...দেব চক্রবর্তী
নরেশ সম্পর্কে আমার মামা হয়। প্রায় সমবয়সী বলে নাম ধরেই ডাকতাম। ক্লাস টেন পর্যন্ত একসাথেই পড়াশোনা। আমি পাশ করে স্কুল কলেজেই থেকে গেলাম। নরেশ ফেল, তাই গেল অন্য লাইনে। না,
বখে যাওয়ার মতো কোন লাইন নয়। সেই সময় ছেলেরা লেখাপড়া করতে না চাইলে মা-বাবা তাদেরকে যে কোন হাতের কাজ শিখতে বলতেন। ভবিষ্যতে কিছু একটা তো করতে হবে! সেই ভবিষ্যৎ গড়তে নরেশ যে কোথায় গেল, সেই খোঁজ আর রাখি নি। আমি কলেজে। পিঠে নতুন ডানা। উড়ছি…
উড়ছি…! ‘শোলে’
দেখছি। লুকিয়ে দেখছি ‘ববি’, ‘রাম তেরি…’।
কলেজ শেষে ভ্যাগাবন্ড । ততদিনে লিখে ফেলেছি বেশ কিছু প্রেমের
কবিতা।
চাকরি চাকরি করছি আর কবিতা লিখছি। হঠাৎ একদিন এক বন্ধু হাতে ধরিয়ে দিল শীর্ষেন্দুর ‘ঘুণপোকা’।
বছর কয়েক বাদে নরেশের সাথে দেখা। ওই এসেছিল দেখা করতে। স্থানীয় বাজারে সব থেকে বড় হার্ডওয়ারের দোকান চালায়। একথা সে কথার ও আমার ভবিষ্যতের কথা তুলল।
ওর কাছে আমি ছোট হব কেন? তাই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম,‘ তোর তো অনেক পয়সা হয়েছে! ‘কালবেলা’ পড়েছিস? ‘কোয়েলের কাছে’ বা ‘ন হন্যতে’? ‘ শেষের কবিতা’ না হয় বাদই দিলাম, ‘মেমসাহেব’?
নরেশ নিরুত্তর।
হতাশ। আমার দিকে করুণার দৃষ্টিতে চেয়ে বলল,‘ তোর আর ভবিষ্যৎ কী! তোকে তো দেখছি ঘুণে ধরেছে!
tapanchk@yahoo.com
No comments:
Post a Comment