1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Wednesday, October 2, 2024

তিন্নির বন্ধু সৃজন

ছবি : ইন্টারনেট

তিন্নির বন্ধু সৃজন

গোপা চক্রবর্তী

তিনু (তিন্নির) আজ একটা গল্প শুনবি ?  সৃজন বলল।

কিসের গল্প রে ? তোর স্কুলের মাস্টার মশায়ের গল্প ?  ধ্যাত, মাস্টার মশায়ের গল্প কেন হবে ! 'মাস্টার মশায়ের' বলা গল্প। একটা হিপোর গল্প রে । হিপোটা নাকি খুব রাগী। আর মানুষ দেখলেই ওমনি জলের তলা দিয়ে লুকিয়ে চলে আসে মানুষের কাছে। হাত পা কামড়ে জলে টেনে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলে। 

আরে  শুনেছি কুমীরও তাই করে। কুমীর তো মাংস খায় ,তাই মাংস না পেলে হয়ত ওরকমই করে। কিন্তু হিপো যে মাংস খায় শুনিনি তো !

আমিও শুনিনি। আসলে হিপো মাংস খায় না , হিপো জলে জন্মায় এমন গাছ, গাছের পাতা খায়  হাতির প্রজাতি বলে। কিন্তু ওরাও নাকি মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। "ও তাই !" দেখে তো ওদের শান্ত লাগে রে।

শান্ত হলেও, জানিস, আমাদের কালুয়া কেমন রাগী ছিল ?! একদিন খুব ঘেউ ঘেউ করছিল। যাকে পাচ্ছে তাকে দেখেই যেন কামড়াতে যাচ্ছিল। সেইদিন ওকে ধরে খাঁচায় ভরে দিতে ওর কি রাগ! দুদিন ও কিছুই খায়নি। তারপর একদিন দেখি  কিভাবে খাঁচা খুলে ও পালিয়েছে। আমরা সবাই ওকে খুঁজলাম সারাদিন ধরে তবু কোথাও পেলাম না। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। কোথায় ও ঘাপটি মেরে ছিল কে জানে ! পরের দিন দেখি সকালবেলা আমাদের বাড়ির দরজার সামনে কুঁই... কুঁ..ই.. করে কাঁদছে। মাথায় হাত বুলিয়ে অনেকক্ষন আদর করতে তবে অভিমান ঘুচল। 

হ্যাঁ, আসলে ওর অভিমান হয়েছিল, রাগ নয় রে তিনু.... দূর....রাগ থেকেই তো অভিমান হয়। তুই জানিস না। আচ্ছা, আমার গল্পটা শুনবি কিনা বল ?  হ্যাঁ,শুনব বল।  তিতু , তুই আফ্রিকায় বেড়াতে গেছিস কখনও ?  

না, রে যাওয়া হয়নি। তবে একবার মিশরে যাওয়ার কথা হয়েছিল। কি কারনে আর যাওয়া হয়নি।

হ্যাঁ,আমারও ।  মিশর আমার খুব পছন্দের। পিরামিড আছে। কত পুরোনো সভ্যতা। আবার ক্লিওপেট্রার জায়গা।

হ্যাঁ, রানী ছিল তো আলেকজান্দ্রিয়ার। খুব সুন্দর দেখতে ! কিন্তু মমি করে পিরামিডের ভেতর কেন রাখত বলত ?!  

ও তুই জানিস না কেন রাখত !  ওরা আসলে ভাবত, মানুষ মারা গেলেও আবার ফিরে আসবে ! তাই ওদের আগের দেহ যাতে ফিরে পায় তার জন্য মমি করত। কিন্তু  মমির কথা শুরু করলে তোকে আর গল্পটা বলা হবে না। তাই মমির কথা পরে বলব।

আসলে গল্পটা আফ্রিকার জাম্বিয়া নামে এক দেশের গল্প। ওখানে কয়েকটি জায়গা আছে যেখানে মানুষের বসবাস কোন জলাশয়ের ধারে। সেই জায়গার মানুষরা জলাশয় থেকে মাছ ধরে খায় আর বিক্রি করে। সেই সব জলাশয়ে ধারে প্রচুর জলহস্তী থাকে।  মাছ ধরার সময় ওদের হয়ত  অসুবিধা হয় কেননা ওরাও মানুষকে ভয় পায়। আর ওরা তো জলজ গাছ খায় । তাই রেগে গিয়ে মানুষকে আঘাত করে।

কি রে সৃজন, তুই কি করে জানলি ?  আরে টিভিতে ডিসকভারি

চ্যানেলে মাঝে মাঝে দেখায়। জানিস, একটা জলহস্তীকে মানুষরা মেরে ফেলেছিল গুলি করে। যারা এই সব প্রাণীদের লক্ষ রাখে, তারা ঠিক খবর পেয়েছিল। তারা সেখানে গিয়ে

পরীক্ষা করে দেখে কোন জলহস্তী সেরকম নয় যে বিনা কারনে মানুষকে আঘাত করবে। পরে জানা গেল ওদের মধ্যে কেউ চোরা শিকারির কাজ করে। তারাই এই সমস্ত প্রাণীকে মেরে মাংস বিক্রি করে। কারা করে তাদের ধরে জেলে ভরে দিয়েছিল ওরা। ও তাই !

জানিস, ওই জলহস্তীর একটা বাচ্চা ছিল। ওকে , ওরা একটা অভয়ারণ্যে রেখে এসেছিল। যাতে ওকে  কেউ আঘাত না করে। অভয়ারণ্য মানে কি জানিস তো ?

যেখানে কোন ভয় নেই । হ্যাঁ, ঠিক বলেছিস। বন্য প্রাণী , বড়ো গাছ আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করে তাই এদের যত্ন নেওয়া খুব প্রয়োজন।

...(সমাপ্ত)...

No comments:

Post a Comment