমিনিসেন্সের ফল বলে বলে ধরে নেওয়া হয়। 

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

সৈকতে আরও নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার জন্য উপযুক্ত চেঞ্জিং রুম, লকার (100/ লকার) এবং বাথরুম (পে এন্ড ইউজ) সুবিধা রয়েছে।

এখানকার ওয়াটার স্পোর্টসের রেট পোর্ট ব্লেয়ারের থেকে কম।

আয়ুষ্মান এখন প্রবল সাহসী, সে আমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন রকম স্পোর্টস করল যেটা দেখে তার মায়ের হৃদপিণ্ড বন্ধ হয়ে যাবার অপেক্ষা এবং সেটা শুনে বাড়িতে দিম্মা এবং ঠাম্মার হৃদপিণ্ড মনে হয় বন্ধ হয়ে গেছিল। 

গিন্নি তো কোনরকম ওয়াটার স্পোর্টস এর মধ্যে না গিয়ে সারাক্ষণ খাই খাই করে পাপড়ি চাট, নানারকম ফ্রুট জুস এইসব খেয়ে বলল লাঞ্চটা তাহলে হয়েই গেল...হোটেলে গিয়ে আর কিছু খাব না। 

ছবি : ডাঃ রণধী দাশ 

আমরা সবকিছু করে তিনটের সময় ওখান থেকে বেরিয়ে চলে এলাম লঞ্চে করে আবার জেটিতে। জেটিতে গিয়ে ওর মায়ের পেট উসখুস করতে আরম্ভ করল... সামনেই বেয়ারফুটের জিলাটো পাওয়া যাচ্ছিল... একটা চকলেট জিলাটো গবগব করে গলাধঃকরণ করলো.. তারপর গাড়িতে বসে রিসোর্টে ফিরে বলল খিদে এখনো যায়নি.. অর্ডার হয়ে গেল চাওমিনের, তারপর চাওমিন ইত্যাদি খেয়ে আমরা সুইমিংপুলে ঝাপিয়ে পড়লাম। তিনজনে মিলে জলের মধ্যে বেশ খানিকক্ষণ খেলা করে ক্লান্ত হয়ে সবাই বিছানায় যে যার মত কাজ করতে করতে চোখ বন্ধ করে ভাবতে ভাবতে ঘুমের মধ্যে ঢলে পরলো.....

তথ্যসূত্র: অন্তর্জাল



𝗧𝗵𝗶𝗻𝗴𝘀 𝘁𝗼 𝗿𝗲𝗺𝗲𝗺𝗯𝗲𝗿 :

• Port Blair এর মধ্যে যেখানে যাবেন অটোতে যান। তিন জনের বেশী নেয় না। তিনজনের ভাড়া একই। 

• Tour plan আবহাওয়ার উপর নির্ভরশীল কখনো সাইক্লোন এলার্ট হলে পুরো বন্ধ হয়ে যায়। 

• পিক টাইমে হোটেল, জাহাজ টিকিট,  entry fee for tourist spot etc online এ বুক করতে ভুলবেন না।

• সোমবার সেলুলার জেল এবং Barathang এর Lime cave বন্ধ থাকে।

• Port Blair, Havelock and Neil island এ license থাকলে মোটর সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়।

যথেষ্ট সস্তা এবং সুবিধাজনক। 

• সাধারনত  December to May Jolly Buoy এবং June to November Red Skin খোলা থাকে।

• এখানে বেশিরভাগই টুরিস্ট গাড়ি.. বড় গাড়ি যেমন মাহিন্দ্রা জাইলো, মারুতি আরটিগা, শেভ্রোলে এনজয় এবং একই গাড়ি অনেকজন টুরিস্ট কে নিয়ে সাফলিং করে, তাই টাইম মেনটেন করাটা খুব ইম্পরট্যান্ট। 

• যদি খুব বড় সমুদ্র প্রেমিক না হয়, তাহলে তিন চার দিনের মধ্যেই এত সমুদ্র সৈকত দেখে বোর হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। 

• কেনাকাটা করতে হলে অটোতে সাগরিকা যেতে হবে। 

• ওয়াটার স্পোর্টস এর জন্য North Bay সবচেয়ে এক্সপেন্সিভ, তারপরে হ্যাভলক এবং সবচেয়ে সস্তা এবং দরাদরি করা যায় নীলে। 

• তিনটে জায়গারই কোরাল এবং সামুদ্রিক প্রাণীর বৈশিষ্ট্য আলাদা আলাদা.. তাই জলে না ভিজে গ্লাস বটম বোটে করে ঘোরা অথবা স্নোরকেলিং করাটা উচিত হবে। 

• তিনটের মধ্যে ওয়াটার স্পোর্টস করার সবচেয়ে ভালো জায়গা আমার মতে হ্যাভলক এর এলিফ্যান্ট বিচ ( এলিফ্যান্ট বীচে আন্ডার ওয়াটার ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগ্রাফি ফ্রী )। 

• ওয়াটার স্পোর্টস এবং অন্যান্য অনেক কিছু.. এখানে ক্রেডিট কার্ড অথবা Gpay চলে না তাই ক্যাশ ক্যারি করা উচিত হবে। 

• নীলে মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট খুব স্লো, শুধুমাত্র বিএসএনএল এবং এয়ারটেল পাওয়া যায়, তাই এইখানেও বেশিরভাগ হোটেলে ক্রেডিট কার্ড নেয়না.. ক্যাশে পেমেন্ট করতে বলে। 

• ভোর চারটের সময় Bartang আইল্যান্ডে না বেরোলেও হয়, ছটা থেকে সাতটার মধ্যে গেলেও সবকিছু করে ফিরে আসা যায়। তবে শুধু জারোয়া দেখব বলে যাওয়াটা একেবারেই বোকামি, কেননা জারোয়া দেখা যায় না। ওখানে Mud Volcano আর লাইমস্টোন cave ছাড়া আর কিছু নাই। 

• ফেরীতে যদি সিট অ্যাভেলেবল থাকে তাহলে ফেরির মধ্যে থেকেই আপগ্রেড করা সম্ভব। 

• পোর্ট ব্লেয়ার ছাড়া অন্যান্য হোটেল MAP প্ল্যানে যাওয়া ভালো- ব্রেকফাস্ট এবং ডিনার। 

• ভ্যাক্সিনেটেড যারা তাদের সার্টিফিকেট দেখা হয় এয়ারপোর্টে। নন-ভ্যাক্সিনেটেড বা পার্শিয়াল ভ্যাকসিনেটেড যারা রয়েছে তাদের এয়ারপোর্ট থেকে বাসে করে পাশেই একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়, ওখানে RT-PCR টেস্ট করা হয়। একটা পেন নিয়ে আসা ভালো। 

• 'লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো' সেলুলার জেলের সঙ্গে সঙ্গে রস অথবা NSCB আইল্যান্ডে ও হয়। চারটের সময় জেটি থেকে লঞ্চ ছাড়ে.. সেই লঞ্চ ফেরা। 

• থাকার জন্যে Clock Tower, Aberdeen Bazar, Airport এর কাছে, Marina Park এর কাছে, Flag Point এর কাছে ভালো। কাছাকাছি সব কিছুই পাওয়া যাবে। 

• গাড়ি এবং বোটের ড্রাইভারই আপনার গাইড, তাই সেইটা ভালো করে বুঝে নেবেন.. ড্রাইভার কতটা কমিউনিকেটিভ এবং কতটা পর্যটক ফ্রেন্ডলি...নয়তো প্রবলেম হবার সমূহ সম্ভাবনা। 




তথ্যসূত্র: অন্তর্জাল

𝐎𝐜𝐞𝐚𝐧 𝐓𝐫𝐞𝐞 𝐁𝐞𝐚𝐜𝐡 𝐑𝐞𝐬𝐨𝐫𝐭, 𝐇𝐚𝐯𝐞𝐥𝐨𝐜𝐤 

𝘼𝙢𝙗𝙞𝙚𝙣𝙘𝙚 - 4.5/5

𝙃𝙤𝙨𝙥𝙞𝙩𝙖𝙡𝙞𝙩𝙮 - 3.5/5

𝙎𝙚𝙧𝙫𝙞𝙘𝙚 - 3.5/5

𝘾𝙡𝙚𝙖𝙣𝙡𝙞𝙣𝙚𝙨𝙨 - 3.5/5

𝙁𝙤𝙤𝙙 - 3/5

𝙎𝙡𝙚𝙚𝙥 𝙦𝙪𝙖𝙡𝙞𝙩𝙮 - 3.5/5

𝙁𝙖𝙘𝙞𝙡𝙞𝙩𝙞𝙚𝙨 𝙥𝙧𝙤𝙫𝙞𝙙𝙚𝙙 - 3.5/5

𝙎𝙚𝙣𝙞𝙤𝙧 𝙘𝙞𝙩𝙞𝙯𝙚𝙣𝙨 𝙚𝙖𝙨𝙚 𝙖𝙣𝙙 𝙖𝙘𝙘𝙚𝙨𝙨𝙞𝙗𝙞𝙡𝙞𝙩𝙮 - 4/5

𝘾𝙤𝙣𝙣𝙚𝙘𝙩𝙞𝙫𝙞𝙩𝙮 - 4/5

𝙑𝙖𝙡𝙪𝙚 𝙛𝙤𝙧 𝙢𝙤𝙣𝙚𝙮 - 3/5

...(সমাপ্ত)...


No comments:

Post a Comment