1 / 7
2 / 7
3 / 7
4 / 7
5 / 7
6 / 7
7 / 7

Wednesday, January 1, 2020

নরক দর্শন

                                                                                          ...মালবিকা বাহুবলীন্দ্র(কুন্ডু)
          মিঠাই ঘরের চাবি খুলতে না খুলতেই পাওয়ার কাট। মর, এবার হাতড়ে হাতড়ে। কোনোমতে ভেতরে ঢুকে জুতো খুলে হাতের ব্যাগটা টেবিলে রেখে এগোতে গিয়ে অনুভব করে যে টেবিলে ব্যাগটা সে রাখতেই পারেনি ,কেননা টেবিলটা জায়গা মতো নেই। নেই চেয়ারগুলো।ব্যাগ হাতড়ে হাতড়ে মোবাইলটাও খুঁজে পাওয়া গেলনা।অগত্যা হাতড়ে হাতড়ে এগোতে এগোতে মিঠাই ভাবে অন্য কারোর ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়েছে কিনা।কিন্তু চাবিটা দিয়ে তাহলে খুললো কি করে !! এই রকম সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে এগোতে থাকে সে।ততক্ষনে অন্ধকারটা খানিক চোখ সওয়া হয়ে উঠেছে। শোয়ার ঘরের দিকে তাকিয়ে দেখলো,সেটাও তো ফাঁকা গড়ের মাঠ। সব সাফ সুতরো । এতক্ষনে নিশ্চিত মিঠাই তার ঘরের সব কিছু চুরি হয়ে গেছে।মাথাটা ঘুরছে,সব কিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে।
সম্বিত ফিরলো তার আরে!! চোরটি ঢুকলো কি ভাবে ? এত ঢাউস ঢাউস ফার্নিচার নিয়ে গেলেই বা কি করে ? নাহ অন্য  কোনো গল্প আছে । চোখ বন্ধ করে ধাতস্থ করে নিজেকে ।তার পর প্যাসেজের দিকে তাকিয়ে দেখল একজন লম্বা চওড়া মানুষ দাঁড়িয়ে আছে।অবাক হতে হতে আর কিছুতে অবাক হওয়া বাকি নেই ওর।তাই সদর্পে এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করে মিঠাই "কে আপনি ?আমার অনুমতি ছাড়া আমার ঘরে ঢুকলেই বা কি করে? করছেনটাই বা কি ? মানুষটি বিদ্রুপের হাসি হেসে বললেন " কোথাও যেতে আমার কারোর কাছে কখনই কোনও অনুমতির প্রয়োজন হয় না" । বলে কি !!" তা আপনি কে ? ভগবান নাকি ?"তা একরকম তাই"।বলেন মানুষটি। ভেবলে যায় মিঠাই ।
          জলপ্রপাতের তুমুল জল স্রোতের মতো অনেক অনেক জিজ্ঞাসা ভীড় করে আসে তার মনে। কোনো মতে তুতলে তুতলে বলে সে " তা হঠাৎ আমার কাছে কেন,একরকম তাই ভগবানমশাই"? উত্তর না দিয়ে মানুষটি মিঠায়ের কানটি সোজোরে পেঁচিয়ে ধরে এগিয়ে চলে।
"এটা কি হলো "? মিঠাই য়ের কথার কোনো উত্তর না দিয়েই দিব্যি এগিয়ে চললেন। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে দেখে একজন সুপুরুষ (যদিও আবছা আবছা আলোয়) মানুষ চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছেন ।এতক্ষন ও অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে কাঁটা ছাড়াতে।কিন্তু এখন আর কোন চেষ্টাই না করে তাকিয়ে থাকে।
        জলদ গম্ভীর স্বরে বলেন " এর দোষটা কি "?হাঁস ফাঁস করে বলে ওঠে ও" কোনো দোষ নেই বিশ্বাস করুন। ছা পোষা প্রাণী আমি। কোনো মতো একটা কলেজে পড়াই।মাসের শেষে কাজ চালানোর মতই টাকা পয়সা পাই।আর কিছুটি নেই এর বাইরে"। শেষ করতে না দিয়েই মানুষটি বলে ওঠেন" ওটাই তো বিরাট অন্যায় রে" অন্যায় ? আবার তুই তকারিরও ছড়া ছড়ি ?মান সম্মান বলতে আর কিছুটি রইলো না গো।
       ছেলেপুলেরা পড়াশনো করতেই চায় না।তারা মৌজ মস্তি করতে চায়.... আর তাদের কিনা জোরকরে পড়ানো " বলেন মানুষটি। আরো ও বলেন " ওহে চিত্র গুপ্ত ওকে তেলের কড়াইতে ফেলে বেশ মুচ মুচে করে ভাজা ভাজা কর"" ওরে বাবা !!বলে কি, কি করবো রে ভাই।
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পা দুটো খুব গরম হতে লাগল।মিঠাইকে  ভাজার পদ্ধতি শুরু হয়েছে। পা দুটো জোরসে ছুড়লো । ছোড়া মাত্র কয়েকটা কণ্ঠের তারস্বরে চিৎকার শুনে শুনে তাকিয়ে দেখে !!ও মা !! এরা তো কেউ যম কিংবা চিত্র গুপ্ত নয় মিঠায়ের  বন্ধু ( না না শত্রু) গোষ্ঠী। ওদের সাথে বেরিয়ে নরক গুলজার করার কথা ছিল। কিন্তু তা না হয়ে হলো "" নরক দর্শন " । অসময়ে ঘুমের ফল হাতেনাতে না না হাতে পায়ে।
কলকাতা 

3 comments: