![]() |
ছবি : ইন্টারনেট |
গোলে
যোগে গোল
প্রতাপ হাজরা
সেবারের ঝামেলাটা শুরু হয়েছিলো কিংকর্তব্য বিমুর
নিয়ে যতই হোক একজনের কাজ আরেকজনের চাপালে সে ঝামেলার পরিনতি সবাই জানে কি হতে পারে, অগত্যা সেবারও তাই হল,
শ্রেয়াঃ এই যে মিস্টার নিজের বাবাকে সামলা, লজ্জ্যা
করেনা একটা অসহায়ে মহিলার উপর কাজ চাপিয়ে দ্যায়।
সপ্তর্ষিঃ অসহায়ে মহিলায়ই যখন ঘরের ভিতর
বসিয়ে রাখ না বাইরে বেরোতে দিস কেনো।
শ্রেয়াঃ তোর বাবাকে ঘরে বসিয়ে রাখ বেটা ভাম
আর হুলোর দল।
সপ্তর্ষিঃ হ্যাঁ, আর
তোরা কি বেজি আর মিনির দল।
অনেক কষ্টে পাড়ার লোকেরা মিলে অনেক বুঝিয়ে
শেষে যুদ্ধ বিরাম ঘটলো।
আরে সবাই ভাবছেন কি ঝগড়া শুরু হয়েছে কিছুই বুঝতে
পারছিনা কি হচ্ছে মাথামুণ্ডু, একটু দাঁড়ান সব বুঝতে পারবেন। আমাদের গল্পের
নায়ক হল এই সপ্তর্ষি আর নায়িকা মানে টমবয় শ্রেয়া এখন টমবয় মানে না জানলে একটু গুগল
করে নেবেন। এদের বাড়ির ঝগড়া যুগ যুগান্তর ধরে চলে আসছে বাপ ঠাকুরদার আমল থেকে পাড়ার
লোকে তো একটা নামও দিয়েছে ডি ডি এল মানে দাস অ্যান্ড দে লিগ। আজকের এই ঝগড়াটা আসলে
সপ্তর্ষি আর শ্রেয়ার মধ্যে নয়ে এটা ওদের বাবা আর মায়ের মধ্যে ঝগড়া যেটা অফিস থেকে এখন
বাড়িতে এসে পৌঁছেছে। সপ্তর্ষির বাবাকে মানে সঞ্জয়বাবুকে একটা কাজ দেওয়া হয়ে অফিস থেকে
সে সেটা খুব সন্তর্পণে উনি সিঞ্জিনিদেবি মানে শ্রেয়ার মায়ের উপর চাপিয়ে দ্যায়। তারপর
আর কি শুরু হয়ে ঝামেলা আর সেটা অফিস থেকে ক্রমাগত সরতে সরতে এই দাসপাড়াতে ঢুকে পড়েছে
করোনা নয়ে ঝামেলা। তারপর থেকে এই শান্ত পাড়াটি কুরুক্ষেত্র ময়েদান হয়ে উঠেছে।
সঞ্জয়বাবুঃ আপনি লিফট থেকে নামার আগে সব ফ্লোর কেন
সিলেক্ট করে রেখেছেন?
সিঞ্জিনিদেবিঃ আমি কেনো টিপতে যাবো?
