![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
'দুমুখো সাপ' বাস্তবে এরকম কোনো সাপ সত্যি আছে কিনা ভূ ভারতে তা হয়তো অনেকের জানা নেই, কিন্তু আমাদের আশেপাশে এইরকম উদাহরণ ভূড়িভূড়ি। যেমন ধরুন, দোকানে মিষ্টি কিনতে গেলেন আর দোকানদার মিষ্টি হেসে মিষ্টি কথা বলে বাসি মিষ্টিটা আপনাকে খাইয়ে দিল - ব্যাস, দুমুখো সাপ। আবার ধরুন কোনো প্রাণের বন্ধুকে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে আপনি কিছু ব্যক্তিগত কথা বললেন। কিছুদিন পরে দেখলেন আপনার ব্যক্তিগত কথা সার্বজনীন হয়ে গেছে, দুমুখো সাপ। এবার একটু ভালোবাসা বিষয়ে কথা বলা যাক। আপনি আপনার প্রিয়তমা কে ভালোবেসে একটি গোলাপ ফুল দিলেন কোনো একটি বিশেষ দিনে আর সেই গোলাপ হয়তো আপনার প্রিয়তমার বিশ্বাসী হাত দিয়ে বিষবাসিনী হয়ে চলে গেল তার কোনো একজন ভালোলাগার মানুষের কাছে - দুমুখো সাপ থুড়ি সাপিনী।
আচ্ছা বলুন তো এই যে দুমুখচারিতা, এটা কার দোষ? সাপের না সাপুড়ের নাকি যে অমরসৃষ্টিকর্তা উপরে বসে আছেন তার? তাহলে একটা বিজ্ঞানের গল্প বলি শুনুন।
জীবনবিজ্ঞান বলে, দুমুখো সাপ নামভেদে ব্রাহ্মণী, দুমুখো সাপ দেখতে অনেকটা কেঁচোর মতন। কিন্তু কেঁচোর মতো এদের গায়ে কোনো খন্ডায়ন থাকে না। এদের মাথা আর ঘাড় স্পষ্টভাবে পৃথক নয়। এদের মাথা থেকে পা অবধি একই রকম দেখতে। মাথার দিক ও দেহের শেষের দিক একইরকম দেখতে বলে এদের দুমুখো সাপ বলা হয়। তবে এরা মাটির নিচে থাকতে বেশি পচ্ছন্দ করে এবং তাই এদের মাটি সাপও বলা হয়ে থাকে। আমাদের মতো দেশের মাটিতে এদের প্রচুর পাওয়া যায়। এরা কিন্তু জাতে সচরাচর নিশাচর কারণ এরা খুবই আলোকসংবেদী।
এতক্ষণ তো শুনলেন বিজ্ঞানের কথা কিন্তু শুধু বিজ্ঞানের কথা শোনাব বলে তো এই লেখা নয়। আমাদের সমাজে দুমুখো সাপের বিজ্ঞান হলো এই যে এরা মাটির নিচেই থাকে মানে লোকের পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ে। প্রকাশ্যে আসার মতো সংবেদনশীলতা এদের নেই। আমাদের দেশে এর সংখ্যা অগুন্তি। তবে এদের মাথার পেছনে আরও একটা মুখ থাকে। আপনি কিন্তু এদের প্রকৃত মুখ কোনটা ধরতে পারবেন না। যেমন ধরুন এরা আপনাকে ভুল বুঝিয়ে দিয়ে খাটিয়ে এদের নিজেদের কাজ করিয়ে নেবে আর কাজ ফুরিয়ে গেলেই আপনার পেছনে আপনার কাজের সমালোচনা করবে। আপনার পেছনে আপনার কাজের কৃতজ্ঞতা, নৈব নৈব চ।
যাই হোক দিনের শেষে এদেরকে নিয়েই থাকতে হবে তাই এরপর থেকে মিষ্টি মুখে মিষ্টি হাসি দেখলেই কিন্তু সাবধান।
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment