বেলস পলসি
ডাঃ সম্পূর্ণা ঘোষ
কাকে বলে :
-হঠাৎ মুখের এক পাশের মাংসপেশি ঝুলে গেলে তাকে বেলস পেলসি বলে ।
-এটা ভাইরাস সংক্রমনের জন্য হতে পারে , এটাকে অ্যাকিউট পেরিফেরাল ফেসিয়াল পলসিও বলে।
কারণ :
-সঠিক কারণ অজানা কিন্তু ভাইরাসের জন্য হয়।
কি কি ভাইরাস :
-হারপিস জোস্টার
-হারপিস সিম্প্লেক্স
-এপস্টেইনবার ভাইরাস
-জার্মান মিজেলস ভাইরাস
-রুবেলা ভাইরাস
-ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
-মাম্পস ভাইরাস
অন্যান্য :
-কোন আঘাত লাগলে
-স্ট্রোকে
কিসে কিসে ঝুঁকি আছে :
-ঠান্ডা হাওয়া ( আমি এরকমও দেখেছি বর্ষাকালে ট্রেনের খোলা জানালার দিকে বসে আড়াই ঘণ্টা মুখে ঠান্ডা হাওয়া লাগার পর যখন স্টেশনে নেমেছে হঠাৎ করে বেলস পেলসি হয়ে গেছে )
-ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা খাবার বার করেই খেয়ে নেওয়া
-মধুমেহ রোগীর ক্ষেত্রে.
-শ্বাসনালীর সংক্রমণ আছে এরকম রোগীর ক্ষেত্রে
লক্ষণ :
-চোখ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে না
-চোখের কোনাটা নিচের দিকে ঝুলে থাকবে
-মুখের দুই দিক দেখতে দুই রকম লাগবে
-নেজলেবিআল(nasolabial) ভাজটা থাকবে না যেদিকে সংক্রমণ হয়েছে সেই দিকে
-যেদিকে সংক্রমণ হয়েছে সেই দিকের ঠোঁটের কোনাটা ঝুলে থাকবে
-ভ্রু কোঁচাতে পারবেনা
-মুখের দু দিকের হাসি দু রকম হবে
-মুখের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে বা তৈরি করতে পারবে না এক দিকের পেশি অসাড় হয়ে যাবার কারণে
-মুখের কথা জড়িয়ে যাবে জিভের একটা দিক অসাড় হয়ে থাকার কারণে
-রোগী জিভের একদিকে স্বাদ পাবে না
-কখনো কখনো কানে ব্যথা থাকে
কিছু গুরুত্বপূর্ণ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ :
একনাইটাম নেপেলাস :
-যদি ঠান্ডা হাওয়া থেকে বেলস পলসি হয় তবে প্রথমে একনাইটাম নেপেলাস কথা চিন্তা করবেন ।
কস্টিকাম :
-এটা পুরনো বা ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রে মাংসপেশীর শক্তি বাড়াতে এই ওষুধ সাহায্য করে, সাধারণত ডান দিকের সংক্রমণে বেশি ভালো কাজ করে।
ডালকামারা :
-এটা বর্ষাকালে বেশি ভালো কাজ দেয় ; রোগীর ভিজে ঠান্ডা মেঝেতে শোয়ার কোন ইতিহাস থাকলে এই ওষুধ ব্যবহার করা যায়
বেলেডোনা :
-যদি কানে ব্যথা বা যন্ত্রণা থাকে এবং যখন স্নায়ু প্রদাহ জনিত কারণে রোগীর মুখ লাল হয়ে থাকে তখন এই ওষুধ ব্যবহার করতে পারবেন।
হাইপেরিকাম :
-বেলস পেলসি যখন কোন আঘাত থেকে হয়।
নাক্স ভোমিকা :
-বেলস পেলসির সাথে যদি রোগী মানসিকভাবে ভীষণ অধর্য হয়ে পড়ে , একটুতেই ভীষণ রেগে যায় বা খিটখিটে মেজাজ থাকে তাহলে নাক্স ভোমিকা কথা চিন্তা করবেন
ব্যবস্থাপনা :
-অবশ্যই শীতে এবং বর্ষায় ট্রেনের খোলা জানালার দিকে বসবেন না
-ফ্রিজ থেকে খাবার বার করে সেটাকে সাধারণত তাপমাত্রায় আসতে দিন তারপর খাবেন
-যাদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা আছে, তারা চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য মাথায় বহুক্ষণ কোন ঠান্ডা প্যাক লাগিয়ে রেখে দেবেন না
-আর শেষে বলবো অবশ্যই ওষুধের সাথে সাথে ফিজিওথেরাপি করলে খুব তাড়াতাড়ি এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment