 |
ছবি : ইন্টারনেট |
মৃগমুদ্রা
ঋভু চট্টোপাধ্যায়
স্নান করে ঘরটার
ভিতরে আসার পরে থার্ড পোলিং অফিসারকে শুয়ে থাকতে দেখে অমিতবাবুর মাথাটা গরম হয়ে গেল।তাও
দাঁড়িয়ে কিছু সময় ভেবে একটু জোরেই বলে উঠলেন,‘ও থার্ড পোলিং বাবা, উঠুন, পাঁচটা বেজে গেছে, এক্ষুণি মক পোলিং আরম্ভ হবে।’
অমিতবাবুর কথাগুলো শুনেও থার্ডপোলিং এর কোন রকম বিকার
না হওয়াতে অমিতবাবু রেগে বাইরে বেরোতে গেলে ঘরের মধ্যে ফার্স্টপোলিং অবনীবাবু এসে হাজির
হলেন।ঘুমন্ত থার্ড পোলিংএর দিকে তাকিয়ে হাল্কা হেসে বলে উঠলেন,‘ উনি কি করে উঠবেন, কাল তো অনেক রাত অবধি গাঁজা টেনে গেলেন।তাছাড়া গতকাল
রাতেই ওনাকে বিরক্ত না করতে বলেছিলেন।’
‘সে না হয় ঠিক আছে, তা বলে গাঁজা!বলেন কি?’ অমিতবাবু কথাগুলো বললেও চোখদুটো কপালে উঠে গেল।এই রকম একটা লোক গাঁজা খাবে তাতে
আশ্চর্যের কিছু নেই। যে লোক ভোটের ট্রেনিং এর দিন ঘোড়ায় চেপে আসতে পারেন তিনি সব পারেন।অমিত
বাবু ফার্স্ট পোলিং এর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আপনাদের স্নান হয়ে গেছে?’
-এই যে সেকেণ্ড পোলিং গেছেন, উনি বেরোলোই আমি ঢুকবো, আসলে একটাই তো বাথরুম।ফার্স্ট
পোলিং উত্তর দিলেন।
-বেশ, তাহলে আপনি স্নানে যাবার
আগে গেটের বাইরে একবার ঐ ডিরেকশন ফিরেকসনের কাগজগুলো চিঠিয়ে দিন।আর কোথায় কি বাকি আছে
সেগুলো বরং আমি একবার ……
-অমিতবাবু বলছিলাম থার্ডপোলিং কিন্তু সত্যিই একজন সাত্ত্বিক
মানুষ।এই পূজা টুজা বিষয়ে খুব জ্ঞান। আমরা অনেক নিয়ম পালন করি কিন্তু কারণ জানি না।
গতকাল রাতে আপনারা শুয়ে পড়েছিলেন উনিও গাঁজার ঘোরে ছিলেন, কিন্তু কি সুন্দর ভাবে কত কিছুর ব্যাখ্যা করলেন। নবপত্রিকার যে নটি উদ্ভিদ তাদের
কি সুন্দর ব্যাখ্যা করলেন।অনেক কিছু জানলাম দেবী ব্রহ্মাণী, কালি, উমা…।ফার্স্ট পোলিং অমিতবাবুকে থামিয়ে বলে উঠলেন।
অমিতবাবু সব শুনে লম্বা একটা শ্বাস ফেলে বললেন,‘কিন্তু ভোটটা তো আমাদেরকেই করাতে হবে।একটু ভুল হয়ে গেলে কেউ কিন্তু থার্ড পোলিং এর খুব জ্ঞান বলে মাফ করে
দেবে না।’
সময় হয়ে যাবার
পর যখন মক পোলের জন্য সব পার্টির এজেন্টরা জড়ো হয়ে গেছেন তখনও থার্ডপোলিং বাবা ঘরের
মধ্যেই ঘুমিয়ে আছেন।এজেন্টরা এসে দেখলেও কিছু বলবার নেই। আগের রাত থেকেই গ্রামের সবাই
জেনে গেছেন এবার একজন বড় সাধু বাবা ভোট করাতে এসেছেন।এজেন্টরাও সেসব কথা বলাবলিও করছিলেন
একজন এজেন্ট তো অমিতবাবুর দিকে তাকিয়ে বলেই দিলেন, ‘প্রিসাইডিং স্যার উনি সিদ্ধ পুরুষ, গতকাল সন্ধের ঐটুকু সময়
উনি যা করলেন তাতে আমাদের গ্রাম তো ওনাকে আবার আসবার জন্যে নিমন্ত্রণ করল। প্রয়োজনে
ওনাকে বাড়ি থেকে গড়ি করে নিয়ে আসব।’
সেকেণ্ড পোলিং ছোকড়া ছেলে, একটু চুলবুলেও।তবে কাজ জানে, প্রাইমারি স্কুলের টিচার
তবে ভোট করানোর অভিজ্ঞতা আছে। রাতেই টপাটপ করে বেশির ভাগ কাগজ রেডি করে ফেলছেন।পোলিং
এজেন্টের কথাটা শুনেই জিজ্ঞেস করেন, ‘কেন গ্রামেই গাঁজা নিয়ে
বসে পড়েছিলেন, নাকি বাংলার বোতল?’
–কি যে বলেন, সাধক মানুষ ঐ সব না খেলে হয়? উনি নিজে গতকাল সন্ধে
বেলায় আমাদের গাঁয়ের কালি তলায় আরতি করলেন।গাঁয়ের শ্মশানে একটা পঞ্চমুণ্ডি আসন আছে।বাবা
তো সেই আসনে আধ ঘন্টার উপর সময় চোখ বন্ধ করে বসে ছিলেন। গাঁয়ের অনেককে ওষুধ দিলেন।
আমাদের একজন অনেকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। বাবা তো তার ছেলেকে দেখেই সব
কিছু বলে দিলেন।ওষুধও দিয়েছেন।
অমিতবাবু লম্বা একটা শ্বাস ফেলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলেন।
ছোট বেলাতে তার নিজের পিসির বাড়ি বেড়াতে গিয়ে শ্মশানে পঞ্চমুণ্ডির আসন দেখতে পেয়েছিলেন।
পিসেমশাই তান্ত্রিক না হলেও টুকটাক পুজো করতেন।তাঁর মুখেই একবার শুনেছিলেন,
‘অপমৃত্যুতে মারা যাওয়া কোন চণ্ডালের মাথা, বিষধর সাপ, বেজি বা নেউল, শেয়াল ও হনুমান এই পাঁচ মাথা দিয়ে নিম, বেল শিমুল, বট, পিপুল এই পাঁচটির মধ্যে
যে কোন একটি গাছের নিচে এই পঞ্চমুণ্ডির আসন প্রতিষ্ঠা করতে হয়। খুব কঠিন কাজ,
এই আসনে বসে সাধনা করাও গুরুমুখী বিদ্যা।’
‘থার্ড পোলিং বাবা এই পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসেছিলেন ভালো
কথা কিন্তু একটা পোলিং স্টাফ কমে যাওয়া মানেই তো ভোটে এর একটা প্রভাব পড়বে।সেটাও তো
আমাকে দেখতে হবে।’ অমিত বাবু উত্তর দিলেন।
‘ও হয়ে যাবে। বেশি ভোটার তো নেই, আমরা দরকার হলে কিছু করে দেব।’ একজন এজেন্ট বলে।
এই একটাই সুবিধা খুব বেশি ভোটার নেই, তাও প্রিসাইডিং অমিতবাবুর সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ল ঐ ব্যাটা এ.ডি এম স্যারের ওপর।ট্রেনিংএর
দিনেই ঐ রকম এক কাপালিককে থার্ড পোলিং হিসাবে পেয়ে মাথার সব চুল এক্কেবারে খাড়া হয়ে
গেছিল, তাও ভদ্রলোক যদি ঠিক সময় আসতেন তবে কোন কথা হত না কিন্তু
সেগুড়েও বালি। ট্রেনিং এর শুরুতে এ.ডি.এম স্যার যখন জিজ্ঞেস করলেন, ‘সব পার্টির সব অফিসার এসে গেছেন তো, তাহলে এবার আমি ট্রেনিং
আরম্ভ করি।’ আর কেউ কিছু না বললেও অমিতবাবু হাত তুলে বললেন, ‘স্যার পোলিং পার্টি নং একুশের থার্ড পোলিং এখনো এসে পৌঁছায় নি, ফোনেও কোন রিপ্লায় নেই।’
স্যার নিজে ফোন করেও সুইচ্ট অফ পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
‘আপনি কি ফার্স্ট পোলিং?’
–না স্যার প্রিসাইডিং, আমিত ব্যানার্জী।
‘ঠিক আছে বসুন।’ বলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করলেও অমিতবাবুই
বললেন, ‘স্যার ভালো কো স্টাফ না পেলে কাজ কিন্তু ভালো হবে না।
ঠিক আগের বছর ভোটের সময় এই স্টাফ নিয়ে চরম সমস্যাতে পড়ে ছিলাম। মাঝ রাতে ফার্স্ট পোলিং
শুয়ে শুয়েই ঐ জায়গাতেই টয়লেট করে দেন।সকালে একদিকে মক পোলিং সামলাবো না ফিনাইল দিয়ে
ঘরটা পরিষ্কার করব।’
আরেকবার এক কম বয়সি ফার্স্টপোলিং পেয়েছিলেন।তার আবার
বিয়ে হয় নি।গ্রামের এক ঘটক জানতে পেরে অমিতবাবুকেই একরকম ধরে বসে ছিলেন।‘আপনি একটু
বলে দিন, ওনার সাথে যদি এই গাঁয়ের……’ অমিতবাবু তাঁকে কিছুতেই
বোঝাতে পারছিলেন না এতে তার কোন হাত নেই। ঘটক কিছুতেই শুনবে না।এখান ওখান থেকে চা জল
খাবার সব এনে দিচ্ছিলেন।সে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। সে কথাগুলো এ.ডি.এম স্যারকে না বললেও
অমিতবাবু শেষের কথাগুলো শুনেই ট্রেনিং হলের চারদিক একটা চাপা গুঞ্জন উঠল। এ.ডি.এম স্যার
বলে উঠলেন, ‘আপনি কোন ডিপার্টমেন্টে?
-আমি হাইস্কুলে, অ্যাসিসটেন্ট টিচার।
এডিএম স্যার আর কোন কথা না বলে আ্যাটেন্ডডেন্স সিটে
অ্যাবসেন্ট করতে যাবেন, এমন সময় ‘জয় মা কালি, জয় তারা ’ বলে হাতে ত্রিশুল নিয়ে লাল ধুতি আর ফতুয়া পরে একজন দশাশয় চেহারার মানুষ
ঘরটার মধ্যে ঢুকে চারদিকটা একবার দেখে নিলেন।তারপর এডিএম স্যারের মুখের দিকে তাকিয়ে
আরেক বার ‘জয় মা কালি’ বলে জিজ্ঞেস করলেন,‘কোথায় বসব রে?’
ঘরের ভিতরের অন্য সব ভোটকর্মীরা আকস্মিকতায় একটু ভয়
পেয়ে গেছেন।এডিএম স্যারও তাঁর দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলেন,‘আপনি কি করবেন?’
-ইয়ার্কি মারছিস, কি করব জানিস না। তোরাই তো ভোটের ডিউটি দিয়েছিস।
-ও, আপনি কত নম্বর পোলিং
পার্টির।
–অতো জানি না।
তারপরেই কাঁধে ঝোলানো একটা ঝুলির ভিতর হাত ভরে একটা
কাগজ বের করে এ.ডিম.এম স্যারের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, ‘পড়ে নে।’
চিঠিটা পড়ে স্যারের চোখ মুখে একটা হাল্কা হাসির রেখা
ফুটে উঠল।আমিত বাবুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,‘মাস্টার মশাই, এই যে আপনার থার্ড পোলিং।’
-আমার! অমিতবাবু দু’চোখে তখন অন্ধকার দেখছেন। এই রকম
একটা লোক থার্ড পোলিং! এতো পিণ্ডি চটকে দেবে।
অমিতবাবু আরো কিছু বলতেন তখনই নিচে একটা হুড়মুড় শব্দ
শুনে চমকে উঠলেন কয়েকজন দোতলার জানলা দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলেন কয়েকটা বাইক পড়ে
আছে, আর একটা ঘোড়া ঘোরাঘুরি করছে।
এ.ডি.এম স্যারও জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ‘কি হয়েছে?’
জিজ্ঞেস করতে শুনলেন একটা ঘোড়া এসে কয়েকটা বাইক উল্টে ফেলে দিয়েছে।এ.ডি.এম
স্যার ঘরের মধ্যে ‘কার ঘোড়া?’ জিজ্ঞেস করতেই নতুন আসা
লাল পোশাকের ভদ্রলোকটি বলে উঠলেন, ‘জয় মা কালি, আমি ঘোড়ার পিঠে চেপে এসেছি।’
–ঘোড়ার পিঠে চেপে!
–কেন ঘোড়া কি যানবাহনের মধ্যে পড়ে না, তুই জানিস না আগেকার দিনে.....।
–ঠিক আছে।আপনি বসুন, ঘোড়া, গাধা যার পিঠে চেপে পারেন আসুন।আমরা বরং ট্রেনিং আরম্ভ
করি।এমনিতেই আমরা অনেকটা সময় পিছিয়ে আরম্ভ করছি।
বাবাজি তখন হলের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত এক
চক্কর ঘুরে শেষে মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় একটা কম্বলের আসন পেতে বসতে যাবেন এমন সময় এ.ডি.এম
সাহেব আবার বললেন,‘আপনার জন্য কিন্তু আগেও দেরি হল, এখনও হচ্ছে। সেই কোন সকাল থেকে আপনাকে ফোনে চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন আবার এমনি করছেন….’
ভদ্রলোক হঠাৎ
আবার ‘জয় তারা, মা, মাগো।’ বলে উঠলেন। তারপরেই
এ.ডি.এম স্যারের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘আমি ঐ ফোন টোন রাখি না।
একমাত্র তারা মা যেদিন বলবে সেদিনই ফোন রাখবো।’
–কিন্তু আপনার তো একটা ফোন নম্বর দেওয়া আছে।এ.ডি.এম স্যার
জিজ্ঞেস করেন।
-দেওয়া থাকলে আমি কি করব, আমি তো আর ফোন নম্বরটা দিতে বলি নি।তোরা নিজেরা দিয়েছিস এখন নিজেরা বুঝবি। ভদ্রলোক
বেশ রেগেই উত্তর দিলেন।
হলের মধ্যে সবাই যে যার মত কথা বললেও অমিতবাবু মাথা
চাপড়াতে আরম্ভ করলেন।চারজনের মধ্যে যদি একজন এমন হয়ে যায় তাহলে তো ভোটের অবস্থার বারোটা
বেজে যায়। ট্রেনিং শেষ করে অমিতবাবু এ.ডি. এম স্যারকে আলাদা করে বললেন, ‘স্যার এনাকে একটু চেঞ্জ করা যায় না?’
–কাকে দেবো, গ্রুপ ডি ছাড়া এই দায়িত্ব
কাউকে দেওয়া যায় না। আপনাদের আবার বিরাট ইগো।
অমিতবাবুর মনে পড়ে একবার পঞ্চায়েত ভোটে এক প্রফেসরকে
পিসাইডিং অফিসারের ডিউটি দেওয়া হয়েছিল। এতে উনি ডি.সি.আর.সিতেই খুব চিৎকার করতে আরম্ভ
করেন। সেই ভোটের রিটায়ারিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা বিডিওর কাছে গিয়ে সোজা বলে ওঠেন,
‘আপনার থেকে আমি অনেক বেশি টাকা মাইনে পাই। আমি কেন আপনার কথা
শুনতে যাবো?’
এ.ডি.এম স্যারের কথা শুনে অমিত বাবু ভেবেই নিলেন কপালে
দুর্ভোগ আছে,এবং হলোও তাই।ভোটের আগের দিন ডি.সি আর.সি তে অমিত বাবু
আর ফার্স্ট পোলিংকেই সব মেটেরিয়ালস নিতে হল। সেকেণ্ড পোলিং তাড়াতাড়ি এলেও যথারীতি থার্ড
পোলিং অনুপস্থিত।অমিতবাবু বার বার করে ডিসিআরসির অফিসে গিয়ে রিসার্ভ থেকে আরেকজনকে
দেওয়ার জন্যে অনুরোধ করলেও কেউই শুনলেন না।উল্টে অমিতকেই শুনতে হল,‘খেপেছেন, আপনার গ্রুপে সেই কাপালিকটা পড়েছে তো, ইরিগেশনে কাজ করেন। ওনাকে সবাই ভয় পায়।ওনার কথা খুব লেগে যায়। এক্ষুণি কি বলে দেবে,
কোথা থেকে কি হয়ে যাবে বাবা, তার থেকে সাবধানে থাকাই ভালো আপনারা অপেক্ষা করুন, উনি ঠিক চলে আসবেন। এই অফিসের কেউ ওনাকে বেশি ঘাঁটায় না।’
আমিতবাবু আর কথা না বাড়িয়ে বাকি দুই পোলিং আফিসারের
সাথে সব মেটেরিয়াল লিস্ট ধরে মেলানোর পর কিছু কিছু কাজ করে নিতে আরম্ভ করলেন।বুঝতে
পারলেন এবারেও কপালে শনি রবি দুজনাই নাচতে আরম্ভ করে দিয়েছে। ঠিক দুপুর আড়াইটের সময়
অমিতবাবুদের পোলিং পার্টির নাম ধরে অ্যানাউন্স শোনা গেল।,‘পোলিং পার্টি নম্বর একুশ, আপনার থার্ড পোলিং আপনাকে
খুঁজছে, আপনি তাড়াতাড়ি ওনার সাথে দেখা করুন।’
অমিতবাবু তাড়াতাড়ি উঠে বাবাজিকে নিয়ে আসতে গেলেন।বাবাজি
সেই লাল ধুতি আর একটা ফতুয়া পরেই এসেছেন, সাথে বেশ বড় দেখে লাল
রঙের কাপড়ের একটা ব্যাগ।অমিতকে দেখেই বললেন, ‘তুই তো সেই, বেশ আমার ব্যাগটা নিয়ে যা, আমি ঘোড়াটাকে আমার এক শিষ্যের ঘরে বেঁধে আসছি।’
অমিতবাবু ভয়ে ভয়ে ব্যাগটা নিয়ে গিয়ে নিজেদের জায়গায়
বসলেন।কিছুক্ষণ বলে আবার ঘন্টা দুই, ভদ্রলোকের কোন পাত্তা
নেই।এদিকে সব পোলিং পার্টি নির্দিষ্ট বাসে উঠে গেছে।সবাই বাসের ড্রাইভারকে বাস ছাড়ার
জন্যে তাড়া দিচ্ছে।এটাই স্বাভাবিক।এই ভোটের কাজে আসার জন্যে অনেককেই খুব সকালে বাড়ি
থেকে বেরোতে হয়েছে।সবাই তাড়াতাড়ি ভোট কেন্দ্র পৌঁছে একটু বিশ্রাম নিয়ে যতটা পারা যায়
কাজ এগিয়ে রাখতে চান।তাহলে পরের দিন ভোট শেষ হবার আধ ঘন্টা থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের
মধ্যে আবার ডিসিআরসিতে আসা যায়।অন্য সব পোলিং পার্টি এই ভাবনা থেকেই অমিতবাবুকে বারবার
বলে যেতে আরম্ভ করলেন, ‘আপনি একটু ডিসিআরসির অফিসে গিয়ে বলুন, একটা একস্ট্রা পোলিং অফিসার না পেলে তো এখান থেকে বেরোতেই সন্ধ্যে হয়ে যাবে। কিন্তু
অমিতবাবু ডিসিআরসিতে বারবার বললেও ওনারা সেই এককথাই বলতে লাগলেন, ‘খেপেছেন, ওনাকে কোন রকম ভাবেই রিপ্লেস করা যাবে না।তাছা্ড়া উনি
তো আর অ্যাবসেন্ট নন।’ অগত্যা অপেক্ষা ছাড়া আর অন্য কোন পথ না পেয়ে অন্য পোলিং পার্টিদেরও
প্রায় সবাই বাস থেকে মাটিতে নেমে হেঁটে বেড়াতে আরম্ভ করলেন। আস্তে আস্তে সব বাস একে
একে ডিসিআরসির মাঠ ছাড়তে আরম্ভ করল। চারদিকে অন্ধকার নেমে এল। অবস্থা এমন হল যে অমিতবাবুদের তিনজন পোলিং পার্টি ছাড়া আর কারোর বাসই মাঠে থাকল
না। সেই সময় গায়ে অন্ধকার মেখে আস্তে আস্তে বাবাজি সোজা জয় তারা, জয় কালি করতে করতে এসেই বাসের পিছনের সিটে চলে গেলেন। ওখানে দুজন পুলিশ বসে ছিলেন।তাদের
দিকে তাকিয়ে বললেন,‘সামনের দিকে গিয়ে বোস, এখানে আমি শোব।’ বাবাজির মুখ দিয়ে তখন দেশী মদের ভরপুর গন্ধ। বাকি পোলিং পার্টি
এক্কেবারে ক্লান্ত, তাদের নিয়েই বাস ছাড়ল। কিন্তু ওনাকে কেউই কিছু জিজ্ঞেস
করল না।
বাস ছাড়বার কিছু সময় পরেই পিছনের দিকেই অন্য পোলিং পার্টির
কেউ একজন থার্ড পোলিংকে জিজ্ঞেস করে,
‘বাবা কি তন্ত্র সাধনা করেন?’ কিছু সময় সব এক্কেবারে
চুপচাপ। শুধু বাসের আওয়াজ সবার কানে পৌঁছে যাচ্ছে। কিছু সময় পর বাবা বেশ জোরেই বলে
উঠলেন,‘তন্ত্র মানে জানিস? আগম নিগম, যামল এই সব শব্দ শুনেছিস? যাকে তাকে যা তা কথা বললেই হচ্ছে? কালি মানে তো শুধু রামকৃষ্ণকে
বুঝিস। তাও তো ওর ছবিটা দেখিস অথচ মৃগমুদ্রা জানিস না। বুঝিস কোথায় পরমাত্মা আর কোথায়
বিশ্বসংসার? বিরক্ত করিস না, চুপচাপ চল।’
বাসে ওঠার সময় বাবাজি কিন্তু একবারের জন্যেও ব্যাগটা
হাতে নিলেন না।বলে উঠল, ‘এই হাত মা তারাকে দেওয়া
হয়েছে, এটা দিয়ে তো অন্য কিছু ছোঁয়া যাবে না।’
ডিসিআরসি থেকে
ভোট কেন্দ্রটা খুব একটা দূর নয়। তাও ব্যালট ইউনিট, কন্ট্রোল ইউনিট, ভোট কক্ষ ও দুটো ব্যাগ তার সাথে প্রত্যেক পোলিং অফিসারদের
ব্যাগ, থার্ড পোলিং বাবার ব্যাগ, সব মিলিয়ে ব্যাগের সংখ্যা হাতের সংখ্যার থেকে বেশি।এর পরেও একজন যদি এমন ভাবে গায়ে
হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান বাকিদের মাথাটা গরম হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।কিন্তু অমিতরা
প্রত্যেকে খুব সাবধানেই একপা একপা করে কষ্ট করেই এগিয়ে গেলেন।কিন্তু ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল
যখন বাবা থার্ড পোলিং ভোট কেন্দ্রে পৌঁছানোর পরেই নিজের ব্যাগটাও না নামিয়ে ‘জয় তারা’
বলে চিৎকার করে স্কুলে ঢুকে চারদিকটা একবার ঘুরে নিলেন। তারপর কোথা থেকে আনা একটা মা
কালির ফটো দেওয়ালে টাঙিয়ে একটা মালা পরিয়ে ধূপ দিয়ে কোথায় যেন চলে গেলেন। বাকিরা কোন
কথা বলতে না পারলেও একটু প্রাণ ভরে শ্বাস নিলেন।তারপর নিজেরা একটু হাত মুখ ধোয়ার পর
স্থানীয় একজনের সাথে কথা বলে খাওয়ার ব্যবস্থা করে একটা ঘরের মধ্যে শতরঞ্জি পেতে পরের
দিনের কিছু কাজ করে যেতে লাগলেন।এই সমস্ত কথা বেশ কয়েকবার সেক্টর অফিসে ফোন করেও কোন
সুবিধা হয় নি।বরং শুনতে হয়েছে,‘ওটা পোলিং পার্টির ইন্টারনেল
ব্যাপার, কিছু করা যাবেনা। কেউ অসুস্থ হলে বলবেন।’
পুলিশ সেক্টর অফিসারটি ইসলাম ধর্মালম্বী, তাও অমিত বাবুর কাছে থার্ড পোলিং বাবার ব্যাপার সব কিছু শুনে বলে উঠলেন,
‘ও ইরিগেশনের সেই বাবা, না না ওনাকে কিছু বলা যাবে না। আমার থানাতে এক কনস্টেবলের ওনার ওষুধেই বাচ্চা হয়েছে।
আমরা ওনাকে একটু এড়িয়েই চলি।’
বেশকিছু সময় পর থার্ড পোলিং বাবা ঘরটাতে ঢুকে কারোর
সাথে কোন কথা না বলে একটা কোণে চলে গেলেন। অমিতদের দিকে তাকিয়ে একবার শুধু বললেন,
‘আমাকে কিন্তু কিছু করতে বলিস না, আমি এখন মায়ের সাধনা করব।’ তারপর মুখে জয় তারা জয় তারা বলতে বলতে চোখদুটো বন্ধ
করে বসে থাতকলেন।ফার্স্ট পোলিং একবার ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বাবা, আপনি কি খাবেন, মানে আপনি তো ছিলেন না….’
–আমার ঐ ব্যাগটা নিয়ে এসে দে, ওখানে ফল আছে, আমি শুধু ফল আর এই মায়ের প্রসাধ খাই। তোরা সব খেয়ে শুয়ে
পড়, আমার শুতে দেরি হবে।কাল কিন্তু আমাকে ভোর ভোর ডাকবি
না। আমি আমার মতই উঠব।
অমিতরা আর কিছু না বলে যত দূর সম্ভব কাজ করে খেয়ে শুয়ে
পড়লেও থার্ড পোলিং বাবা কিন্তু সেই এক জায়গায় বসে বসে গাঁজা খেয়েই সময় কাটাতে লাগলেন।
২
ভোটের দিনেও থার্ড পোলিং বাবা কিন্তু নিজের মতই থাকলেন।
উঠলেন দেরি করে, তারপর ভোট কেন্দ্রের বাথরুমে স্নান না করে সোজা কোন
পুকুরে চলে গেলেন।একজন ভোটার ভোট দিতে এসে খবরটা দিলেন। আগের দিন সন্ধে বেলাতেও নাকি
একটা পুকুরের পারে গিয়ে বসে ছিলেন। কোন এক কালি মন্দিরে পুরোহিতের আরতি করা দেখে খুব
করে বকাবকি করে নিজেই আরতি করতে আরম্ভ করেন। গ্রামের লোকদের সাথেও অদ্ভুত ভাবে মিশে
গিয়ে সবাইকে হাত দেখা থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন রকমের ওষুধও দিয়ে দেন। অন্য কোন পোলিং
অফিসারের সেরকম কোন অসুবিধা তখন না হলেও পরিস্থিতি ঘোরালো হতে আরম্ভ করে একটু পরে।
গ্রামের মানুষ কেউ দুধ কেউ মিষ্টির প্যাকেট কেউ ফল নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করতে থাকেন,
‘ঐ বাবা নেই, একটু দর্শন পেলে হত না।’
বাকি পোলিং স্টাফদের মাথার চুল ছেঁড়ার মত অবস্থা হলেও
কিছু করবার নেই।সকাল থেকেই বাবা বেপাত্তা। ভোট চলছে, বাইরে বেশির ভাগ ভোটারের হাতে ভোটার কার্ডের সাথে ফল, মিষ্টি বা দুধের জায়গা। এর মধ্যে সেক্টর অফিসার দুবার এসে সব কিছু দেখে গেছেন।
প্রিসাইডিং বা ফার্স্ট পোলিং রেগে তার কোন প্রশ্নের উত্তর দেয় নি। সেক্টর বাইরে এসে
ভোটের লাইনে সবার হাতে ঐ রকম ভাবে দুধ বা ফলের ঝুড়ি দেখে অবাক হয়ে যান। কিন্তু রিপোর্টে
লেখেন, ‘ভোট খুব শান্তি পূর্ণ ভাবেই হচ্ছে।’ অমিতবাবু সেক্টর
অফিসারকে থার্ড পোলিংএর কথা বললেও উনি অমিতবাবুকে বাইরে নিয়ে গিয়ে বলেন, ‘উনি ইরিগেশনের তো? ছেড়ে দিন। সাধক কিনা জানি না তবে ওনার কথা খুব লেগে
যায়। এক স্টাফের সাথে কি নিয়ে একটা ঝামেলার সময় বলে দেন, ‘তুই কাল থেকে অফিসেই আসতে পারবি না।’ তাতে ঐ ভদ্রলোকের তারপরের দিনেই অ্যাক্সিডেন্ট
হয়ে যায়। এখন হয়ত ব্যাপারটা একটা কো ইনসিডেন্ট, কিন্তু ভয় লাগে।’
অমিতবাবু এবারেও
একটা লম্বা শ্বাস ফেলে দাঁড়িয়ে থাকেন।
বাকি পোলিং অফিসাররা থার্ড পোলিংএর ব্যাপারে কোন কিছু
না বললেও ঠিক এগারোটার সময় থার্ড পোলিং জয় তারা জয় তারা বলতে বলতে একটা ধূপ জ্বেলে
বুথে ঢুকে চারদিকে দেখিয়ে একটা পাশের ঘরে চলে যান। প্রাথমিক ভাবে বাকি সব পোলিং অফিসাররা হাঁপ ছেড়ে
বাঁচলেও কিছু সময়ের মধ্যে বুথের চারদিকে ভিড়
হতে আরম্ভ করে। যাদের ভোট দেওয়া হয়েছে তারাও ধূপ ধুনো ফল মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে চলে
এসে ভোট কক্ষের পাশের ঘরে থার্ড পোলিং বাবার
কাছে চলে যান। শান্তিপ্রিয় গ্রাম বলে ভোটের মানচিত্রে আগে থেকেই চিহ্নিত। স্বভাবতই
শুধুমাত্র একটা লাঠি হাতে হোম গার্ড ছাড়া আর কেউ নেই। সে বেচারা আগের রাতেই নিজের ব্যাগে
আনা একটা ছোট্ট বোতল থেকে কিছুটা গলায় ঢেলে বেশ আরামেই আছে।সকাল থেকে সবার রকম সকম
দেখেই সময় কাটিয়ে দিচ্ছে।মাঝে মাঝে দু’এক টুকরো ফল বা মিষ্টিও পাচ্ছে।গত রাতে একটা
প্যারা মিলিটারিদের স্কোয়ার্ড এলেও ভোটের দিন
বেলা বারোটা পর্যন্ত তাদের কোন পাত্তা না থাকায় অমিতবাবু অনেকটাই বিরক্ত। এর মাঝে সময়ে সময়ে এস এম এস পাঠানো চলছে।সব এক্কেবারে
সুপার ফাইন।
সমস্যা অন্য জায়গায়। একে তো এই থার্ড পোলিংকে নিয়ে মাথা
খারাপ হয়ে যাবার ব্যবস্থা, তার উপর যদি এই সব লোক
জন যদি ভিড় করতে আরম্ভ করে তবে তো আর বলবার কিছু বাকি থাকবে না। ফার্স্ট ও সেকেণ্ড
পোলিং এর সাথে আলোচনা করে অমিত বাবু চিৎকার
করে ওঠেন, ‘ আপনাদের পুজো করবার ব্যাপার থাকলে ওনাকে নিয়ে চলে যান।
এখানে অসুবিধা হচ্ছে।’
সে যাত্রায়
রেহাই পাওয়া গেল।
বাবার দৌলতে অমিত বাবুদের কাউকে এক নয়া পয়সা খরচ করতে
হয় নি। ঘন্টায় ঘন্টায় দুধের চা, টিফিন, দিনে নিরামিষ ভাত, এক্কেবারে শ্বশুর বাড়ির মত আদর।
দুপুরের মধ্যেই ভোট পর্বটাও মিটে গেল। এতো শান্তি প্রিয়
জায়গা সত্যিই নেই। বিরোধী দুপক্ষের সবাই নিজেদের মধ্যে কথা বলছে, মজা করছে। ভোটার লিস্ট অনুযায়ী দশ জন বাদে সবাই পেসেন্ট। কোন ব্লাইড বা ইনফার্ম
ভোটার নেই, কোন রিগিং বা ছাপ্পা ভোট, ফলস ভোট নেই। সেক্টর অফিসারের সাথে কথা বলে ভোট চলতে চলতেই অমিতবাবু সব কিছু টুকটাক
করে গোছাতে আরম্ভ করলেন। এজেন্টদেরও সব কাগজপত্র
ঠিক ঠাক করে নিলেন যাতে ভোটের শেষ ঘন্টাটা বাজলেই আধঘন্টার মধ্যে সব কিছু করে বেরানো
যায়। কিন্তু বললেই তো আর সব কিছু হয় না।
প্রিসাইডিং ও বাকি দুজন পোলিং অফিসার মিলে সব কাজ গুছিয়ে
শেষ করে বেরোতে যাবেন এমন সময় আবার বিপত্তি। সেই থার্ড পোলিং মিসিং। এদিকে বাস এসে
স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্যান্য বুথের পোলিং অফিসাররা সব কিছু জানলেও তাড়া দিতে
আরম্ভ করে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগে গাঁয়ের কয়েকজন এসে বলেন থার্ড পোলিং বাবা
তখন গাঁয়ের কালি মন্দিরে আরতি করছেন। বাসের সবার মাথা খারাপ হয়ে যাবার জোগাড়।বাসের
ভিতর থেকে চিৎকারও শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন,‘ওনাকে ফেলে রেখেই বাস ছাড়ুন।’ কিন্তু সেটাও তো নৈতিকতায় বাধা দেয়। তারপর কিছু একটা
বিপদ হয়ে গেলেও চাকরি নিয়ে টানাটানি হবে। সব চিন্তা করে অমিতবাবু নিজেই গ্রামবাসিদের
সাথে থার্ডপোলিং বাবাকে ডেকে আনতে যান। গাঁয়ের এক্কেবারে শেষ প্রান্তে শ্মশান,
সেখানেই মন্দিরে থার্ড পোলিং বাবাকে দেখে অমিতবাবু এক্কেবারে
চমকে ওঠেন। উনি যেন এই পৃথিবীতেই নেই, ধ্যান করছেন। অমিতবাবু
অপেক্ষা করতে থাকেন। কিছু সময় পর বাবা চোখ খুললে
অমিতবাবু বাসে যাবার কথা বলেন। উনি উত্তরে বলে ওঠেন, ‘মা তারা তো আরতি শেষ না করে যেতে বারণ করল। আমি কিভাবে তার কথা না শুনে যাবো বল?’
পোলিং অফিসারদের সবার শরীরে তখন ক্লান্তি এক্কেবারে
সপরিবারে বাসা বেঁধে নিয়েছে। এখানে আসার পরেও বার বার ফোন আসছে। কিছু সময় আগেই বাধ্য
হয়ে মোবাইলটা সাইলেন্ট করে নিলেন। না হলে একবার ফার্স্ট পোলিং একবার সেক্টর এক্কেবারে
পাগল করে দিচ্ছিল। কয়েকটা আননোন নাম্বার থেকেও ফোন এসেছে। কিছু সময় ভাবেন। অনেকবার
করে বারণ করা হয়েছিল, কেউ শোনেনি, এবার খুঁজে মর কোথায় পরমাত্মা আর কোথায় কোথায় এই বিশ্বসংসার। অমিতবাবু একটা লম্বা
শ্বাস ফেলে মোবাইলটা এক্কেবারে বন্ধ করে মন্দিরের চাতালে বসে যান। ভিতর থেকে তখন বেরিয়ে
আসছে, ‘জয় তারা, জয় জয় তারা।’
wribhuwriter.dgp@gmail.com
পশ্চিম বর্ধমান
No comments:
Post a Comment