সঞ্জয়বাবুঃ আমি কেন টিপতে যাবো! লিফটে কি
আপনার ভুত টিপেছিল আপনি একাই ছিলেন লিফটে।
সিঞ্জিনিদেবিঃ একদম বাজে কথা বলবেন না, যদি সন্দেহ হয়ে যান গিয়ে লিফটের সিসিটিভি
দেখে আসন গিয়ে, হুম
বুড়ো মিনশে কোথাকার।
সঞ্জয়বাবুঃ ইয়ার্কি হচ্ছে, লিফটে সিসিটিভি লাগানো থাকে
সিঞ্জিনিদেবিঃ তা আমি কি করতে পারি, তাহলে
কোম্পানিকে বলুন আপনার সিকুরিটির জন্য একটা ক্যামেরা লাগাতে।
এবার কিন্তু সঞ্জয়বাবু একটু দমে গেলেন বললেন,
সঞ্জয়বাবুঃ দেখে নেবো, আপনাকে
দেখে নেবো।
এরপর কিছুদিন কোন ঝামেলা ছিলনা সবাই ভাবলো
হয়েতো আর ঝামেলা হবেনা নিজেদের বংশানুক্রমিক ভুলটা হয়েতো বুঝতে পেরেছে ওরা। কিন্তু
সুখ যেমন সব মানুষের কপালে চিরস্থায়ী হয়েনা তেমনি দাসপাড়াও হল না।
সেবার পাড়ার চন্দ্রিমার জন্দিন ছিল আর সেখানে
আমন্ত্রিত ছিল শ্রেয়া আর সপ্তর্ষি দুজনেই সবই ঠিকঠাকই ছিল হটাৎ কেক কাটার সময়ে হল এক
কাণ্ড।
চন্দ্রিমা কেক কেটে আগে সপ্তর্ষিকে একটুকরো
খাওয়াতে গেছে এমন সময়ে পিছন থেকে এক ঠ্যালা মারলো কে যেন আর পুরো মুখে কেক লেগে একাকার
অবস্থা।
সপ্তর্ষিঃ ঠ্যালা মারলি কেন?
শ্রেয়াঃ যাহহহ... শালা আমি কখন মারলাম ঠ্যালা।
সপ্তর্ষিঃ আমি বুঝতে পারিনি ভাবছিস তুই তো
থালা মারলি।
শ্রেয়াঃ প্রমান দেখা কোথায়ে ঠ্যালা মারলাম।
শ্রেয়াঃ বাপেও অন্যের ঘারে দোষ চাপায়ে ছেলেও
চাপায়ে।
সপ্তর্ষির এবার ভিশন রেগে গেলো
সপ্তর্ষিঃ তবে রে, ধিঙ্গি মেয়ে কোথাকার
বলে এক খাবলা কেক নিয়ে মুখে মাখিয়ে দিলো
শ্রেয়ার আর তারপর শুরু হল দুজনের মধ্যে চুলচুলি যুদ্ধ আর জন্মদিন রইলো না সবাই সেদিন
না খেয়েই বাড়ি ফিরে গেছিলো আর প্রতিজ্ঞ্যা করেছিলো আর কোনোদিন কারোর কিছু অনুষ্ঠানে
ওই দুই পরিবারকে নিমন্ত্রন করা হবে না।
এরপর কখন সপ্তর্ষি রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে
শ্রেয়ার চুল ধরে টান মারে কখনো আবার শ্রেয়া সপ্তর্ষিদের বাড়িতে ধিল ছুরে মেরে কাঁচ
ভেঙে দ্যায়ে তো আবার কখনো শ্রেয়ার স্কুটির চাকার লিক করে দ্যায়ে আবার কখনো শ্রেয়া রকেটবাজি
সপ্তর্ষিদের বাড়িতে ছোড়ে। এইভাবে চলতে থাকে হিন্দুস্থান আর পাকিস্থানের লড়াই। কিন্তু
সেই ঝামেলা এমনি মোর নিলো যা পাড়ার লোক স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি।
একদিন শ্রেয়া অফিসের পার্টি থেকে ফিরছিল
একটু রাত হয়ে যাওয়ায়ে কোনো গাড়ি পায়নি এদিকে মোবাইলের চার্জটাও শেষ হয়ে যাওয়ায়ে ক্যাবও
বুক করতে পারেনি। রাস্তার ফুটপাথ ধরে হাটতে হাটতে আসছিলো পার্টিতে হুইস্কিটা একটু বেশি
খেয়ে ফেলেছিল আজ শ্রেয়া তাই হাটতেও খুব অসুবিধা হচ্ছিলো। এদিকে আজ একটু দেরিতে ফেরায়ে
সপ্তর্ষি রাস্তাতে শ্রেয়াকে দেখতে পায়ে সপ্তর্ষি নিজের বাইকটাকে একটা পাশে রেখে একটা
কিছু করবে ভাবছে,
অনেকদিন ধরে
এই ধিঙ্গি মেয়েটা তাকে
জ্বালাচ্ছে এইতো সেদিন সপ্তর্ষি ওদের ব্যাল্কনিতে বসে একটা বই পরছিল এই মেয়েটা ওর ছবি
তুলে সেটাকে হাস্যকর বানিয়ে ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছিলো কিছুদিন তাঁর বন্ধুদের কাছে মুখ
দেখাতে পারেনি সে,
আজ
সব বদলা নেবে এইভেবে একটু এগিয়ে গিয়ে একটা গাছের পিছনে লকালো সপ্তর্ষি। এদিকে শ্রেয়া
হাটতে হাটতে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো সামনে একটা বাসস্ট্যান্ড দেখে ওখানে বসে পড়লো
গিয়ে। সেখান থেকে আরও ২০মিনিট হেটে যেতে হয়ে শ্রেয়াদের বাড়ি। সপ্তর্ষি কিছু একটা করতে
যাবে এমন সময়ে শ্রেয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে উঠে আবার হাঁটা শুরু করবে এমন সময়ে পায়ে হোঁচট
খেয়ে পড়ে যায়ে আর হাতের অনেকটা জায়গা কেটে যায় তা দেখে কেন জানি না সপ্তর্ষির মনটা
নরম হয়ে এলো সে আসতে আসতে করে এগিয়ে গিয়ে শ্রেয়াকে ধরে বাড়ি নিয়ে যেতে লাগলো কিন্তু
কিছুটা দূর এগিয়ে যাওয়ার পর শ্রেয়া সপ্তর্ষির গালে একটা কিস করে বসে নেশার ঘরে তাতেই
সপ্তর্ষি ছেলেটা বেচারা কুপকাথ। সপ্তর্ষির শরীর বেয়ে নেমে গেলো এক অদ্ভুত অনুভুতি সপ্তর্ষি
কোনোমতে শ্রেয়াকে বাড়িতে ছেড়ে দিলো। সপ্তর্ষি রাস্তা দিয়ে শুনতে পেলো শ্রেয়ার মা তাকে
খুব বোকছে আর মারছে সপ্তর্ষির খুব খারাপ লাগলো আহারে মেয়েটাকে কিভাবে মারছে। পরক্ষনেই
আবার ভাবলো ঠিক করছে মারছে ওর মার খাওয়াই উচিত কেনো রাত অব্ধি পার্টি করবে ধিঙ্গি মেয়ে
কোথাকার আমার কি। এই ভাবতে ভাবতে সপ্তর্ষি বাড়ি চলে গেলো। কিন্তু বাড়ি গিয়েও সপ্তর্ষি
ঠিক ভাবে ঘুমাতে পারলো না।
কিন্তু এরপর থেকে শ্রেয়ার উৎপাত জারি থাকলেও সপ্তর্ষির
দিক থেকে কোন বিপরীত প্রতিক্রিয়া মিলল না, তাঁর জন্য শ্রেয়াও যেন কেমন মুষড়ে যেতে লাগলো।
কিন্তু একদিন একটা ঘটনা হল
শ্রেয়াঃ কি বলবি বল, আমাকে এখানে ডাকলি কেন?
সপ্তর্ষিঃ আমার কিছু কথা বলার ছিল তোকে।
শ্রেয়াঃ দেখ তোর এই সব নাটক না অনেক দেখা
আছে আমার কিছু তো একটা ঘোটালা পাকিয়েছিস তুই আর এখন সেটা আমার ঘাড়ে চাপাবি বলে ডেকে
পাঠিয়েছিস।
সপ্তর্ষিঃ তেমন কিছুই না তুই আগে শোন তো আমার কথা
শ্রেয়াঃ শোনার কিছুই নেই, তোর আর তোর বাড়ির ধরন না সব জানি আমরা
বুঝলি তো...
আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো শ্রেয়া এমন সময়ে সপ্তর্ষি
বলে উঠলো
সপ্তর্ষিঃ আই লাভ উ, শ্রেয়া
কিছুক্ষনের জন্য যেন কোমায়ে চলে গেছিলো শ্রেয়া
তারপর দৌড়ে বাড়ির দিকে পালিয়ে গেলো। সপ্তর্ষিও কিছু না বুঝতে পেরে চলে গেলো।
তারপর থেকে শুরু হল মারামারি নয় ঝাকাঝাকি, মানে
শ্রেয়ার বাড়িতে সপ্তর্ষির উকি মারা।
কিন্তু যতই হোক শ্রেয়া কিন্তু পাল্টালো না।
যখনই শ্রেয়াকে সপ্তর্ষি পিছু করে তখনি নাহয়ে পাড়ার ছেলেদের দিয়ে মার খাওয়ায়ে নাহলে
কলার খোসা পায়ের কাছে ফেলে দ্যায়। কতবার সপ্তর্ষি কিছু বলার জন্য শ্রেয়ার কাছে যায়
কিছুনা কিছু একটা শ্রেয়া করে ওখান থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু একদিন অনেক কষ্টে দেখা করেছিলো
সপ্তর্ষি।
সপ্তর্ষিঃ একটাবার শোন শ্রেয়া তোর সাথে আমি
কথা বলতে চাই কিছু কিন্তু তুই শুধু কিছু না কিছু করে বোসিস।
শ্রেয়াঃ শোন সপ্তর্ষি তোর সাথে কথা বলার ইচ্ছা একফোঁটাও
নেই বুঝলি তো, তোকে আমি ঘৃণা
করি, আই
হেট উ।
সপ্তর্ষিঃ কেন সেটা কি জানতে পারি যদি আমাদের ঝামেলা
এখানে শেষ হয়ে যায় তাহলে অসুবিধা কোথায়ে?
শ্রেয়াঃ আমাদের ঝামেলা কোনোদিন শেষ হবেনা বুঝলি, ইনফ্যাক্ট
যদি আর কোনোদিন আমার সামনে আসিস তাহলে তোকে মেরে তোর হাড় গোড়ভেঙে গঙ্গায়ে ফেলে দিয়ে
আসবো বুঝেছিস। আর কেন জিজ্ঞ্যেস করছিস কি এমন চাকরি করিস যে আমাকে নিজের বৌ বানাবি
জানিস আমার ১ সপ্তাহের খরচা কত তুই তো কিছুইনা তোর মতো আরেক্তা সপ্তর্ষি আসলেও আমার
১ সপ্তাহের খরচা জোগাতে পারবেনা।
এই
কথাটা সপ্তর্ষির খুব গায়ে লেগেছিল সম্মানে লেগেছিল।
সপ্তর্ষিঃ আর যদি জোগাতে পারি তাহলে তাহলে কি করবি
বল
শ্রেয়াঃ আমি নিজে এসে তোর হাত ধরে বিয়ে করবো।
সপ্তর্ষিঃ চ্যালেঞ্জ একসেপ্টেট
তারপর থেকে সপ্তর্ষি ছেলেটা কোথায়ে যেন উবে
গেলো। যে ছেলেকে সবসময়ে রাস্তায়ে কিছু না কিছু কাণ্ড করতে দেখা যায়, কারোর বাড়িতে কোন গণ্ডগোল করতে দেখা যায়, রকে বসে আড্ডা মারতে দেখা যায়, তাকে
বছর এক - দের দেখায়ি গেলোনা। কিন্তু তারপরের ঘটনার জন্য কিন্তু কোনোভাবেই প্রস্তুত
ছিলনা গোটা দাসপাড়া। একদিন খবর পাওয়া গেলো সপ্তর্ষি নাকি নিজের এক ব্যাবসা খুলেছে দুবায়িতে
সেখানে নাকি ওদের এক আত্মীয় থাকতো সে হেল্প করেছিলো এই ব্যাবসা দার করাতে, কিন্তু
কিভাবে যেনো ১ বছরের মধ্যে সপ্তর্ষি এস অ্যান্ড ডি প্রাইভেট লিমিটেড এর একছত্র মালিক
হয়ে উঠলো। এখন সে খুবই ব্যাস্ত থাকে আর সেই ব্যাস্ততার মধ্যে সে একটা প্রতিজ্ঞ্যার
কথাটা বেমালুম ভুলেই গেলো। এদিকে শ্রেয়াকেও খুব একটা দেখা যায়না মাঝে মাঝে শোনা যায়
বিয়ের সম্বন্ধ আসে কিন্তু কোনো সম্বন্ধই মেয়েকে তাদের ছেলেদের সাথে বিয়ে করাতে অনিচ্ছুক।
সপ্তর্ষি বেশ কয়েকবছর পর দেশে ফিরল ব্যাবসার একটা কাজে সে বাইরে গেছিলো একদিন সে পাড়া
রকে বসে আড্ডা মারছিল বন্ধুদের সাথে তারাই কথায়ে কথায়ে পুরনোদিনের আলোচনা করতে করতে
হটাৎ তাদের সেই ঝামেলার কথা বলছিল যদিও সপ্তর্ষির সেসব কথা মনে ছিল কিন্তু তাঁর সাথে
মনে পড়লো তাঁর সেই চ্যালেঞ্জ একসেপ্টেটের কথাটা। তাই তো শ্রেয়াকে দেওয়া চ্যালেঞ্জের
কথা ভুললে মটেও হবেনা। সপ্তর্ষি জিগ্যেস করলো,
সপ্তর্ষিঃ হ্যাঁ রে, পোলটু
তুই শ্রেয়াদের বাড়িতে যাতায়াত আছেনা।
পোলটুঃ হ্যাঁ, যাই
তো। কেনো বলতো?
সপ্তর্ষিঃ নাহ, তেমন
কিছু না দেখলাম তোর চাকরিটা আছে কিনা।
বলে হাসলো সপ্তর্ষি আর ওর বন্ধুরা। কিন্তু
সপ্তর্ষির মন থেকে হাসিটা এলো না।
পরেরদিন বাজারে যাওয়ার সময়ে সপ্তর্ষির সাথে
পোলটুর দেখা হয়ে তো পোলটুর সাথে গল্প করতে করতে সপ্তর্ষি জিগ্যেস করলো এই ওই শ্রেয়ার
খবর কিরে মানে এখন আর দেখা যায়না।
পোলটুঃ আরে আর বলিস না। ওর তো অবস্থা খুব
একটা ভালো না, তুই
তো এখানে ছিলিস না তুই জানিস না তাই।
সপ্তর্ষি খুব অস্থির হয়ে বলল,
সপ্তর্ষিঃ কি হয়ে ভাই ওর।
পোলটুঃ ও নাকি কোন ছেলেকে খুব ভালোবাসে তাঁর সাথেই
বিয়ে করবে, কিন্তু
সমস্যাটা হল ওই মেয়ে নামি বলেনা ঠিক করে। সবাই বলে ওই মেয়ের নাকি মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
সপ্তর্ষিঃ শোন ভাই একটা কাজ করতে পারবি?
পোলটুঃ বল বলনা কি করতে হবে।
সপ্তর্ষিঃ তুই কিছু করে শ্রেয়ার ফোন নাম্বারটা
জোগাড় করে দেনা।
পোলটুঃ কিন্তু তুই নিয়ে কি করবি?
সপ্তর্ষিঃ কাজ আছে তোকে যেটা বলছি সেটা কর।
পোলটুঃ আমার কাছেই আছে।
এই বলে পোলটু সপ্তর্ষিকে শ্রেয়ার ফোন নাম্বার
দিয়ে চলে গেলো।
সপ্তর্ষি এবার নাম্বারটাতে ফোন করলো ওপার
থেকে ভেসে এলো এক বেদনা ও অবসাদগ্রস্থ গলার স্বর ভেসে এলো তাই শুনে সপ্তর্ষির বুকটা
একটু হলেও কেপে উঠলো। সপ্তর্ষি বলল,
সপ্তর্ষিঃ হ্যালো, শ্রেয়া...
শ্রেয়া কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল,
শ্রেয়াঃ কে বলছেন?
সপ্তর্ষিঃ আমি সপ্তর্ষি শ্রেয়া
শ্রেয়াঃ এতদিন পড়ে কিসের জন্য ফোন করেছ, মরে
গেছি কিনা জানার জন্য।
সপ্তর্ষিঃ এরম কেন বলছ শ্রেয়া তোমার সাথে
একটু দেখা করতে চাই শ্রেয়া।
শ্রেয়াঃ কিসের জন্য দেখা করবে, দেখা করার মতো আর কি কিছু বাকি আছে
সপ্তর্ষিঃ তুমি এরম ভাবে কেন বলছ শ্রেয়া, প্লিজ
শ্রেয়া একটিবার দেখা করো আমার সাথে আজকে বিকেলে আমি গঙ্গার কাছে দাড়িয়ে থাকবো।
তারপর সপ্তর্ষি কিছু কাজের জন্য বেরিয়ে যায়
আর তারপর বিকেলে দেখা করতে যায়ে শ্রেয়ার সাথে। অনেকদিন পর তাদের আবার দেখা হচ্ছে কত
কথা, কত ঝগড়া, কত দাবি, কত
বোঝাপড়া বাকি সব কিছু মিটে তাদের মধ্যে দূরত্ব শেষ হবে। এতো কিছু ভাবতে ভাবতে হটাৎ
দেখল কিছু দূরে শ্রেয়া আসছে। তাকে দেখে সপ্তর্ষির বুকটা একটু অজানা ভয় চেপে ধরল যদি
শ্রেয়া না করে দ্যায় আবার। এমন সময়ে শ্রেয়া এসে দাঁড়ালো সপ্তর্ষির সামনে তাঁর মুখে
একটা ক্লান্তি ভাব লক্ষ্য করছিলো সপ্তর্ষি।
শ্রেয়াঃ কি হয়েছে বোলো।
সপ্তর্ষিঃ তুমি এতো পালটে গেলে কি করে আগে তুই ছাড়া
কথা বলতে না, এখন
তুমি করে বলছ আর তাঁর থেকেও বড় হল আমার সেই টমবয়টা কথায়ে গেলো মনের কোনো কোনায়ে হয়েত
লুকিয়ে পড়েছে।
শ্রেয়াঃ ফালতু কথা বোলো না তুমিও তো তুই
বোলতা এখন তো বোলোনা তাহলে।
সপ্তর্ষিঃ শ্রেয়া আমি ফিরে এসেছি সেই চ্যালেঞ্জ
নিয়ে মনে পড়ে সেটার কথা।
শ্রেয়াঃ কি হবে সেটা মনে করে তুমি তো বিয়ে
করে ফেলেছো।
সপ্তর্ষিঃ কি! তোমাকে কে বলল আমি বিয়ে করে
ফেলেছি।
শ্রেয়াঃ আর নাটক করো না সপ্তর্ষি তোমার বাড়ির
থেকেই বলল তুমি নাকি বিয়ে করে বিদেশে সেটেল হয়ে গেছো।
সপ্তর্ষিঃ মিথ্যে বলেছে তোমাকে আমার বাড়ি
লোক তোমাকে পছন্দ করতো না বলে তোমাকে সেটা বলছে কিন্তু এখন তোমাকে আমার বাড়ির থেকে
মেনে নিয়েছে শ্রেয়া আমি বলে রাজি করিয়েছি এভেন আমার বাড়ির থেকে তোমার বাড়িতে আমাদের
জন্য সম্বন্ধও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই শুনে শ্রেয়া লাফিয়ে সপ্তর্ষির কোলে উঠে
গেছে।
সপ্তর্ষিঃ এই যে আবার শুরু হয়ে গেলো ধিঙ্গি পনা
শ্রেয়াঃ এটা তোমাকে এবার সারাজীবন সামলাতে হবে জানু
সপ্তর্ষিঃ যথা আগ্যা মহারানি।
বংশানুক্রমিক যুদ্ধর অবশেষে অবসান ঘটলো, তাই না!
...(সমাপ্ত)...
No comments:
Post a Comment