ছবি : ইন্টারনেট |
পট পরিবর্তন
সুমিত্রা পাল
শাশুড়ি ঠাকরুন রোগে আক্রান্ত থাকেন বছরভর। ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড
প্রেসার, কখনো বাতের ব্যথা তো কখনো পেটের গণ্ডগোল। বিছানায় শুয়ে বসে কুকিয়ে ককিয়ে দিনগুলি
কাটে তার।
শ্বশুরমশাই ঠিক তার
উল্টো। প্রচণ্ড এনার্জিটিক। সারাক্ষণ কিছু না কিছু করেই চলেছেন। পাপাইকে স্কুলে দিয়ে
আসা-নিয়ে আসা, রোজ বিকেলে পার্কে ঘুরতে যাওয়া, বাগানে বিভিন্ন মরশুমি ফুলের গাছ লাগানো
সেইসঙ্গে তাদের সঠিক পরিচর্যা, কখনো উত্তরার সঙ্গে রান্নায় হাত লাগানো… প্রাণপ্রাচুর্যে
ভরপুর বাহাত্তর বছরের এক যুবক যেন।
প্রতিমাসে উত্তরা
শাশুড়িমাকে চেক আপ করিয়ে আনে। সেদিন শ্বশুরমশাইকে সামনে পেয়ে বলল
-‘চলুন বাবা, আপনারও একটা থরো চেক আপ করিয়ে আনি’!
-‘আরে আমি একেবারে ফিট এন্ড ফাইন। আমার এসবের দরকার নেই। তুমি
বরং তোমার শাশুড়ি মায়েরটা করিয়ে আনোগে যাও’। জবাব দিয়েই পালাতে চাইলেন শ্বশুরমশাই।
কিন্তু নাছোড়বান্দা উত্তরা। বলে
-‘আপনারও তো মাঝে মাঝে মাথা ঘোরায়, কানে ঝি ঝি পোকার আওয়াজ শোনেন।
এই বয়সে মাঝে মাঝে চেক আপ করিয়ে নিলে নিশ্চিন্ত হওয়া যায় বাবা’।
কী মনে করে শেষ পর্যন্ত রাজি হলেন শ্বশুরমশাই।
কয়েকদিন পর রিপোর্ট
নিতে উত্তরা এসেছে হাসপাতালে। রিপোর্ট পড়ে তার পায়ের নীচের মাটি যেন সরে গেল। শাশুড়ির
সবকিছু নরম্যাল। শ্বশুরমশাই লিউক্যোমিয়ায় আক্রান্ত। লাস্ট স্টেজ। খুব বেশি হলে তিন-চার
মাস তার জীবনের আয়ু।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment